TadantaChitra.Com | logo

১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয় থামবে কবে? সড়কে মৃত্যুর মিছিল

প্রকাশিত : মার্চ ২৬, ২০১৯, ১৬:৫৯

মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয় থামবে কবে? সড়কে মৃত্যুর মিছিল

ভগবদ্গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন, কৌরবদের তিনি মেরেই রেখেছেন, অর্জুন নিমিত্তমাত্র। সরকার-প্রশাসন সম্ভবত কথাটি আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করেছে। তারা নাগরিক সুরক্ষার মৌলিক বিষয়গুলোকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে দেশবাসীকে মৃত্যুমুখে ফেলেই রেখেছে। সড়কে চলাচলকারী যান হন্তারকের ভূমিকা নিয়ে সেই দেশ ব্যবস্থাপকদের আরাধ্য কাজই যেন সম্পন্ন করে চলেছে। অন্তত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন দেখলে যে কারও এমনটিই মনে হতে পারে।
সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ২ হাজার ৩৭৬ জন। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি ও নিজস্ব সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, এই মৃত্যুর সংখ্যা ১০ গুণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন মারা গেছে। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার হিসাব অনুযায়ী, (গত বছর ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত) ৬৫৩ দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৫ হাজার ৭২৭ জন। কিন্তু এই প্রাণহানির বেশির ভাগই দুর্ঘটনা নয়।
এগুলো মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে বলা যায়, এগুলো সড়ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা লোকজনের দায়িত্বহীনতার দৃষ্টান্ত। এগুলো প্রশাসনের উদাসীনতা ও অবহেলার নজির।
“চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়ে” বলে যে প্রবাদ আছে, সেটিও এ ক্ষেত্রে কাজ করে না। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা নামক চোর এসে মানুষ নামের গৃহস্থের অমূল্য সম্পদ জীবনকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কারও বুদ্ধি খুলছে না। সড়কে চলা অগুনতি গাড়ির ফিটনেস নেই, সেগুলোর চালকদেরও ফিটনেস নেই। দায়বদ্ধতার প্রশ্ন উঠলে দেখা যায়, অধস্তন কিছু কর্মী ও পরিবহনশ্রমিকের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে মন্ত্রী-আমলারা দায় এড়িয়ে যান। সেই সব কর্মী ও শ্রমিকও সব সময় শাস্তি পান না। কোনো দুর্ঘটনা নিয়ে হইচই শুরু হলে তদন্ত নামক একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিপর্যয়টি বিস্মৃতিতে তলিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। পরিসংখ্যান বলছে, এর চার বছর আগে, ২০১২ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ হাজার ৩১৬ জন মারা গেছে। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৬৩৮ জন।
সারা দেশে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, তার সব খবর পুলিশের কাছে আসে না। পুলিশও সব খবরকে গুরুত্ব দেয় না। ফলে সরকার যদি পুলিশের প্রতিবেদন ধরে মনে করে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু কমেছে, তাহলে সেটা ভুল পথে হাঁটা হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা খুব ছোটখাটো ধরনের। কিন্তু অবৈধ গাড়ি, অদক্ষ চালক ও সড়কে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। ফলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সরকারের উচিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। এর অন্যথা হবে ক্ষমার অযোগ্য কাজ।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।