নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ক্ষমতা থাকলে যা ইচ্ছে তা-ই করা যায়। তা যদি হয় রাজনৈতিক ক্ষমতা তাহলে তো কথা নেই। ঠিক সেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মিরপুর দারুস-সালাম থানা এলাকা কাঁপাচ্ছেন থানা আ’লীগের সভাপতি এ বি এম মাজহারুল আনাম। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদটি ব্যবহার করে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দিচ্ছেন। তার এ ধরনের কর্মকান্ডের জন্য খোদ আ’লীগ সহ সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিব্রত। সম্প্রতি অত্র এলাকার একটি পোষাক কারখানায় নিজে তার দলবল নিয়ে হামলার ঘটনায় আরো বিব্রত হন আ’লীগ সহ সহযোগী অঙ্গসংগঠন।
অভিযোগ রয়েছে, তার নেতৃত্বে রাজধানীর মিরপুর মাজার রোডে হাইটেক পারফরমেন্স এ্যপারেলসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এ্যাপারেলসের পক্ষ থেকে মামলা করা হলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, হামলাকারিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, মিরপুর মাজার রোডের ২৬/২/৩ ২য় কলোনীতে ২০০৫ সাল থেকে হাইটেক এ্যাপারেলস লিমিটেড নামে গার্মেন্স শিল্প প্রতিষ্ঠান পোষাক তৈরী করে বিদেশে রপ্তানী করে আসছে। সেখানে ৬শ’র বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্থানীয় সন্ত্রাসী খলিল, মাজহারুল আনাম, নাছিম, হিরন, শাহিন, শহিদুল, নজরুল, শফিকুল, মোস্তাক, আলামিনসহ ২০/২৫ সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাঁধা দিতে গেলে নিরাপত্তা রক্ষীদের মারধর করে।
এছাড়া দুর্বৃত্তরা হ্যামার দিয়ে কারখানার ভিতরের একটি দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলে। কারখানার ক্যামিকেল, এক্সেসরিজ, খুচরা যন্ত্রপাতি, আসবাপত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, কমপিউটার, সিসি টিভিসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী ভাংচুর ও লুটপাট করে। ঘন্টাব্যাপী তাদের তান্ডবে কারখানর শ্রমিকরা ভয়ে কাজ ছেড়ে বেরিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা যাবার সময় এ ঘটনা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার হুমকি দেয়। এর আগেও এরা হামলা করেছিল।
এ বিষয়ে মিরপুর থানা পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। তবে কাউকে আটক করা যায়নি। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে হামলাকারিদের সনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ৭জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো অজ্ঞাত ১৫জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। আসামীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এর আগে বিমানবন্দরে অস্ত্রসহ আটকঃ
সম্প্রতি রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক হন এ বি এম মাজহারুল আনাম। আটকের পর আদালতে হাজির করলে ক্ষমতাসীন দলের আওয়ামী লীগ এ নেতাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
এদিন বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। আবেদনে বলা হয়, কোনো অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা লিপ্ত বা জড়িত সন্দেহে আসামিকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আসামি সংরক্ষিত এলাকায় বিনা ঘোষণায় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেছেন। তদন্তের স্বার্থে আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ।
জানা গেছে, সেদিন অস্ত্র ও ৪৪ রাউন্ড গুলি নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করার সময় এ বি এম মাজহারুল আনামকে আটক করে বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স। ওইদিন সকাল সোয়া ১০টার একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল তার।
বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটি অপারেশনের পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিক জানান, মাজহারুল আনামের কাছ থেকে ৩৪ রাউন্ড রাইফেলের ও ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি পাওয়া যায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় মাজহারুল আনাম তার কাছে গুলি থাকার বিষয়টি ঘোষণা করেননি। স্ক্যানিংয়ের সময় তার হ্যান্ডব্যাগে গুলি ধরা পড়ে। পরে তাকে এভিয়েশন সিকিউরিটির অফিসে নিয়ে আসা হয়। এ সময় পিস্তলের লাইসেন্স দেখাতে পারলেও গোলাবারুদের ব্যাপারে কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে এ.বি.এম মাজহারুল আনামকে একাধিকবার ফোন করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে নিজেই ফোন করলে সাংবাদিক নাম শুনেই আগামীকাল কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
‘ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত’
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের......বিস্তারিত