অনলাইন ডেস্কঃ নেই যাত্রী, নেই শ্রমিকদের কোলাহল। একটু পর পর বেজে উঠছে না হুইসেল, নেই ট্রেনের ঝকঝক শব্দ। দিন-রাত ব্যস্ত স্টেশনের চারদিকে এখন শুধুই সুনসান নীরবতা। রোববার রাজধানীর কমলাপুরে রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ বিকেল থেকে দেশের সব রুটে ট্রেন চলাচলা বন্ধ করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
রোববার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কমলাপুর রেলস্টেশনের সামনের সড়কে যেখানে রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভিড় লেগেই থাকত সেখানে এখন নেই কোনো যানবাহন। মানবশূন্য স্টেশনের সামনের গেটে ঝুলছে তালা। ভেতরে চার-পাঁচজন নিরাপত্তারক্ষী দাঁড়িয়ে আছেন।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৪ মার্চ বিকেল থেকে রেল চলাচল বন্ধ হয়েছে। ২৫ মার্চ থেকে স্টেশন বন্ধ। রেলের কর্মী ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
নিরাপত্তায় থাকা এক আনসার কর্মী জানান, কয়েক বছর ধরে স্টেশনে দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া এই স্টেশনে যাতায়াত করছি প্রায় ৩০ বছরের ওপরে। কিন্তু কোনো সময় এমন অবস্থা দেখি নাই, মানবশূন্য স্টেশন, সুনসান নীরবতা। এক সপ্তাহ আগের স্টেশনের কথা চিন্তা করলে অবাক লাগে। একটি অদৃশ্য ভাইরাস গোটা স্টেশন নয় শহরই প্রায় জনশূন্য করে দিয়েছে। আল্লাহ জানে আগামীতে কি হবে।
নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে কথা বলার সময় দেখা মিলল রনি নামের এক রেলকর্মীর। বন্ধের সময় তিনি কী করছেন জানতে চাইলে বলেন, আমাদের ছুটি নেই। ৮ ঘণ্টা করে ডিউটি করতে হচ্ছে। কারণ রেল চলাচলা বন্ধ থাকলেও রেলের ইঞ্জিন চালু রাখতে হয়। তা না হলে ইঞ্জিন বসে যাবে। এছাড়া ইঞ্জিনের কোনো সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। তাই নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রতিটি ইঞ্জিন চালানো হচ্ছে। যাতে কোনো সমস্যা না হয়।
নি আরও জানান, প্রতিদিন তিন শিফটে কাজ করছেন তারা। প্রতি শিফটে ৮ থেকে ৯ জন করে আছেন। ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়েছে তাদের ডিউটি চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। এসময় তারা চারটি ট্রেনের ইঞ্জিন দেখভাল করবেন বলে জানান।
এদিকে শুধু স্টেশন নয়, এর আশপাশ এলাকায়ও সব ধরনের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফলে এলাকাজুড়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।
এর আগে গত ২৪ মার্চ দুপুরে রেল ভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম জানান, আজ (২৪ মার্চ) এবং এখন থেকেই সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। তবে মালবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
তিনি জানান, যেসব রেল বিভিন্ন বেজ স্টেশন থেকে ঢাকায় এসেছে, তারা আবার ফিরে যাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে তেল, খাদ্যসহ জরুরি পণ্য পরিবহনের জন্য সীমিত আকারে ট্রেন চলবে।
এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
‘পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু’
রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।......বিস্তারিত