TadantaChitra.Com | logo

৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এসআইয়ের আত্মহত্যা ফেঁসে যাচ্ছেন সেই বিতর্কিত ওসি

প্রকাশিত : জুন ০৪, ২০১৯, ১২:২০

এসআইয়ের আত্মহত্যা ফেঁসে যাচ্ছেন সেই বিতর্কিত ওসি

রোববার (২জুন) বেলা আড়াইটার দিকে লাশটি গোয়াইনঘাট থানার অভ্যন্তরের কোয়ার্টার থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ বড়ুয়ার (৪৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, সুদীপ বড়ুয়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সোনাইচড়ির মৃত রবীন্দ্র লাল বড়ুয়ার ছেলে। তার এক ছেলে নৌবাহিনীর স্কুলে এবং মেয়ে মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছে। ২৮ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন তিনি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি গোয়াইনঘাট থানায় যোগদান করেন।

গোয়ানঘাট থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার সালাউদ্দিন জানান, রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত থানায় ছিলেন সুদীপ বড়ুয়া। এরপর থানা এলাকায় নিজের বাসায় যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পর তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ওসি আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, তারা এখনও নিশ্চিত নয় এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু।

সুদীপের মেয়ে শতাব্দি বলেন, ‘থানায় মানসিক চাপে বিপর্যস্ত হয়ে’ বাবা আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শতাব্দি বড়ুয়া। ‘বাবা প্রায়ই ফোন করে বলতেন। সর্বশেষ শনিবারও বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি তখনও বলেছেন, এ থানায় তিনি আর থাকতে চান না।

এসআই সুদীপের স্ত্রী ববি বড়ুয়া বলেন, আমার স্বামী সর্বদাই বলতেন গোয়াইনঘাট থানার ওসি তাহার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। দিনরাত চাপের মধ্যে রাখেন। তিনি খুবই সৎ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা তিনি ওই ওসির দুর্ব্যবহার ব্যবহার সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোয়ানঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল। ওসি বলেন, শতাব্দির অভিযোগ ঠিক নয়। ময়না তদন্তের জন্য লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হবে।

এদিকে, এসআই সুদীপের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরে সাংবাদিকদের কাছে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, ‘সুদীপের আত্মহত্যার বিষয়ে তার মেয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তার নিজস্ব। তারা যদি আইনি আশ্রয় গ্রহণ করেন, তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘সুদীপের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে ।

ওসি আব্দুল জলিল থানায় যোগদানের পর তিনি এক নারী কনস্টেবলকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে ওই নারী কনস্টেবল ওসি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে জেলা পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়।

সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদকে খুশি করতে গত ১৬ জানুয়ারি বুধবার রাতে তাঁর বাসায় ট্রাক ভর্তি বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী পাঠান গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জলিল। সকালে ঘুম থেকে ওঠে এই ট্রাক দেখে ক্ষুব্ধ হন প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ। সাথে সাথেই তিনি খাদ্যসামগ্রী সমেত ট্রাক পাঠিয়ে দেন ওসির কাছে।

এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, আমি কখনই কোনো উপহার গ্রহণ করি না। সে (ওসি) না জেনেই এগুলো পাঠিয়েছিলো। ফলে আমি তা ফিরিয়ে দিয়েছি।

আগামীতে কেউ যেন আমার কাছে কোনো উপহার না নিয়ে আসে একারণেও এগুলো ফিরিয়ে দিয়েছি, যোগ করেন সিলেট-৪ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত এই সাংসদ।

এরপর থেকেই বির্তকৃত অবস্তায় গোয়াইনঘাট থানায় আছেন। আর পাথর খেকোদের সেল্টার দিয়ে পর্যটন নগরী গোয়াইনঘাটকে ক্ষতবিক্ষত করছেন।

সচেতন গোয়াইনঘাটবাসী এই ওসির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আশু হস্থক্ষেপ কামণা করছেন।

উল্লেখ্য,  ওসি আব্দুল জলিল ২০১৮ সালের ২৭ মে রোববার সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার দায়িত্ব যোগদান করেন। এর পর থেকেই তিনি একের পর কান্ড করে যাচ্ছেন। ওসি আব্দুল জলিল গোয়ইনঘাট থানায় যোগদানের আগে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানা থেকে ওসি আব্দুল জলিলকে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। শ্রীমঙ্গলে তার উপস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ায় এই থানা ছাড়তে বাধ্য হলেন তিনি।

সর্বশেষ তার দুর্ব্যবহার সইতে না পেরে থানার একজন সৎ পুলিশ অফিসার আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।