স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার জেলা সদরের অতি প্রাচীন মন্তাজ উদ্দিন মিয়া জামে মসজিদের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত ও মূল্যমান জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। মসজিদ কমিটির সাবেক সেক্রেটারী এম এ বশির মাস্টার এর বিরুদ্ধে টাকা ও জমি তছরুপের এমন অভিযোগে মুসল্লি ও এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সাবেক সেক্রেটারী এম এ বশির মাস্টার এর বিরুদ্ধে টাকা ও ৬৩ শতাংশ জমি আত্মসাতের ঘটনায় কমিটির বর্তমান সেক্রেটারী জামাল উদ্দিন মিয়া ভোলার জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পুলিশ সুপার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক সেক্রেটারী এম এ বশির মাস্টার পৌরসভাধীন ৮ ওয়ার্ডস্থ পৌর কাঁঠালী এলাকায় অবস্থিত মন্তাজ উদ্দিন মিয়া জামে মসজিদ কমিটি ৪৫ বছর ধরে সম্পাদক পদ ধরে রাখেন। ওই সময়ের মধ্যে তিনি মসজিদে নামে রক্ষিত প্রায় ৩০ শতাংশ জমি স্ত্রী ফাতেমা বেগমের নামে মাঠ জরিপে রেকর্ড করিয়ে নেন। নিজ বসত বাড়ীর সাথে দেয়াল দিয়ে ঘেরাও করে ওই জমি তিনি এখনও দখলে রাখেন। তাছাড়া মসজিদের জমি বিক্রি তিনি ৭৬ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন।
লিখিত ওই অভিযোগে আরও বলা হয় বর্তমান সেক্রেটারী জামাল উদ্দিন ২০১৬ ইং সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর সাবেক সেক্রেটারী এম এ বশির মাস্টার এর কাছে কমিটির লোকজন নিয়ে বহুবার আয়-ব্যয় সহ মসজিদের সব ধরনের হিসাব নিকাশ চাইলে ও তিনি তা দেননি। বরং কমিটির লোকদের সাথে তিনি অসৌজন্য আচরণ করেছেন।
মসজিদ কমিটির সম্পাদক জামাল উদ্দিন মিয়া গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আর বলেন, মন্তাজ উদ্দিন মিয়া জামে মসজিদে সমস্ত জমি তার বাবা মরহুম কাবিল মিয়া ও তার চাচাদের দানকৃত সম্পত্তি। কিন্তু এম এ বশির মাস্টার নিজের খেয়াল খুশিমত ওই জমি শিল্পপতি নিজামউদ্দিন আহাম্মেদ, আনন্দ বেকারীর মালিক মহিউদ্দিন মিয়া, মরহুম আবদুল আলী সিকদার, আবদুর রব মিয়া, শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী মঞ্জুর আলমের কাছে বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
তিনি দাবী করেন ভোলার বহু জড়াজীর্ণ মসজিদ নিজেদের ফান্ড না থাকা সত্তে¡ও সেগুলো পাকা দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা হিসাবে নির্মিত হয়েছে। কিন্তু এ মসজিদের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও নগদ টাকা থাকা সত্তে¡ও এটির কোন উন্নতি দীর্ঘ ৬০ বছরেও হয়নি। আর এটি একমাত্র বশির মাস্টার এর দুর্নীতির কারণে সম্ভব হয়নি। তাই বর্তমান কমিটি অবহেলিত এই মসজিদটির উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছেন। সে কারণে বশির মাস্টার এর কাছে মসজিদের গচ্ছিত ওই টাকা এবং জমি উদ্ধার করা খুবই জরুরী বলে তিনি মনে করছেন।
এদিকে এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত বশির মাস্টার এর সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে কোন প্রকার সদুত্তর দিতে পারেন নি।
সূত্র মতে, এম এ বশির ভোলা আবদুর রব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ও মন্তাজ উদ্দিন মিয়া জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। নিজ গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় তিনি প্রধান আসামী হিসেবে জেল খাটেন। এলাকার লোকজন তার বিরুদ্ধে বহু অপরাধের ফিরিস্থি তুলে ধরেন। তবে তিনি এসব অপরাধের অভিযোগকে অবান্তর ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবী করেন।
বর্তমানে মসজিদের জমি ও টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনার ফলে যেকোন মূহুর্তে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ফলে বিষয়টির সুরাহা করা খুবই জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায় অনাকাঙ্কিত যেকোন ঘটনার দায়ভার কে নেবেন এমন প্রশ্ন এখন সকলের মুখে মুখে।
‘অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি’
অবশেষে ঢাকায় হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি। টানা একমাস দাবদাহের......বিস্তারিত