TadantaChitra.Com | logo

২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উত্তরায় ফের অবৈধ দখলবাজদের কবলে সরকারী জমি!

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯, ১৭:৩০

উত্তরায় ফের অবৈধ দখলবাজদের কবলে সরকারী জমি!

উত্তরা প্রতিনিধিঃ উত্তরা সোনারগাঁ জনপথ রোডের ১৩ ও ১১ নং সেক্টরের অংশে রাজউকের কমার্শিয়াল স্পেস নিয়ে আবারো গড়ে উঠছে আরো বর্ধিত হয়ে রাজউক কর্তৃক বারবার উচ্ছেদ হওয়া ফার্নিচার মার্কেট।

বারবার অবৈধ দখল‍ঃ ১৩ ও ১১ নং সেক্টরের সোনারগাঁ জনপথের রাস্তার দুই পাশ দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে বড় মার্কেট জায়গা এটি। এখানে রাজউক বিভিন্ন ব্যক্তি এবং কোম্পানীকে তাদের চাহিদা মত কমার্শিয়াল মার্কেট নির্মানের জন্য ১০ এবং ২০ কাঠার প্লট বরাদ্ধ দেয়। রাজউকের সঙ্গে বিভিন্ন প্লটের মালিকদের রয়েছে কিস্তি আদায় ও প্লটের মালিকানা নিয়ে বিরোধ। তাই কমার্শিয়াল স্পেসের অধিকাংশ প্লটগুলোকে রাজউক মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেনি। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কমার্শিয়াল স্পেসের এই বৃহৎ জায়গায় রাজউকের বারবার উচ্ছেদ সত্তে¡ও আরো বর্ধিত হয়ে গড়ে উঠছে ফার্নিচার মার্কেট। রাজউক ফার্নিচার মার্কেট যতবার উচ্ছেদ করেছে নির্মানকারীরা ততবার রাজউকের হস্তান্তরকৃত জায়গা দখল করে ফার্নিচার মার্কেটকে আরো সম্প্রসারিত করেছে।

টাকার খনিঃ গত কয়েক মাস আগে উচ্ছেদ হওয়া ফার্নিচার মার্কেট এখন সোঁনার খনিতে পরিনত হয়েছে। নামে মাত্র বাঁশ ও টিন দিয়ে একটি ঘর দাড় করাতে পারলে লক্ষাধিক টাকা জামানত এবং মাস শেষে ১৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ভাড়া। সোঁনার খনি দখলে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটির কতিপয় নেতাকর্মী এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে চলছে ঘরোয়া আন্তঃ কোন্দল ও প্রতিযোগিতা।

কমিশনারের দখলবাজী “প্লট রজউকের বরাদ্ধ দেয় কমিশনারঃ গত চার মাস আগে রাজউক কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়ার পর রাজউকের নিষেধাজ্ঞা দেখিয়ে দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে বড় আধুনিক মার্কেট প্লেসের এই জায়গাগুলো দখলে নেন নবনির্বাচিত স্থানীয় কমিশনার শরিফুল ইসলাম। তিনি আওয়ামীলীগের উত্তরা পশ্চিম থানা স্থগিত হওয়া কমিটির ক্রিয়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক। গত দুই বছর আগে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে এক বছর অতিক্রান্ত না হতেই উপনির্বাচনে আওয়ামীলীগের সমর্থনে প্রায় অর্ধকোটি টাকা খরচ করে ১৩ মাসের জন্য কমিশনারের পদটি লাভ করেন। ঢাকা উত্তর সিটির সকল কমিশনার থেকে কমিশনার শরিফ এর বীরত্ব, আগামী নির্বাচনের প্রচারণা, জনসংযোগসহ সকল কাজের ধরনই ভিন্ন। ফুটপাতের হকারদের থেকে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা নিজ নিজ সংগঠনের নামে চাঁদা উঠিয়ে থাকে। কিন্তু ৫১ নং ওয়ার্ডে স্বয়ং কমিশনারের নামে চাঁদা উঠানো হয়। তিনি তার এলাকার সব কিছুর নিয়ন্ত্রক এবং প্রশাসনও তার পরামর্শে কাজ করে থাকে। এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ও রাজউকের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ফার্নিচার মার্কেট থেকে উঠানো ভাড়ার একটি অংশ দেয়ার নামে তাদেরকে নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বরাদ্ধে উন্মুক্ত দরপত্রঃ সোনার গাঁ জনপথের রাজউকের মার্কেট জায়গা উচ্ছেদ হওয়া ফার্নিচার মার্কেট আবার অবৈধভাবে নির্মানে করা হয়েছে উন্মুক্ত দরপত্রের আহবান। উন্মুক্ত দরপত্রের প্রতিযোগিতার প্রতিদন্ধীতায় প্রতিযোগীকে ১০ কাঠার প্লটে ৩ লক্ষাধিক টাকা অফৈরত যোগ্য জামানত হিসেবে কমিশনারের কাছে জমা দিতে হয়েছে। প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির সভাপতি হলেন, কমিশনার শরীফ নিজেই। তারই তত্ত্বধায়নে জহির, বাবু, ফয়সালসহ আরো কয়েক জন মাঠ তদারকি, দখল ও ভাগাভাগি করে দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।

