ঢাকা: আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল। ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে গড়তে সোনার দেশ/এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’ স্লোগানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের কাউন্সিল।
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকাল ৩টায় কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে কাউন্সিল অধিবেশন।
এবারের কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের শীর্ষপদে রদবদল আসবে না। বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা আবারও আওয়ামী লীগের সভাপতি হচ্ছেন। আর সাধারণ সম্পাদক পদেও ওবায়দুল কাদেরই থাকার সম্ভাবনা বেশি। তবে পরিবর্তন আসবে সভাপতিমন্ডলীতে। এখানে বেশ কিছু নতুন মুখ অন্তর্ভূক্ত করা হতে পারে। পরিবর্তন আসবে যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদগুলোতে। এছাড়া কার্যনির্বাহী কমিটির সম্পাদকীয় পদগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হতে পারে। নতুন ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের এসব পদে আনা হবে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
এবারের কাউন্সিলে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য পৃথক আসন ও ‘ইরেজি ভাষা অনুবাদক হেডফোন’ থাকছে।
এবারের কাউন্সিল থেকে আওয়ামী লীগ সহ সম্পাদক পদের বিলোপ হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সংখ্যা ৪১ থেকে বাড়িয়ে ৫১ করা হবে। বুধরার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলটির কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্দান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতির জন্য বরাদ্দ (কো-অপ) ১০০ কাউন্সিলর অনুমোদন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। বৈঠকে উপস্থিত একজন নেতা জানান, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মর্যাদা দিয়ে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
রাত ১০টা পর্যন্ত চলা কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। শনিবার সকালে কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক মুলতবি থাকবে। এর মধ্যে প্রয়োজনে যে কোনো সময় মুলতবি সভা ডাকতে পারেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
বৈঠকে অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম, অর্থ উপকমিটির আহ্বায়ক কাজী জাফরউল্লাহ, ঘোষণাপত্র উপকমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম, দপ্তর উপকমিটির সদস্য সচিব আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির সদস্য সচিব হাছান মাহমুদ, শৃঙ্খলা উপকমিটির সদস্য সচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খাদ্য উপকমিটির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ ১১টি কাউন্সিল প্রস্তুতি উপকমিটির নেতারা তাদের প্রতিবেদন পেশ করেন।
এদিকে জাতীয় কাউন্সিলের আগে তৃণমূল গোছানোর কাজ শুরু করলেও তা শেষ করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। ফলে অর্ধেকের বেশি সাংগঠনিক জেলা মেয়াদোত্তীর্ণ রেখেই জাতীয় সম্মেলন করতে হচ্ছে দলটিকে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলছেন- এটা চলমান প্রক্রিয়া। জাতীয় সম্মেলনের পরও তৃণমূল গোছানোর কাজ চালিয়ে যাবেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চলতি মেয়াদে এ পর্যন্ত আট বিভাগের ৭৮ জেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে ৩৭টির সম্মেলন হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা বিভাগের ১১টি জেলা ও মহানগর কমিটির সাতটি জেলা ও এক মহানগর কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রংপুর বিভাগে ৯টি জেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে ছয়টির সম্মেলন হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জেলা ও মহানগর কমিটির ছয় জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল বিভাগে সাত জেলা ও মহানগরের মধ্যে তিনটির সম্মেলন হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ৯ জেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে দুটির সম্মেলন হয়েছে।
সিলেট বিভাগের পাঁচ জেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে তিনটির সম্মেলন হয়েছে। ঢাকা বিভাগে ১৭ জেলা ও মহানগরের মধ্যে দুটির সম্মেলন হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচটি জেলা ও মহানগর কমিটির একটিরও সম্মেলন হয়নি।
দলীয় সূত্র জানায়, জেলা-উপজেলা ও মহানগরগুলোতে সম্মেলন ও কমিটি গঠন খুবই কঠিন কাজ। কারণ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিরোধ। যে কারণে অনেক স্থানের সম্মেলন তারিখ পেছানো ও তারিখ পরিবর্তনও করতে হয়েছে। ফলে জাতীয় কাউন্সিলের আগে যতগুলো সম্মেলন হয়েছে তাতেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। সম্মেলনের পর বাকি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির ও সম্মেলন হওয়া কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ চালিয়ে যেতে চান তারা।
‘পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু’
রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।......বিস্তারিত