নিজস্ব প্রতিবেদক: ২২ টি পত্রিকার সম্পাদক খ্যাত ও ক্যাসিনো গডফাদারদের কাছ থেকে মাসোয়ারা পাওয়া নাঈমুল ইসলাম খান তার পত্রিকায় পদবি দেয়ার মাধ্যমে অভিনব পন্থায় সিনিয়র সাংবাদিকদের বিজ্ঞাপন সংগ্রহে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব পদগুলোর নাম শুনলেও প্রতারণার বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় বলেও মনে করেন অনেক সাংবাদিক নেতা। সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের পত্রিকা ছাড়া এমন আজগুবি নামের পদবি আর কোথায় দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেক সাংবাদিক নেতা। নাঈমুল ইসলাম খান নিজে নিজেই নানা পদের উদ্ভব ঘটিয়ে এক অভিনব প্রতারণা করছেন বলে জানা গেছে। যেসব পদের নাম মানুষের মাঝে হাস্যরসের সৃষ্টি করে এমন পদও তিনি সাংবাদিকদের দিয়ে থাকেন। এই বিতর্কিত সম্পাদকের প্রতিষ্ঠানে অভিনব এসব পদের মধ্যে রয়েছে সংযুক্ত সম্পাদক, বিদেশ সম্পাদক, গ্রুপ যুগ্ম সম্পাদক এবং প্রকাশক ও গ্রুপ প্রধান সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদ। সম্প্রতি সিনিয়র সাংবাদিকদের নানা পদ দেয়ার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সংগ্রহের কাজে নামানোর মতো ভয়াবহ প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তার অফিসে কর্মরত ছিলেন এমন অনেক সাংবাদিক।
এসব পদের বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক সাংবাদিক জানান, নাঈমুল ইসলাম খানের পত্রিকায় যেসব পদের নাম ব্যবহার করা হয় সেসব পদের নাম সহসায় কেউ কখনো শুনেননি। আসলে এসব পদ দিয়ে সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান তার পত্রিকার মার্কেটিং করার জন্য সিনিয়র সাংবাদিক ও জনপ্রিয় পরিচিত মুখদের চাকরি দিয়ে থাকেন।
পদ দেয়া সম্পর্কে নাঈমুল ইসলামের খানের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন এমন এক সাংবাদিক বলেন, উনার ভন্ডামির কথা ফাঁস করে দেয়ার সময় এসে গেছে। নাঈম ভাই মূলত জনপ্রিয় সাংবাদিকদের প্রথমে তার পত্রিকায় চাকরি দিয়ে থাকেন পত্রিকার গুণ ও মানের বিষয় দেখভাল করার ব্যাপারে। কিন্তু কিছুদিন পরে তিনি খুব পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে কৌশলে বিজ্ঞাপনে কাজ করতে উৎসাহিত করেন। এটাও বড় ধরণের এক প্রতারণা বলে মনে করেন এই সাংবাদিক।
এদিকে বিজ্ঞাপন সংগ্রহের অভিনব তথ্য দিয়ে এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, নাঈমুল ইসলাম খান একজন অতি ধূর্ত ও দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ। তিনি সব সময় মানুষের দুর্বলতা ও অসহায়ত্বের সুযোগ নেন। তিনি এক প্রকার ভন্ড প্রকৃতির মানুষ বলা চলে। সিনিয়র সাংবাদিক কিন্তু চাকরি নেই এমন ব্যক্তিদের তিনি নিজেই ডেকে আনেন অফিসে। তারপর তাকে একটি ভালো পদে চাকরি দেন। ভালো পদে চাকরি দেয়ার পর কয়েক দিন যেতে না যেতেই খুব কৌশলে বিজ্ঞাপনে কাজ করতে বলেন তাদেরকে। এটা খুব অসম্মানের হওয়া সত্ত্বেও সেসব সিনিয়র সাংবাদিকরা জীবিকা নির্বাহের তাগিদে বিজ্ঞাপন সংগ্রহের কাজে নামতে বাধ্য হন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জন্য এক বছরের মধ্যে কয়েকজন সিনিয়র লোককে চাকরি দিয়েছেন নাঈমুল ইসলাম খান। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা। তাকে চাকরি দেয়া হয়েছে সংযুক্ত সম্পাদক পদে। তার কাজ ছিলো পত্রিকার শিরোনামগুলো যাতে সুন্দর হয়। সেই দিকে খেয়াল রাখা। কিন্তু কয়েক দিন পরে তাকে বিজ্ঞাপন আনতে বলা হয়েছে। এরপর লেখক জগতে সবার পরিচিত মুখ বিভুরঞ্জন সরকার, তাকে পদবি দেয়া হয়েছিল গ্রুপ যুগ্ম সম্পাদক পদে। তার কাজ ছিলো চলমান বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা। কিন্তু তাকেও তিনি একই কাজ করতে বলেন। এছাড়া সম্প্রতি তার সাহিত্য পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে একজনকে চাকরি দেয়া হয়েছে, পরে তাকে সার্কুলার ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে বলা হয়েছে। এভাবে তিনি সিনিয়র সাংবাদিকদের চাকরি দিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও গায়ে হাত তোলার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এই সম্পাদকের বিরুদ্ধে। এসব কারণে তার মিডিয়া হাউসে এখন কোনো সিনিয়র সাংবাদিক কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ প্রসঙ্গে ডিইউজের এক সাংবাদিক নেতা বলেন, নাঈমুল ইসলাম খান তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলে সমগ্র সাংবাদিক সমাজকে অপমান করেছেন। এছাড়া তিনি সিনিয়র সাংবাদিকদের কৌশলে বিজ্ঞাপন সংগ্রহের কাজে নামিয়ে ছোট করেছেন। তিনি এভাবে সাংবাদিক সমাজকে অপমান করতে পারেন না। এভাবে তিনি করতে থাকলে সাংবাদিক জগত কলঙ্কিত হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে তার এসব প্রতারণা আর সাংবাদিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার মত দুঃসাহস দেখানোর স্পর্ধার সঠিক প্রতিকার হওয়া জরুরি।
তবে এ প্রতিবেদকের সাথে এ ব্যাপারে নাঈমুল ইসলাম খান কথা বলতে নারাজ।
‘ভোলায় অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, ২ অপহৃত উদ্ধার’
ভোলায় জলদস্যুতার অভিযোগে ৩ দস্যুকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।......বিস্তারিত