অগ্রিম জামানত ও মাসিক ভাড়াঃ মার্কেটে ১০ ফিটের একটি দোকানের অগ্রিম জামানত ৫০ হাজার ও মাসিক ভাড়া ১৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত।

অসহায় ব্যবসায়ীদের কান্নাঃ পূর্বের অসহায় ব্যবসায়ীদের নিজেদের নির্মান করা দোকানে বরাদ্ধ পাওয়া নেতাদেরকে প্রতি ১০ ফিটে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম জামানত দিতে হচ্ছে এবং আগামী মাস থেকে দোকানের অবস্থান অনুযায়ী ১৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ভাড়া গুনতে হবে।

দখলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে আওয়ামীলীগের থানা কার্যালয়ঃ ১১ নং সেক্টর কাঁচা বাজার সংলগ্ন ৫৬ নং প্লটটি সাবেক দোকানদারদের তাড়িয়ে এটি দখল করা হয় উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামীলীগ এর কার্যালয় নির্মানের জন্য। কয়েক দিন পর দেখা যায়, প্লটটি উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামীলীগের স্থগিত কমিটির সদস্য দাঁতের চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত প্রিন্স কমিশনারের কাছ থেকে বরাদ্ধ নেন। তিনি সাবেক দোকানদারদের থেকে ৫০ হাজার এবং নতুন ভাবে দোকান ভাড়া নিবে এমন ব্যক্তিদর থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত অগ্রিম জামানত নিয়েছেন এবং তার বরাদ্ধ পাওয়া প্লটের ২০ নং রোডে উচ্ছেদ না হওয়া কয়েকটি দোকান ১৬ তারিখে উচ্ছেদ করার ঘোষনা করেন।

দলীয় কোন্দলঃ ১১ নং সেক্টরের যে সব প্লট সাধারন দোকানদারদের নিয়ন্ত্রনে ছিল তা নিয়ে দেখা দিয়েছে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের মধ্যে আন্তঃ দলীয় কোন্দল। আওয়ামীলীগের স্থগিত কমিটির অধিকাংশ সদস্য কমিটি ঘোষিত না হওয়ার কারনে নিজের বদনাম হবে এমন কাজকর্ম থেকে তারা পাশ কাটিয়ে থাকছে। কমিটির গুটি কয়েক সদস্য কমিটির নাম ভাঙ্গিয়ে একটি অস্থায়ী কার্যালয় দেখিয়ে দখলে সমস্থ কমিটির উপস্থিতি আছে এমন প্রমান দিচ্ছে তারা। তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে স্বেচ্ছা সেবক লীগের একটি অংশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ এর ভাগ্নে পরিচয় দানকারী মারুফের নেতৃত্বে তা পাল্টা দখল ও ভাংচুর করে আসছে। মারুফকে ঠেকানোর জন্য কমিশনারের লোক হিসেবে পরিচিত জহিরের নেতৃত্বে একটি বাহিনী গঠন হচ্ছে বলে জানা গেছে। যে কোন মূহুর্তে তাদের মধ্যে ঘটতে সংঘর্ষের ঘটনা।

যারা বরাদ্ধ পেয়েছেনঃ কমিশনারের কাছ থেকে প্লট বরাদ্ধ পেয়েছেন আওয়ামীলীগের স্থগিত কমিটির সদস্য দাঁতের চিকিৎসক প্রিন্স, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান যুবলীগ নেতা সোহেল, কবির হাসান, তাজুল ইসলাম ওরফে জজ মিয়া, ইউনুস, জাহিদ, নাজমুল সহ আরো কয়েকজন।

দখলবাজদের ঠেকাতে ব্যার্থ হলেঃ দখলদারদের হাতে গড়ে উঠতে যাওয়া এই ফার্নিচার মার্কেট নির্মান ঠেকাতে প্রশাসন ব্যার্থ হলে কিছু দিন পর দেখা যাবে শত শত ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে পথে বসে আছে। এর মধ্য মুক্তিযোদ্ধার একটি পরিবার এ জমির জন্য আবেদন করলে দখলবাজদের হাতে মারধর ও শরীলের কাপড় ছেরার অভিযোগও রয়েছে। জানা গেছে, আসিয়া আফছানা সুফলা পিতা: মো: আন্নেছ আলী (বীর মুক্তিযোদ্ধা) গত ০৮/০৪/২০১৯ ইং একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন। যার নং-৫৭৮। জাহিদ বাহিনীর কাছে হামলার স্বীকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আফছানা টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় যান। এ ব্যাপারে আফছানা জানান, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা আমরা জায়গার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানসকন্যা শেখ হাসিনার কাছে একটি আবেদন করি। এ ব্যাপারে ভূমিদস্যূদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।