
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৯২টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবচাইতে তরুণ কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব। ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৩ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। কল্যাণমুখী এই কাউন্সিলরকে এলাকার গরীব-দুঃখীরা ভালবেসে ডাকেন ‘জনতার কমিশনার’ বলে। তার এমন জনস্রোত দেখে কোন একটি মহল মাঠে নেমেছেন অপপ্রচারে।
সম্প্রতি এ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে নামমাত্র কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে মনগড়া তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করে আসছে একটি মহল। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার মোহাম্মদপুর এলাকার সাধারণ মানুষ দেখে হাস্যকরভাবে নিচ্ছেন। তারা মনে করেন, তারেকুজ্জামান রাজিব একজন কাউন্সিলর নয়, তিনি এলাকাবাসীর গৌরব। এমন কাউন্সিলর পেয়ে ৩৩ নং ওয়ার্ড বাসি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেন বলে মনে করেন ওই এলাকার এক বাসিন্দা।
জানা গেছে, তারেকুজ্জামান রাজিব ছাত্র রাজনীতি থেকেই মূল ধারার রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমানে জনপ্রতিনিধি হয়ে হাল ধরেছেন মোহাম্মদপুরের বসিলা, ওয়াশপুর, কাটাসুর, গ্রাফিক্স আর্টস ও শারীরিক শিক্ষা কলেজ, মোহাম্মদদিয়া হাউজিং সোসাইটি এবং বাঁশবাড়ী এলাকার।
২০১৫ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। এ নির্বাচনেই তার জনপ্রিয়তা ফুটে উঠে। তার জনপ্রিয়তা ও জনস্রোতের ফলে ঐ নির্বাচনে তিন হাজার ভোটের বিশাল ব্যবধানে হারান হেভিওয়েট নেতা ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে।
সূত্র জানায়, জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রাজিবকে। যদিও রাজিবের অভিযোগ, একটি মহল তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য সব সময় পেছনে লেগে থাকে। তারপরও নিজের মেধা, যোগ্যতা, সাংগঠনিক দক্ষতা আর মানুষকে ভালোবেসে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। তার দেশের বাড়ি ভোলায় তবে ছোটবেলা থেকেই বড় হয়েছেন ঢাকার মোহাম্মদপুরে। ঢাকাতেই তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। বর্তমানে তিনি মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক।

সূত্র আরো জানায়, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি নানাভাবে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে তার দৃষ্টিনন্দন কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ সংলগ্ন চৌরাস্তায় আল্লাহর ৯৯ নাম দিয়ে তৈরি করা কাঁচের স্তম্ভটি। যেটার মূল পরিকল্পনাকারী রাজিব নিজেই। এই স্তম্ভটির নাম ‘দ্য গ্লোরি অব নামিরা’। এই স্তম্ভটি রাতের বেলা অনন্য রূপ ধারণ করে। রাজিবের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার মুসল্লিরা।
এলাকাবাসী বলেন, ‘আমাদের জনতার কাউন্সিলর কাজ কর্মে যেমন তড়িৎকর্মা, চিন্তা চেতনাতেও তেমন উন্নত। তিনি প্রথমবারের মতো ইসলাম ধর্ম প্রধান দেশে ধর্মীয় চিন্তা ভাবনা থেকে এমন একটা স্তম্ভ নির্মাণ করেছেন। এটি আমাদের মুগ্ধ করেছে।
কাউন্সিলর রাজিব বলেন, মোহাম্মদপুর ঐতিহ্যগতভাবেই একটি মুসলিম নাম। আল্লাহর কাছে আমি শুকরিয়া আদায় করছি যে, আমি এই ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। আমি সৌদি আরবে এমন অনেক ইসলামিক স্ট্যাচু দেখেছি। তখন থেকেই মোহাম্মদপুরে এমন কিছু একটা করার পরিকল্পনা ছিল। ইচ্ছা আছে, পরবর্তীতে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে বড় করে পবিত্র কোরআন রাখার রেহেলের আদলে একটি স্তম্ভ তৈরি করবো।
