
কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাসহ তাদের এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক কলেজছাত্রী। তার অভিযোগ, আগের স্ত্রী আছে এমন তথ্য গোপন করে বিয়ে, বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক মেলামেশা, একান্ত মুহূর্তগুলোর ভিডিও ধারণ এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়েছে।
রোববার কিশোরগঞ্জের এক নম্বর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আশিকুর রহমানের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে বিচারক সদর মডেল থানাকে মামলাটি এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই তরুণী জেলা শহরের একটি সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
অভিযুক্তরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন, তার বড়ভাই যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন মোল্লা বাবুল ও তাদের ভাগ্নে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাজমুল হোসেন হিরা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই কলেজছাত্রীর তালাক হওয়ার পর হীরা প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকেন। এতে রাজি না হলে হুমকিও দেওয়া হয়। পরে প্রস্তাব মানতে বাধ্য হন। এরপর বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্কও করেন হীরা। এসময় কৌশলে এসবের ভিডিও এবং স্থির চিত্র ধারণ করে রাখেন। পরে ভুক্তভোগী বিয়ের জন্য চাপ দিলে গত বছর আট জুন কাজী অফিসে নিবন্ধনের মাধ্যমে তারা বিয়ে করেন।
কিন্তু ভুক্তভোগীকে কাবিননামা দেওয়া হয়নি। তরুণী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন হীরা বিবাহিত। প্রথম স্ত্রী সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাদের দুটি সন্তান হয়েছিল, মারা গেছে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী হীরাকে মৌখিক তালাক দিয়ে চলে যান। কিন্তু সোস্যালে গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আবার মেলামেশায় বাধ্য এবং এসবের ভিডিও দৃশ্য ধারণ করা হয়। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী এসব ঘটনা ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন ও তার বড়ভাই বাবুলকে জানালে তারাও উল্টো হুমকি দেন। হীরা ‘আপত্তিকর’ ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে দুই দফায় পাঁচ লাখ টাকা আদায় করেন বলেও অভিযোগ করা হয়। ছাত্রলীগ সভাপতি সুমনও একাধিক দামি মোবাইল ফোন আদায় নেন। সুমনের বড় ভাই বাবুলও তিন লাখ টাকা নেন। এরপরও তারা ভিডিও সোস্যালে গোপন ভিডিও ছেড়ে দেন।
কিশোরগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো আদেশ পাই নাই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের ভিডিও আগেই সোস্যালে কেউ প্রকাশ করেছিল।
গত বছর ভাগনে হীরা সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ বিষয়ে একটি মামলা করেন। এতে স্ত্রীকে সাক্ষী করেছিলেন। আর আসামি করা হয়েছিল অজ্ঞাতদের। সমুন বলেন, এখনও হীরার সঙ্গে স্ত্রীর তালাক হয়নি, তারা স্বামী-স্ত্রী। এখন অহেতুক হয়রানির জন্য মামলা করা হয়েছে।
