ঢাকা: অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ নির্বাচিত মেয়র বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুতে একজন ভালো বন্ধুকে হারানোর বেদনা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, জাতি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হারালো। আমি একজন ভালো বন্ধুকে হারালাম। খোকার মৃত্যুতে বড় অসহায় অনুভব করছি। সমসাময়িক তার মতো সঙ্গী আর কেউ নেই। দুয়েকজন আছেন, তবে তার মতো কেউ হবে না। তার মৃত্যুতে বিএনপিও একজন ম্যাচিউরড ও পটেনশিয়াল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকায় নিজ বাসায় সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি আরও বলেন, সাদেক হোসেন খোকাকে ঘিরে দলের মধ্যেও কেউ কেউ বিভেদ তৈরির চেষ্টা করেছে। শিগগিরই তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করবেন তিনি।
সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা জানাতে গিয়ে আব্বাস বলেন, খোকার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রেললাইনের মতো। তার চলাফেরার স্টাইল ছিল একরকম, আমার অন্যরকম। খোকা একসময় ন্যাপের রাজনীতি করত, আমি বিএনপি করতাম। মতের অমিল ছিল, তবে দ্বন্দ্ব ছিল না। ল্যাং মারামারি ছিল না।
তিনি আরও বলেন, কিছু লোক আছে, কিছুদিনের মধ্যে তাদের নাম প্রকাশ করব। না করলে দলের বড় ক্ষতি হবে। তারা আমার এখানে ভাত খেত। খোকার সঙ্গে দেখা হলে তার কাছে আমার নামে উল্টাপাল্টা বলত। সেই একই লোক আবার আমার কাছে এসে অন্য কথা বলত। খোকার সঙ্গে যে ওইসব ব্যাপারেও আমার কথা হতো, তারা হয়তো ওরা জানতই না।
কিডনি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। সেখানে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন মির্জা আব্বাস। সেসময়কার কথা জানিয়ে আব্বাস বলেন, সিঙ্গাপুরে খোকার কিডনি অপারেশনের সময় সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম, তার ক্যানসারও ধরা পড়েছে, কিন্তু কিডনির অপারেশন করানো হচ্ছে। ওই সময় থেকেই তার সমস্যা বেড়েছে। আগে জানলে হয়তো সেই অপারেশন করতে দিতাম না। সিঙ্গাপুরে অপারেশনের পরপরই খোকা চিকিৎসার জন্য আমেরিকা চলে যায়।
তিনি বলেন, খোকা আমেরিকা থেকে প্রায়ই আমাকে কল করত। কথা হতো। সে যদি কোনোরকমে প্লেনে উঠতে পারত, তাহলে তাকে দেশে নিয়ে আসতাম। দেশের আসার পর কী হতো, সেটা পরে দেখা যেত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তার প্লেনে ওঠার মতো অবস্থাই ছিল না।
সর্বশেষ খোকার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন জানতে পেরে ৩০ অক্টোবর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন আব্বাস। তিনি বলেন, ওই রাতে একজন সাংবাদিকের ফোন পেয়েছিলাম। জানতে পারি, খোকার অবস্থা খুব খারাপ। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই। সেটি ছিল আমার ফেসবুকে প্রথম স্ট্যাটাস। চার দিন পর তো খোকা সবাইকে ছেড়ে চলেই গেল। আমি তার জন্য দোয়া করছি, ওর জন্য দোয়া বন্ধ হয়নি। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে সমাহিত করতে চান তারা।
‘বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত’
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।......বিস্তারিত