এলাকাবাসী জানায়, জমি দখল, খাল ভরাটের বিরুদ্ধেও অত্যন্ত সোচ্চার কাউন্সিলর রাজিব। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল। সেই অভিযানে ৮ শতাংশ জমি দখলমুক্ত করা হয়। ডিএনসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এই উচ্ছেদ কর্মসূচি সমন্বয় করেন রাজিব।
এক ব্যক্তি জানান, রাজিব ভাই পুরো ঢাকা শহরের যুবক রাজনীতিকদের জন্য এক অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। যার জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া।
এলাকা সূত্রে জানা গেছে, মাদকের বিরুদ্ধেও সোচ্চার জনতার এই কাউন্সিলর। কাটাসুর কাদিরাবাদের পেছনের খালটি ছিল মাদকসেবীদের আড্ডা। দুর্গন্ধের কারণে খালটির আশেপাশে যাওয়াও কঠিন ছিল। কিন্তু কাউন্সিলর রাজিব সেই খালটি সংস্কার করেন। নিজে কাঁদাপানিতে নেমে তদারকি করেন পরিষ্কার অভিযানের। বর্তমানে সেই খালটি পরিচ্ছন্ন, রুপান্তরিত হয়েছে লেকে। আশেপাশের রাস্তায় বসানো হয়েছে অসংখ্য লাইট, বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। সকল বয়স, সকল পেশার মানুষ এখন চাইলেই হেঁটে আসতে পারেন।
এছাড়াও হাতিরঝিলের অনুকরণে এলাকাবাসীর দৃষ্টিনন্দন এই লেকটির নাম দিয়েছে মোহাম্মদপুরের ঝিল। সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হলো, ঝিলটিতে কাউন্সিলর রাজিব প্রায় তিনশতটির মতো লাইট লাগিয়েছেন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত দুই বছরে অত্র এলাকার ব্যাপক রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে। মাদক এবং ইভটিজিংকে কাউন্সিলর রাজীব সবসময় জিরো টলারেন্স দেখিয়ে আসছেন। এজন্য এলাকায় মা-বোনরা নির্ভয়ে চলাচল করতে পারেন। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসিয়েছেন রাস্তা নির্দেশক বোর্ড। ৩৩ নং ওয়ার্ডে মাদকের প্রভাব এবং ইভটিজিং কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন থানা-পুলিশও।
তারিকুজ্জামানের ফেসবুক টামলাইন ঘাঁটলেই বোঝা যায় তরুণদের কাছে তিনি ঠিক কতোখানি জনপ্রিয়। চলতি বছর ৩৩ নং ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। স্মার্টকার্ড সেবা থেকে যেন একজনও বাদ না পড়ে এজন্য তিনি নিজেই দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। এরই ফাঁকে তিনি ক্লান্ত এক দুপুরে ঘুমিয়ে পড়েন বেঞ্চের ওপর। ক্লান্ত কাউন্সিলরের সেই ছবিটি ফেসবুকে দিয়ে তার এলাকার এক তরুণ লিখেন, ‘টানা ১ মাস দিন-রাত কঠোর পরিশ্রমে স্মার্টকার্ড বিতরণ করে ক্লান্ত হয়ে মঞ্চের উপরেই ঘুমিয়ে পরেছেন আমাদের সকলের প্রিয় জনতার কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব ভাই। যিনি কিনা সবসময় নিজের এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করেন, ঘুমোনোর আগেও একবার জনগনের কথা চিন্তা করে ঘুমান..।’
জানা যায়, কাউন্সিলর রাজিব এলাকার তরুণদের কাছে একটি আবেগের নাম। কখনো তিনি ছুটে যান মাঠে, ব্যাট হাতে তরুণদের সঙ্গে নেমে যান ক্রিকেট খেলতে। কখনো বনে যান পুরোদমের সাইক্লিস্ট, সাইকেলের প্যাডেলে দাঁপিয়ে বেড়ান রাজপথ। কখনো বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুরে চলে যান মেহনতি মানুষের পাশে। কখনো তুখোর যুবনেতা হয়ে দাঁপিয়ে বেড়ান রাজপথ। বংশগতভাবে অর্থবিত্ত, প্রতাপ থাকার পরও সাধারণ মানুষের সঙ্গে চলেন বন্ধুর মতো।
কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডটি হবে একটি একান্নবর্তী পরিবারের মতো। যেখানে সকল ধর্মবর্ণের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করবে। আমি জনগণের কল্যানের জন্য কাজ করে যেতে চাই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার একজন কর্মী হতে চাই।’
