TadantaChitra.Com | logo

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কারারুদ্ধ জিয়ার পড়ে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন- ড্যাব

প্রকাশিত : জুন ১০, ২০১৮, ১৯:৪৯

কারারুদ্ধ জিয়ার পড়ে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন- ড্যাব

ডক্টরস এসোসিশেন অব বাংলাদেশ, ড্যাব কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের পক্ষে সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এ কে এম আজিজুল হক ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন এক যৌথ বিবৃতিতে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ২০ দলীয় জোটের প্রধান গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র সুচিকিৎসা নিয়ে সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষের আচরণে উদ্বিগ্ন ও তীব্রনিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে। অসুস্থ খালেদা জিয়া’র প্রতি সরকারের এ আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয় ও গ্রহীত অপরাধ। গত ৫জুন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন এবং ৫ থেকে ৭ মিনিট অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ গতকাল তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, তাঁর মাইল্ড স্ট্রোক হয়েছিল যা পরবর্তীতে মরাত্মক পরিণতির দিকে যেতে পারে। তাই বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর জন্য সকল সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম লিখিত পত্র পেশ করেছেন।

বেগম খালেদা জিয়াকে প্রায় ৪ মাস আগে দাবীকৃত মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, প্রহসনমূলক ও প্রকৃত বাস্তবতায় সাজাপ্রাপ্তের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণহীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া কোন সাধারণ ব্যক্তি নন। তিনি বাংলাদেশের ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং গণতন্ত্রের ইতিহাস ও ভোটের রাজনীতিতে জনপ্রিয়তায় বিশ্ব ইতিহাসে ক্রমাগত পরাজয়হীন সর্বোচ্চ ২৩টি আসনে বিজয়ের অনন্যদৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী, বাংলাদেশের গণমানুষের অবিসম্বাদিত নেত্রী ও দেশনেত্রী উপাধিপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একজন অনন্য ও একনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। পরিত্যক্ত ও যে কোন মানে বসবাসের অযোগ্য কনসানট্রেশন ক্যাম্পের সাথে তুলনীয় নির্জন কারাগারে তিনি যে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তাঁর প্রতি ইতোমধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে বিশ্ব বাসীর দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে এবং একে এক গভীর ও সুদূর প্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসাবে পরিগণিত করছে। বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। বয়সজনিত নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত একজন বর্ষিয়ান নারীর এই নির্জন মানবেতর করাবাস স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবন-যাপনের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে তা’ শুরু থেকেই সাধারণ মানুষকেও গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল। তাঁর ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ, স্বায়ু বৈকল্য, কিডনী ও মুত্রথলির সংক্রমন, হাঁটু ও সন্ধির প্রদাহসহ নানা রোগের যে একান্ত পরিচর্যা প্রয়োজন ছিল এই নির্জন, সূর্যালোকহীন, স্যাঁতসে্যঁতে পরিত্যক্ত, পোকা-মাকড় বিচরিত কারাগারে এই ধরণের (চিকিৎসকদের পরিভাষায়) একজন বিশেষ পরিচর্যা সাপেক্ষ রোগী এর সেবা প্রদান একরকম অসম্ভব।

চিকিৎসক হিসাবে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিচর্যা বিষয়ে ইতোপূর্বে সংবাদ মাধ্যমের বরাতে সংশ্লিষ্ট সকলের এই গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করেন ডাক্তারগন। দুর্ভাগ্য যে, কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব আরোপ না করে গা-ছাড়া আচরন প্রদর্শন করে আসছেন যা অবহেলার শামিল হয়ে উঠেছে বলেও দাবী করেন ড্যাব। চিকিৎসা ও যথাযথ পরিচর্যার অভাবে এমন একজন গুরুতর অসুস্থ রোগীর সাধারণ পরিণতিতে যা হবার বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। গত ৫ জুন মঙ্গলবার তিনি প্রায় তিন সপ্তাহ জ্বরে ভোগা অবস্থায় হঠাৎ করে জ্ঞান হারান ও মাটিতে পড়ে যান। তাঁর অন্যান্য রোগ-উপসর্গেরও অবনতি ঘটেছে। তিনি প্রবল ব্যথা ও ভারসাম্যহীনতা আক্রান্ত হয়ে ক্রমশঃ চলৎ-শক্তি হারিয়ে ফেলছেন। ফলে তিনি এখন আর নির্দিষ্ট সাক্ষাৎকার কক্ষে এসে আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করতেও পারছেন না। দিনের পর দিন তিনি বিদ্যুৎহীন পরিবেশে নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন, পোকা-মাকড়ের কামড়ে যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েছেন। তিনি পুষ্টিকর খাবারের অভাবে দুর্বল ও পুষ্টিহীন হয়ে পড়েছেন। বিষয়গুলো তাঁর সাথে সম্প্রতি সাক্ষাৎ করে আসা পারিবারিক সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সৌভাগ্যবশত এ যাত্রায় তিনি মস্তিষ্ক, উরুসন্ধি ও মেরুদন্ডের ভয়ংকর আঘাত এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মত প্রাণনাশী জটিলতা থেকে সামন্যর জন্যে রক্ষা পেয়েছেন।

তারা আরো বলেন, এমন একটি আশংকা বহু আগেই করা হয়েছিল ও সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। কারা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবজ্ঞায় এখন তা’ বাস্তবে পরিণত হল। আমরা আরও আশংকা ব্যক্ত করেছিলাম যে এ ধরণের বিপর্যয় বেগম খালেদা জিয়ার অন্ধত্ব ও নানা ভাবে পঙ্গুত্ববরণসহ জীবনের প্রতি হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। এই ঘটনা কারা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয় অবস্থা সে পরিণতির ঝুঁকিকে আরও সম্ভাব্য করে তুলেছে। বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত করে যে কারা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাঁর যথাযথ চিকিৎসা ও পরিচর্যা বিষয়ে যুগপৎ উদাসীন ও অপারগ। এ ক্ষেত্রে আইনের বিধানের আনুকূল্য গ্রহণ করে মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচরাধীন হিসাবে তাঁর জামিনের ব্যবস্থা করে তাঁর চিকিৎসার বিষয়টিকে নিজের উপর ছেড়ে দিয়ে আইনের শাসনে আস্থা ফিরিয়ে আনা ও মানবিক আচরণ প্রদর্শনের যে বিরল সময় এখন উপস্থিত হয়েছে আমরা বিশাস করতে চাই সরকার তার সুযোগ নিয়ে রাজনীতিতে প্রতিহিংসা বর্জন ও সৌজন্য প্রদর্শণের কৃষ্টি সংহত করবে। একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও দেশবরেণ্য, জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এই অসহায় ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা দেশ ও বিশ^ বাসীকে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করছে ও জনমনে আতঙ্ক জন্ম দিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক অপশাসনের ইঙ্গিত সুদৃঢ় করছে। জনগন যথার্থই বিশ্বাস করে যে গণতন্ত্র ছাড়া স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয় না। গণতন্ত্রের শত্রু, স্বাধীনতারও শত্রু। দেশবাসী ও বিশ্ববাসী এই অপার সম্ভবনার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ দেখতে চায়। আমরা আশা করি সরকার বিষয়টিতে সচেতন হবেন এবং অনতিবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকারকেই বহন করতে হবে।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।