TadantaChitra.Com | logo

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপি ধ্বংসের এক কিংবদন্তি! কপাল পুড়েছে অনেক নেতাকর্মীর!

প্রকাশিত : আগস্ট ১৬, ২০১৯, ১৭:৫০

বিএনপি ধ্বংসের এক কিংবদন্তি! কপাল পুড়েছে অনেক নেতাকর্মীর!

২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি। অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া তখন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে খবর আসে, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা গেছেন। শোকে মুহ্যমান খালেদা। খবর শুনে শোকাহত খালেদা জিয়াকে সান্ত¡ না দিতে গুলশান কার্যালয়ে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা! কিন্তু গেটেই তাকে আটকে দেওয়া হয়! শিমুল বিশ্বাস এসে জানিয়ে দেন, ম্যাডাম অসুস্থ। তিনি ঘুমোচ্ছেন। দেখা হবে না!

সেদিন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদসহ সিনিয়র নেতারা চেয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হোক। তাকে এভাবে ফিরিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। কিন্তু শিমুল বিশ্বাস সবাইকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন। বলেন, আমি দেখছি।

এমনকি সর্বশেষ বিএনপির কমিটি ঘোষণা নিয়েও যে তুঘলকি কান্ড তার পেছনেও শিমুল বিশ্বাসের অবিশ্বস্ত হাত দেখছেন বিএনপির নেতারা। জানা গেছে, টাকার বিনিময়ে অনেক আনকোরা ব্যক্তিকেও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে একটি চক্র। আর এই চক্রের পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন শিমুল বিশ্বাস।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষিত ৪১ নেতার মনোনয়ন পর্যালোচনা করে জানা গেছে, সেখানে অধিকাংশই তার আশীর্বাদপুষ্ট নেতা কিংবা অনুসারী। তিনি যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবেই পদ দিয়েছেন। একটি বিভাগ কয়েকটি জেলা মিলে গঠিত হলেও দেখা গেছে, এক জেলা থেকেই সাংগঠনিক সম্পাদক ও দুই সহসাংগঠনিক সম্পাদককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শুধু দেশের কমিটিই নয় বিদেশেও বিএনপির যেসব কমিটি রয়েছে সেখানেও নাকি কলকাঠি নাড়েন শিমুল বিশ্বাস। মালয়েশিয়া বিএনপির কমিটি গঠনের ব্যাপারেও তার তিনিসহ বিএনপির আরেক নেতার বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে।

 

জানা গেছে, শিমুল বিশ্বাসের সব অপকর্মের সঙ্গী বিএনপির ওই প্রভাবশালী নেতা। তাদের নেতৃত্বে খালেদা জিয়া চারপাশে গড়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। আর শিমুল বিশ্বাসের প্রতি খালেদা জিয়ার অন্ধ বিশ্বাসের কারণে দিনে দিনে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি। নিজের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়ার বাড়িতে কাজ করা পুরোনো বুয়া, আয়া, মালী, ড্রাইভার, বাবুর্চিদেরও বিভিন্ন অজুহাতে বিদায় করা হয়েছে। এমনকি বাদ যায়নি বাসায় নামাজ পড়ানোর হুজুরও। তাকেও বিতাড়িত করা হয়েছে। আর নিয়োগ দেয়া হয়েছে সিন্ডিকেটের প্রতি অনুগতদের।

দলের ফান্ড কালেকশন নিয়েও তার রয়েছে তেলেসমতি কান্ড। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নানা অজুহাতে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করে আত্মসাতের ঘটনাও রয়েছে বলে গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়।
জানা গেছে, ভালো সংগঠক হিসেবে নাকি শিমুল বিশ্বাসের কদর খালেদা জিয়ার কাছে। অথচ তার নিজের জেলা পাবনাতেই ছিন্নভিন্ন অবস্থা বিএনপির। স্বজনপ্রীতি করতে গিয়ে গত পৌর নির্বাচনে পাবনার জনপ্রিয় মেয়র মিন্টুকে বঞ্চিত করা হয় দলীয় মনোয়ন থেকে। পৌর নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়া মিন্টুই বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। আর শিমুল বিশ্বাসের আশীর্বাদপুষ্ট বিএনপির প্রার্থীর অবস্থান হয় চার নম্বরে।

এছাড়া সিন্ডিকেটবাজিতে নিজের জেলা পাবনাতেও পিছিয়ে নেই শিমুল বিশ্বাস। আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখেই চলেন তিনি। পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট তসলিম হাসান সুমনের মেয়ে তাহজিদ হাসান তরণীর সঙ্গে নিজের ছেলে মিথুন বিশ্বাসের বিয়ে দিয়েছেন শিমুল বিশ্বাস। তবে শিমুল বিশ্বাসের এসব কর্মকান্ডের এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট। পত্র-পত্রিকাতেও বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে লেখালেখি হয়েছে বিস্তর। বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যেই নয়াপল্টনের পার্টি অফিসে কিংবা গুলশানের চেয়ারপার্সনের অফিসে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

অথচ তথ্য-প্রমাণ থাকার পরও শিমুল বিশ্বাসের প্রতি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, শুধুমাত্র তার প্রতি খালেদা জিয়ার অন্ধ বিশ্বাসের কারণে। তাই তার দৌরাত্ম্য আরো বেড়েছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। সবার মনেই এখন প্রশ্ন, যেখানে শিমুল বিশ্বাসকে “অবিশ্বাস” করেন বিএনপি অধিকাংশ নেতাকর্মীই, সেখানে তার প্রতি খালেদার এই অন্ধবিশ্বাস এর ভিত্তি কী? আরো বিস্তারিত পড়ুন আগামী সংখ্যায় তদন্ত চিত্রে……


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।