
মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদারঃ ‘বঙ্গবন্ধু বইমেলা’র আহ্বায়ক আবু রায়হান শেখ মুজিবের খুনি খন্দকার মোশতাকের একজন ভক্ত বিশেষ মেলার শেষদিন তা প্রকাশ পায়। খন্দকার মোশতাকে মুগ্ধ হয়ে আবু রায়হান ‘রাজা দরশন’ নামে একটি বই লেখেন। সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদ সেটি প্রকাশ করেন ২০১৪ সালের বই মেলায়।
সেই বইটি হাতে দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে ঢাকায় গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও ব্যান্ড শিল্পী আল-আমিন বাবু তীব্র প্রতিবাদ করে আবু রায়হানের পদত্যাগ দাবি করেন। তিন দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু বই মেলার শেষদিন ২২ সেপ্টেম্বর রাতে এই ঘটনার সময় পাশে সামনে ছিলেন মেলার আয়োজক মুজিব বর্ষ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক মিশুক সেলিম।
২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মেলাটি উদ্বোধন করেন লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক। মেলায় দর্শক উপস্থিতি নিউ ইয়র্কের বঙ্গবন্ধু ভক্তদের হতাশ করেছে।
আল আমিন বাবু প্রতিবাদ করে বলেন, ‘খন্দকার মোশতাককে দরশন করে যে রাজা দরশন নামে বই লিখতে পারে সেইতো খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মা। রাজা দরশন করা লোক কীভাবে বঙ্গবন্ধুর বইমেলার মতো একটি অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হয়েছেন। তাকে কে বানিয়েছে আহ্বায়ক।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটা সবার জানা দরকার। তাকে এখনি পদত্যাগ করতে হবে, মেলা থেকে বের করে দিতে হবে। এ সময় আবু রায়হানকে হাসতে দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু বইমেলা প্রাঙ্গণে আবু রায়হানের লেখা ‘রাজা দরশন’ বই হাতে নিয়ে এভাবে বিভিন্ন প্রশ্নে জর্জরিত করলে আবু রায়হান কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
এই প্রতিবেদক দেখেছেন রাজা দরশন বইয়ের ১৪-১৫ পৃষ্ঠায় খুনি মোশতাকের সঙ্গে দুইবার কোলাকুলি করেছেন বলে নিজেই নিজের বইতে উল্লেখ করেছেন আবু রায়হান। একই বইয়ের ‘রাজা দরশনের পরের দর্শন’ লেখায় আবু রায়হান নিজেই লিখেছেন বাঙালি পত্রিকার সম্পাদক কৌশিক আহমেদ এবং হাসান ফেরদৌস তার ‘রাজা দরশন’ লেখাটি ছাপাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
আবু রায়হান বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে খন্দকার মোশতাককে মহাপুরুষ বানিয়ে ছেড়েছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন সাপ্তাহিক বাঙালি পত্রিকার সম্পাদক কৌশিক আহমেদ। এই মন্তব্যও আবু রায়হান তার বইয়ের ২১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। তার লেখাটি কেউ প্রকাশ না করলেও সময় প্রকাশনীকে দিয়ে খন্দকার মোশতাককে দরশন এর নামে রাজা দরশন বই লেখেন খন্দকার মোশতাকের এই ভক্ত।
আবু রায়হান তার বইয়ের ২১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, একজন বিতর্কিত মানুষের স্নেহশীল হতে নিষেধ আছে কি? আবু রায়হান বলেন, আমি রাজা দরশন বইটি লিখেছি। বইটি প্রকাশ করার আগে কবি ও সাংবাদিক আনিসুল হকসহ অনেক গুণী মানুষকে দেখিয়েছি। সবাই বলেছেন কোনো সমস্যা নেই। আমিও মনে করি এই বই লিখে আমি কোনো অন্যায় করিনি।
