TadantaChitra.Com | logo

১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জাপানি জাহাজে ৪৪ মার্কিনি করোনা আক্রান্ত

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০, ০৬:৩৮

জাপানি জাহাজে ৪৪ মার্কিনি করোনা আক্রান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে অবরুদ্ধ ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে ৪৪ মার্কিন নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ এর পরিচালক অ্যান্থনি ফসি। খবর সাউথ চায়না মর্নি পোস্ট, এএফপি, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।

এর আগে রবিবার যুক্তরাষ্ট্র তার ৪শ’ নাগরিককে ওই জাহাজ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তবে আক্রান্ত কাউকে নেওয়া হয়নি। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে রাখা হবে। সেখানে ৪শ’ এর বেশি মার্কিন নাগরিক ছিল। এর মধ্যে ৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তরা জাপানের হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

অন্যদিকে, ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে রবিবার নতুন করে ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।এ নিয়ে অবরুদ্ধ (কোয়ারেন্টাইন) জাহাজটিতে আক্রান্ত বেড়ে ৩৫৫ জন হয়েছে।দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাটসুনোবো কাতো জানান, নতুন করে জাহাজের ২শ’র ওপর যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ৭০ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে।পর্যায়ক্রমে সকল যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।এছাড়ার জাহাজের যাত্রীসহ জাপানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০৭ জন এবং নিহত ১ জন।

তিনি আরও জানিয়েনে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে আটকে আছে জাহাজটি।এখন পর্যন্ত জাহাজের ৩৫৫ যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।আক্রান্তদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।বাকিদের আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাহাজেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’ নামের ওই বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজে ২ হাজার ৬৬৬ জন যাত্রী ও ১ হাজার ৪৫ জন ক্রু রয়েছে।সকল যাত্রীদের পরীক্ষা করার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জাহাজে রয়েছেন।যাত্রীদের জাহাজে নিজ রুমে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ওই হাজাজে পূর্বে ভ্রমণ করা এক যাত্রীর শরীরে ২৫ জানুয়ারি হংকংয়ে করোনা ভাইরাস হলে, জাপান সরকার জাহাজটিকে অবরুদ্ধ করার এ পদক্ষেপ নেয়।এছাড়াও জাহাজে ভ্রমণকারী ৮ যাত্রীর শরীরে জ্বর ছিল, যা করোনা’র একটি আলামত।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাহাজটি জাপানের ইয়োকোহামা উপসাগরে আসে বলে জানান দেশটির সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিদে সুগা।

এদিকে করোনা ভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৭৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। চীনের বাইরে হংকং, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, জাপান ও ফ্রান্সে ১ জন করে মোট ১ হাজার ৭৭৫ জন নিহত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছে ১০৫ জন।

করোনা ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ৭১ হাজার ৩২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার ৫৪৮ জন এবং চীনের বাইরে ৭৭৮ জন। এখন পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৬১০ জন সুস্থ হয়েছে।

সোমবার সকালে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, চীনে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৮ জন। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৭০ হাজার ৫৪৮ জন। এর মধ্যে ১১ হাজারের বেশি মানুষের অবস্থা আশঙ্কানক। এছাড়া চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।

হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হুবেইতে নতুন করে ১ হাজার ৯৩৩ জন আক্রান্তের খবর নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে উহানে ১ হাজার ৬৯০ জন আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৫৮ হাজার ১৮২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১০৫ জনের মধ্যে ১০০ জনই হুবেইতে। এ নিয়ে প্রদেশটিতে নিহত হয়েছে ১ হাজার ৬৯৬ জন।

হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান, সেখানাকার একটি সামুদ্রিক খাদ্য ও মাংসের বাজার থেকে এই করোনা ভাইরাসটির উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।ভাইরাসটি যাতে ছড়িয়ে না যায়, সেজন্য চীন হুবেই প্রদেশকে পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।ওই অঞ্চলের সাথে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে চীনসহ বাইরের বিশ্ব থেকে।

চীনে রবিবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ১০ হাজার ৬১০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। সুস্থ হওয়ার পর তাদেরকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত ১০ হাজার ৬১০ জন সুস্থ হয়েছে এবং তারা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছাড়পত্র পেয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন যে পরিমাণ আক্রান্তের খবর আসছে, তাতে আক্রান্তের আসল খবর জানা যাচ্ছে না।কারণ, ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, শুধু তাদের হিসেব পরিসংখ্যানে ধরা হচ্ছে।তাই এর প্রকৃত হিসেব বের করা বা জানা খুবই কঠিন ব্যাপার, যা আরেকটি আশঙ্কার কারণ।

চীনের সবগুলো প্রদেশসহ বিশ্বের ২৯টি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।চীনের বাইরে এ পর্যন্ত ৭৭৮ জন শনাক্ত করা হয়েছে।এর মধ্যে জাপানেই ৪১২ জন।

ভাইরাস সংক্রমণের কারণে চীন ভ্রমণে সতর্কতা, নিষেধাজ্ঞা জারি এবং কড়াকড়ি আরোপ করেছে অনেক দেশ।ভারত, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশ চীন থেকে আগত যাত্রীদের ভিসা বাতিল করেছে।ভাইরাসের কারণে, বিশ্বের অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।চীনে অধিকাংশ বিমান সংস্থার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্সসহ আরও অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।

এছাড়া, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে (কোভিড-১৯) চীনে ৬ স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু এবং ১ হাজার ৭১৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।সোমবার দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এ তথ্য জানিয়েছেন।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের সহকারী পরিচালক জেং ইজিন জানান, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এরইমধ্যে ৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন।

এই কর্মকতা আরও জানান, করোনা ভাইরাসে চীনে ১ হাজার ৭১৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। যা ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্ত রোগীদের ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে হুবেই প্রদেশে রয়েছেন ১ হাজার ৫০২।

গত ডিসেম্বরে চীনে উদ্ভূত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা।এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৯টি দেশে ৭৭৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

যেসব দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে-

চীন- ৭০ হাজার ৫৪৮ জন আক্রান্ত, মারা গেছে ১ হাজার ৭৭০ জন। যার অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের উহানে। হংকং- ৫৭ জন আক্রান্ত, নিহত ১ জন। ফিলিপাইন- ৩ জন আক্রান্ত, নিহত ১ জন।জাপান- ৪১২ জন আক্রান্ত, নিহত ১ জন।ফ্রান্স- ১২ জন আক্রান্ত, নিহত ১ জন। তাইওয়ান- ২০ জন, নিহত ১ জন। সিঙ্গাপুর- আক্রান্ত ৭৫ জন, থাইল্যান্ড- ৩৪ জন, দক্ষিণ কোরিয়া- ২৯ জন, মালয়েশিয়া- ২২ জন, জার্মানি- ১৬ জন, অস্ট্রেলিয়া- ১৫ জন, ভিয়েতনাম- ১৬ জন, যুক্তরাষ্ট্র- ১৫ জন, ম্যাকাও- ১০ জন, যুক্তরাজ্য- ৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত- ৮ জন, কানাডা- ৮ জন, ভারত- ৩ জন, ইটালি- ৩ জন, রাশিয়া- ২ জন, স্পেন- ২ জন, বেলজিয়াম- ১ জন, কম্বোডিয়া- ১ জন, ফিনল্যান্ড- ১ জন, নেপাল- ১ জন, শ্রীলঙ্কা- ১ জন, সুইডেন- ১ জন, মিশর- ১ জন।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।