ঢাকা: রাজধানীর রূপনগরে বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ জন মারা গেছে। একই ঘটনায় আহত ও দগ্ধ হয়ে আরো ৭ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাদের মধ্যে ছয় বছর বয়সী মিজানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মিজান ছাড়া ভর্তি থাকা বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের আবাসিক সার্জন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। মিজান ছাড়া ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাকিরা হলেন- গ্যাস বেলুন বিক্রেতা আবু সাঈদ (২৯), মোস্তাকিম (৯), স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েল (২৫), জান্নাত (২৫), জনি (১০) এবং সিয়াম (১১)।
ঢামেকের অর্থোপেডিক্স বিভাগে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন বেলুন বিক্রেতা আবু সাঈদ। বিস্ফোরণে তার ডান হাতের আঙুল থেতলে গেছে। এছাড়া, তার পেট ঝলসে গেছে এবং ডান পায়ে আঘাত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ঢামেকে আবু সাঈদ বলেন, এটা তো (সিলিন্ডার বিস্ফোরণ) একটা দুর্ঘটনা, আমি তো ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটাইনি। ইচ্ছা করে হলে শাস্তি মানা যেত। শুনলাম অনেকে মারা গেছে, অনেকে অসুস্থ আছে, আমি চাই সবাই সুস্থ হোক। সবার কাছে আমি ক্ষমা চাই এবং সবাই সুস্থ হয়ে যাক।
ঢামেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশ পাহারায় ভর্তি রয়েছেন বেলুন বিক্রেতা আবু সাঈদ। কারণ, গতকাল বুধবার রাতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার একমাত্র আসামি তিনি। চিকিৎসাধীন আবু সাঈদের হাতে হাত কড়া না থাকলেও একজন পুলিশ সদস্য তাকে পাহারায় রেখেছেন।
সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবু সাঈদ বলেন, সাভারে আমার এক চাচার কাছ থেকে এ ব্যবসা (গ্যাস বেলুন বিক্রি) শিখেছি। ১৫ দিন ধরে আমি এ ব্যবসা করছি। স্বাভাবিকভাবে যেভাবে বেলুনে গ্যাস ভরা হয় কালও (বুধবার) একইভাবে ভরেছি। এমন বিস্ফোরণ হবে কল্পনাও করতে পারিনি। বিস্ফোরণের পর ৫ মিনিট আমার কোনো জ্ঞান ছিল না।
তিনি আরো বলেন, জ্ঞান ফিরলে প্রথমে আমার বাসায় যাই, তারপর ইসলামিয়া হাসপাতালে গিয়ে ব্যান্ডেজ করাই। তারা ভর্তি না নিয়ে আমাকে পঙ্গুতে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠায়, সেখান থেকে রাতে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠায়।
গ্যাস বেলুন বিক্রি করার আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার বাসিন্দা আবু সাঈদ ঢাকার মিরপুরেই একটি টেইলার্সে জামা-কাপড় শেলাইয়ের কাজ করতেন। তিনি বলেন, এর আগে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ মিরপুরে একটি টেইলার্সে কাজ করতাম। সেখানে প্রতি পিস বাবদ ৮০ টাকা দিত। যে টাকা পেতাম তাতে না পোষানোর ফলে এ ব্যবসায় নামি।
চিকিৎসাধীন আবু সাঈদের বাম হাত ও ডান পা ব্যান্ডেজ করা। তিনি বলেন, শুনেছি আমার নাকি বাম হাতের দুটি আঙুল নেই, পায়েও নাকি মাংস নেই। দোয়া করবেন আমি যেন সুস্থ হই। যারা আহত হয়েছেন সাবাই যেন সুস্থ হন।
গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) রূপনগর থানার শিয়ালবাড়ি বস্তির শিশুরা বেলুন কিনতে গিয়ে ভ্যানগাড়িতে থাকা বেলুনে ভরা গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হয়েছে। তারা হলো- নিহাদ, রিয়া, শাহিন (১০), নূপুর (৭), ফারজানা (৯), জান্নাত (১৪) ও রমজান (৮)। একই ঘটনায় আহত ও দগ্ধ হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন। তাদের মধ্যে ৭ জন ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
‘ভোলায় অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, ২ অপহৃত উদ্ধার’
ভোলায় জলদস্যুতার অভিযোগে ৩ দস্যুকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।......বিস্তারিত