নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ৭ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। সারাদেশে ৪৮৬টি ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজনের নামে এই লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। সংস্থার পরিচালক (তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ-আইইএম) ড. আশরাফুন্নেছা ও তার নিকট আত্মীয়ের প্রতিষ্ঠান রুহী এন্টারপ্রাইউজ ও সুকর্ণ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগে সত্যতাও মিলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ পাওয়ার পর ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কারওয়ান বাজারে অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
এর পরপরই আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানে নাছে দুদক। অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েই ‘সুকর্ন ইন্টারন্যাশনাল’-এর স্বত্বাধিকারী ফাইজুল হককে গত ২৬ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংস্থার উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তবে, তলবের পরও দুদকে হাজির হননি মেসার্স রুহী এন্টারপ্রাইজের মালিক মোশতাক আহমেদ রুহী।
দুদক-সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই ড. আশরাফুন্নেছাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের তলব করা হবে। জানতে চাইলে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দুদকের অভিযানের সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্র পরীক্ষা করা হয়। এই সময় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ‘আইইএম ইউনিটে’র ৪৮৬টি কর্মশালা, ক্যাম্পেইন ও প্রশিক্ষণের টাকা আত্মসাতের প্রাথামিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘‘আত্মসাতের সঙ্গে ‘রূহী এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘সুকর্ন এন্টারপ্রাইজ’-এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।’’
দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘কর্মশালা না করে ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম শাখার পরিচালকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। অনুসন্ধান শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, সম্প্রতি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠিতে চার ধরনের নথিপত্র তলব করে দুদক। ইতোমধ্যে বেশকিছু নথি দুদকে পৌঁছেছে।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক-সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিট ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের নামে ভাউচার করে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে অধিদপ্তরের ‘আইইএম ইউনিটে’র UNFPA খাতে বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কোনো কাজ না করেই ওই টাকা অগ্রণী ব্যাংকের ওয়াসা ভবন শাখা থেকে তোলা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩৯টি কোটেশনের বিল দেওয়া হয়েছে। যার পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওই বছর ‘রূহী এন্টারপ্রাইজ’ কোনো কাজ না করে ৮৫ লাখ টাকার বিল তোলে। একইভাবে ‘সুকর্ন এন্টারপ্রাইজ’কে ১ কোটি টাকার কার্যাদেশ দিয়ে বিল তোলা হয়েছে। এভাবে এই দুই প্রতিষ্ঠানের নামে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা উত্তরা ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখার মাধ্যমে তোলা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (আইইএম) দপ্তরের অফিসিয়াল ফোনে করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
‘কুষ্টিয়ায় চায়ের দোকানে দুজনকে গুলি, আওয়ামী লীগ নেতাসহ আটক ২’
কুষ্টিয়ার মিরপুরে আওয়ামী লীগ নেতার গুলিতে দুজন আহত হয়েছে বলে......বিস্তারিত