নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পাওয়া গেছে আরো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। জানা গেছে, বিভিন্ন নামে-বেনামে পত্রিকার ডিক্লারেশন নিয়ে পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন নাঈমুল ইসলাম খান। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অবৈধভাবে জমি দখলও করেছেন। পত্রিকা ও প্রকাশনা ব্যবসার নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি সরকারের বিশেষ ছাড় দেয়া কাগজও গোপঠ জিম্মি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সূত্রে জানা যায়, তেজগাঁও এর মিডিয়া পাড়ায় নাঈমুল ইসলাম খান নতুন যে অফিস দিয়েছেন সেটিও দখল করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ১৩২৭, তেজগাঁও বাণিজ্যিক এলাকায় (তৃতীয় তলা) ট্রাস্টের সম্পত্তি দখল করতে এর তত্ত্বাবধায়কদের হুমকিও দিচ্ছেন তিনি।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, তেজগাঁও এর মতো বাণিজ্যিক এলাকায় ট্রাস্টের সম্পত্তি বাগিয়ে নিতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন মহলের সাথে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন নাঈমুল ইসলাম খান।
সূত্রে জানা যায়, অল্প বেতনে কর্মী নিয়োগ করে গণমাধ্যমের গ্রহণযোগ্যতা এবং সংবাদ মাধ্যমকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই বিতর্কিত সম্পাদকের বিরুদ্ধে। নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তিনি রাজাকারের সন্তান। তার বাবা মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কুমিল্লায় শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান হয়ে নাঈমুল ইসলাম খান পত্রিকার সম্পাদক সেজে দিনের পর দিন কুকর্ম করে গেছেন। সরকার যখন স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় তখন পিঠ বাঁচাতে ধূর্ত এই সম্পাদক টেলিভিশনের টকশোতে নিজের বাবাকেও গালি দেন। সাংবাদিকতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখা এক সুবিধাবাদীর নাম নাঈমুল ইসলাম খান। বিভিন্ন সরকারের মোসাহেবি ও চাটুকারিতা করে তিনি সুবিধা আদায় করেছেন বিভিন্ন সময়ে।
জানা গেছে, সময় খারাপ গেলে নিজ বাড়িতে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের ব্যক্তিদের দাওয়াত দিয়ে মদ গেলাতেন তিনি। রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে তথ্যসূত্রে জানা গেছে, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের নতুন সময়, আওয়ার টাইমস, আমাদের সময়ডটকম, আওয়ার ইসলাম, আমাদের কুমিল্লা, আমাদের দেবীদ্বারসহ অন্তত ২২টি পত্রিকা ও অনলাইনের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান। অথচ তিনি এইসব পত্রিকায় কর্মরত কোনো সাংবাদিক বা কর্মকর্তাকে কোনো প্রকার নিয়োগ পত্র দেন না। তার যখন মন চায় কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই জনবল ছাটাই করেন। তার অধিকাংশ পত্রিকায় ৮ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের তথ্য সরকারকে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী ওনার পত্রিকাগুলো সরকারি বিজ্ঞাপন রেটও পায়। তার পত্রিকার বিজ্ঞাপন রেট দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন রেটের সমান। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের অর্থনীতি, আমাদের নতুন সময় ও আওয়ার টাইমে আলাদা কোনো প্রতিবেদক নেই। এক পত্রিকার সাংবাদিক দিয়ে সকল প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এছাড়া এ পত্রিকাগুলো পাঁচ হাজারের মত ছাপা হলেও দেখানো হয় প্রায় লাখের মত। ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী সম্মানী দেয়ার নামেও সাংবাদিকদের সাথে করেন প্রতারণা। তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের কেউ কখনো ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন পায়নি। এমনকি এখানে যারা কাজ করেন তাদের বেশির ভাগের বেতনই ১০ হাজারের কম। অনেকে ৫ হাজার টাকাও বেতন পায়। আবার যারা জ্যেষ্ঠ তাদের বেতন ২০ হাজারের নিচে। অনেক কর্মী এখনো তার কাছে বেতনের টাকা পাবে।
সূত্রে জানা যায়, ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন দেয়ার নামে প্রতিমাসে সাংবাদিকদের কাছ থেকে চেক বইয়ে সই করিয়ে নিচ্ছেন নাঈমুল ইসলাম খান। এর পর ওয়েজ বোর্ডের বাস্তবায়ন দেখিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিজ্ঞাপন বাগিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, এছাড়া ঈদ বোনাস, উৎসব ভাতা দেয়ার নামেও সংবাদকর্মীদের সাথে প্রতারণা করেছেন বছরের পর বছর। ঈদ বা ডে অফ ডিউটিতে মাত্র ৩’শ টাকা দেয়া হয়। যা অন্যকোন মিডিয়া অফিসের চেয়ে একেবারেই কম। মোট কথায় সাংবাদিকতা শিল্পকে বিতর্কিত করেছেন নাঈমুল ইসলাম খান। তার উপযুক্ত শাস্তি হবে বলে আশা করেছেন গণমাধ্যমের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি প্রতারকদের খপ্পর থেকে সংবাদ মাধ্যমকে রক্ষা করতে সরকারের সহযোগিতাও কামনা করছেন নির্যাতিত সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিজ অফিসে সাংবাদিকদের গালাগালিসহ মারধর করেন তিনি। এব্যাপারে অভিযোগ দেয়া হয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নে।
‘ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত’
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের......বিস্তারিত