নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বেসরকারি বিশ্ববদ্যিালয়ের এক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বিয়ে, আটকে রেখে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামী মোর্শেদ শাহরিয়ারকে নিয়ে মাসিক আইনশৃংখলা সভা করেছেন জেলা প্রশাসক।
গতকাল ০৯ জুলাই নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের সভাপতিত্বে আগস্ট ২০২০ মাসের জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, টাস্কফোর্স চোরাচালান আঞ্চলিক কমিটি, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও প্রচারণা কমিটি ও জেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির মাসিক সভা জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
এমন এক সভায় সাংবাদিক নামধারী, একাধিক নারীকে বিয়ের নামে নির্যাতনকারী ও ২ মাস পূর্বে এক নারী নির্যাতনকারি মামলার সদ্য জামিনপ্রাপ্ত আসামি সাত জন স্ত্রীর স্বামী মোর্শেদ শাহরিয়ার কিভাবে উক্ত মিটিং এ ছিলেন তা নিয়ে নরসিংদীতে চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। পুরো জেলা জুড়ে এই ধর্ষক নিয়ে আলোচনায় চাউর ছিল বেশ। জেলা প্রশাসকের এমন জ্ঞানহীন কান্ড নিয়েও আলোচনার কমতি ছিল না নরসিংদী শহরে।
মোর্শেদ শাহরিয়ার একজন নারী নির্যাতনকারী হিসেবে বেশ আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তি বহুবিবাহ এবং একাধিক নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ও মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একের পর এক অপকর্ম করাই যার নেশা সেই মোর্শেদ কে জেলা আইনশৃঙ্খলারক্ষার জুম কনফারেন্সে সংযুক্ত করায় বইছে সমালোচনার ঝড়।
সম্প্রতি এক কলেজ ছাত্রীকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে নির্যাতিতা ওই ছাত্রী খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা এখনো আদালতে বিচারাধীন।
ধর্ষণের শিকার কলেজ ছাত্রী জানান, আমার বাবা ছিলেন একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতাম। বাবার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে আমি ডাক্তার হবো।
আইন বিভাগের এ শিক্ষার্থী বলেন, ভিকারুননিসা স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম কিন্তু ভর্তি হওয়ার আগেই বাবার বদলির আদেশ। চলে আসি নরসিংদীতে। ভর্তি হলাম নরসিংদী আইডিয়াল স্কুলে। তার কিছুদিন পরই বাবা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তখন আমার বয়স ৫ বছর। শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। আইডিয়াল স্কুলে ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়াশুনা করি। ক্লাস ফাইভের মডেল টেস্টে পুরো মনোহরদী থানা থেকে আমি প্রথম হই। স্কুলে সর্বোচ্চ নাম্বার আমিই পেতাম। তারপর নরসিংদীর ব্রাক্ষন্দী বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম।
আমি ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল ছিলাম। ক্লাস নাইন থেকে টিউশনি শুরু করি। টিউশনির পাশাপাশি স্কুল, কোচিংয়ে ইংরেজী আর গনিতের ক্লাস নিতাম। স্কুল লাইফ থেকেই স্বপ্ন ছিল ম্যাজিস্ট্রেট হবার। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হলাম।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অভাব অনটনের কারণে যখন লেখাপড়ার খরচ যোগাতে পারছিলাম না তখন জবের পিছনে ছুটলাম। পরিচিত সবার কাছে জবের জন্যে সাহায্য চেয়েও পাইনি।২০১৭ সালে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠান নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়ার।একটু আস্থা নিয়ে ওনার রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করি। এ পেশার প্রতি ছিলো সম্মান আর ভরসা। অঘাত বিশ্বাস ও সম্মান এখনো এই পেশার প্রতি আছে। আমার লেখাপড়ার খরচ মিটানোর জন্য আমার একটা জব প্রয়োজন কথাগুলো ওনাকে জানালাম। তার কাছে জবের জন্য একটু সহযোগীতা চাই। আমার বাবার বয়সী মোর্শেদ শাহরিয়ার আমার এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমার জীবনটা শেষ করে দিল। এ ব্যাপারে ঢাকার খিঁলগাও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পর্ণোগ্রাফী আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত ০৫/০৬/২০ তারিখে মামলা রেকর্ড হয়েছে। আমি এই জঘন্য নরপিশাচের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মতামত দিতে রাজি হননি।
‘পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু’
রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।......বিস্তারিত