সোনাইমুড়ী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাওহিদ। একমাসে দুইটি নাশকতার মাধ্যেমে তাদের সক্রিয়তার প্রমাণ মিলেছে। উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়ন ব্যাপি ছড়িয়ে পড়েছে এই সংগঠনের কর্মিদের তাণ্ডব। এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি,মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম চালি যাচ্ছে সংগঠনের এমাম সেলিমের ছোটভাই মহিন উদ্দিনের নেতৃত্বে।
এসকল কাজে মহিনকে সহায়তা করে যাচ্ছে হিজবুত তাওহিদের অপ্রকাশ্য নেতা স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহরাব হোসেন ভুট্টো। বর্তমানে মহিন উদ্দিন এবং মেহরাব হোসেন ভুট্টো দুজনই একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামী হয়ে কারাগারে রয়েছে। গত ২০১৬ সালে ব্যপক তাণ্ডবের পর কিছুদিন গোপনে কর্মকাণ্ড চলমান রাখলেও বর্তমানে সংগঠনটি রক্তাখুনে মেতে উঠেছে। ঐ বছর হিজবুত তাওহিদ উপজেলার চাষিরহাটে কয়েক হাজার বহিরাগত কর্মী জড়ো করে গ্রামবাসীর উপর এলোপাতাড়ি হামলা করে দেশব্যপী আলোচনায় আসে। এসময় অন্তত ৪টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সংগঠনের এমাম সেলিমের ছোটভাই মহিন উদ্দিন (৩৮), জসিম উদ্দিন (৩২) উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নে একক নেতৃত্ব সৃষ্টি করার লক্ষে নীলনকশা ধরে এগুচ্ছে। এলাকার দরিদ্র শ্রেণির যুবক যুবতিদেরকে লক্ষ করে অর্থ বিলিয়ে দলে বিড়াচ্ছে। প্রশিক্ষিত করে এদের নেতৃত্বে বহিরাগত লেকজন দিয়ে রাতের বেলায় গ্রামে গ্রামে চালানো হচ্ছে গুপ্ত হামলা। তাদের অত্যাচারে পোরকরার অনেক পরিবার গ্রামছাড়া হয়েগেছে। অনেক পরিবারের সকল পুরুষকে করে রেখেছে প্রতিহিংসা মূলক মামলার আসামী। একদিকে মামলার কারণে পুলিশি হয়রানি অপরদিকে হিজবুত তাওহিদের ক্যাডারদের ভয়ভীতির কারণে পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি। গ্রামের প্রবেশ পথে নুরুল হক মেম্বারের বাড়িতে তাদের আস্তানা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতেও বাঁধা সম্মুখিন হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাষিরহাটের পোরকরা গ্রামে জড়ো হচ্ছে ফেনী,লক্ষ্মীপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হিজবুত তাওহিদের সদস্যরা, প্রশিক্ষীত এসব সদস্যরা দিনের বেলায় চা, মুদি দোকান হকারীর মতো কাজ করে থাকেন আবার অনেকে রিক্সা, জিএনজি, অটোরিক্স মিশুক চালিয়ে উপজেলার রন্দ্রে রন্দ্রে ঘুরে বেড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০৯ ও ১৬ সালে চাষির হাঠে হিজবুত তাওহিদের সদস্যরা গ্রামবাসীর উপরে হামলা করার পূর্বে এই ধরনের আলামত লক্ষ করা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে হিজবুত তাওহিদের এমাম সেলিমের ছোটভাই মহিন উদ্দিন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সম্পাদক মেহরাব হোসেন ভুট্টোর সহায়তায় সাহারাপাড় গ্রামের সরকারি দিঘী নাম মাত্র মূল্যে বেনামে লিজ নিয়ে মাছ চাষ করার নামে ঘাটি গেড়ে সেখানে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালায়। এনিয়ে স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও তাদের অত্যাচার নীপিড়নের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি।
গত (২৮মার্চ ২০২০ইং) চাষিরহাটের কাবিলপুর গ্রামে হিজবুত তাওহিদের সদস্যরা সিএনজিযোগে মাদকের চালান নিয়ে যাওয়ার সময় এক বৃদ্ধকে ধাক্কা মেরে চলে যায়। এঘটনায় প্রতিবাদ করলে হিজবুত তাওহিদের সন্ত্রাসীরা হঠাৎ কাবিলপুর গ্রামে ঢুকে মসজিদ এবং নামাজরত মুসল্লিদের উপর হামলা চালায়। এসময় গণপিটুনিতে একজন নিহত হয়।
এঘটনার জের ধরে গত (২১ এপ্রিল ২০২০) মহিন উদ্দিন ও মেহরাব হোসেন ভুট্ট হিজবুত তাওহীদের সদস্যদের নিয়ে কাবিলপুর গ্রামের হাজী মার্কেটে হামলা ও কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে মুদি দোকানি রাহাত হোসেন(২১) ঘটনাস্থলে আসলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে হত্যা করে।
হিজবুত তাওহীদের এমাম সেলিমের মোবাইলফোনে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করলেও কেন্দ্রীয় হিজবুত তাওহীদের যুগ্ন দপ্তর সম্পাদক মোখলেছুর রহমান সুমন রিসিভ করে উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলো অস্বীকার করেন।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি আব্দুস সামাদ জানান, একটি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় হিজবুত তাওহীদ এমাম সেলিমের ভাই মহিন উদ্দিন প্রধান আসামি হয়ে কারাগারে রয়েছে। তার আরো তিন ভাই মামলার আসামী। আর অন্য একটি হত্যা মামলার তদন্ত চলছে। বর্তমানে যদি তারা বিরোধ করার বিষয়ে কোন পরিকল্পনা করে তা খতিয়ে দেখা হবে।
‘অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি’
অবশেষে ঢাকায় হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি। টানা একমাস দাবদাহের......বিস্তারিত