জাহিদ হাসানঃ ঢাকার সাধারণ নাগরিকদের মতোই এডিস মশার আক্রমণে কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদস্যরা। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের ব্যারাক, মিরপুরসহ আশপাশ এলাকার পুলিশ সদস্যরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন জ্বর নিয়ে পুলিশ সদস্যরা আসছেন রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে। টেস্টে ডেঙ্গু প্রমাণিত হলেই ভর্তি রাখা হচ্ছে হাসপাতালে। ডেঙ্গু আক্রান্ত পুলিশের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।
রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৮ জুলাই) সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মোট ৯৫ জন পুলিশ সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্তান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। শনিবার আক্রান্ত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ছিল ১০১ জন।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত মে, জুন এবং জুলাই মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৫৪ জন পুলিশ সদস্য ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে কোনো বেড খালি দেখা যায়নি। বেডগুলোতে অন্য রোগে আক্রান্ত রোগী থাকলেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি।
মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মো. জাহাঙ্গীর নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমমর্যাদার কর্মকর্তা বলেন, ‘আটদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলাম। প্রথমে নাপা এক্সট্রা ট্যাবলেট খেয়ে তিনদিন জ্বর নিবারণের চেষ্টা করি। না কমলে এখানে এসে টেস্ট করি। ডেঙ্গু ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে নেয়া হয়।’
হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন নার্সরা। রোগীর স্বজনরা ডাকার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন তারা।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই মাসের প্রথম দিকে অনেকেই দেরি করে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কিন্তু বর্তমানে যারা আসছেন তারা জ্বর হওয়ার দু-একদিনের মধ্যেই হাসপাতালে চলে আসছেন। ডেঙ্গু রোগী মোকাবিলায় হাসপাতালটির যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে।
এদিকে রোগীদের প্লাটিলেটের জন্য প্রতিদিনই কয়েক ব্যাগ রক্ত লাগছে। এসব রোগীর আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও পুলিশ ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত দেয়া হচ্ছে।
রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মুহাম্মদ মনোয়ার হাসনাত খান বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বিশেষায়িত ট্রেনিং নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। জুলাইয়ে প্রতিদিনই আউটডোরে অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাদের অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যাদের জ্বর একটু বেশি তাদের ভর্তি রাখা হচ্ছে। তবে সচেতনতার কারণে অনেকেই আগেভাগে চিকিৎসা নিতে আসছেন। আল্লাহর রহমতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বছরওয়ারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০০-২০১৮ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫৫১, ২৪৩০, ৬২৩২, ৪৮৬, ৩৪৩৪, ১০৪৮, ২২০০, ৪৬৬, ১১৫৩, ৪৭৪, ৪০৯, ১৩৫৯, ৬৭১, ১৭৪৯, ৩৭৫, ৩১৬২, ৬০৬০, ২৭৬৯ ও ২০১৯ সালের (২৭ জুলাই পর্যন্ত) ১০ হাজার ৫৪৮ জন।
‘ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত’
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের......বিস্তারিত