
মোঃ জিয়াউর রহমানঃ পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির (IITM) গবেষকদের একটি সাম্প্রতিক গবেষণা পশ্চিমবঙ্গের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি নিয়ে কিছু আকর্ষণীয় কথাবার্তা বলেছেন। প্রাত্যহিক জীবনের অন্যান্য ব্যাপার গুলোর মতই, আগামী পাঁচ দশক জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে ভারতের সৌর এবং বায়ুশক্তির সম্ভাবনা কি হতে পারে ?
পশ্চিমবঙ্গের রিনিউয়াল এনার্জি পলিসি তৈরি হয়েছিল ২০১২ সালে। তখন ২০২২ সালের মধ্যে সৌরশক্তি ক্ষমতাসম্পন্ন রাজ্য হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল সরকার। তবে ১৭৬ মেগাওয়াটের কাছাকাছি বিদ্যুৎ এখনও পর্যন্ত উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩৫ শতাংশ। একইভাবে বায়ুশক্তির জন্যরাজ্য ২০২২ সালের মধ্যে ৪৫০ মেগাওয়াটের সম্ভাবনা চিহ্নিত করেছিল, যদিও MNRE-এর তথ্য অনুসারে এইমুহূর্তে বিদ্যুৎ শক্তির উৎপাদন রাজ্যের শূন্য। তবে সংশ্লিষ্ট দফতরের তথ্য অনুযায়ী এখন উৎপাদিত হয় ২.৫ মেগাওয়াট।
‘Analysis of future wind and solar potential over India using climate models’- শীর্ষক এই গবেষণাপত্রটি Current Science নামক জানালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। Ministry of Earth Sciences অন্তর্গত IITM Pune-এর পাশাপাশি Centre For Prototype Climate Modelling, New York University, Abu Dhabi, UAE-এর তিন গবেষক টি এস আনন্দ, দীপক গোপালাকৃষ্ণান এবং পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় এই গবেষণাপত্রটি লিখেছেন।
গবেষকরা বিভিন্ন অত্যাধুনিক জলবায়ু মডেল ব্যবহার করে গবেষণাটি চালিয়েছেন, যার দ্বারা তৈরি করা হয়েছে আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (IPCC), বায়ুএবং সৌর শক্তির বিশ্লেষণ করে ভারতীয় উপমহাদেশের। ভবিষ্যৎ কি তা বলেছেন (পরবর্তী ৪০ বছর)। পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের শিল্পকে অবশ্যই পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং আমাদের প্রযুক্তিকে অবশ্যই গতিশীল রাখতে হবে। ভবিষ্যদ্বাণীগুলিকে সত্য হিসাবে নেওয়া উচিত নয়, তবে সম্ভাবনা হিসাবে সম্ভাবনা হিসেবে উচিত। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে রিনিউয়াল এনার্জি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই গবেষণাপত্রে এই ধরনের পরিস্থিতি জন্য কি প্রস্তুত হওয়া এবং মোকাবিলা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।”
২০৩০ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রিনিউয়াল এনার্জির ক্ষেত্রে বর্তমানের ৫.৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে কুড়ি শতাংশ পর্যন্ত দা রেসিডেন্সিয়াল রুফট অফ সোলার পলিসির অধীনে, যে কোনও বড় আবাসন যাদের ৫০ কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সৌর বিদ্যুৎ বাধ্যতামূলক করতে হবে। এবং রাজ্যের বিদ্যুতের মোট চাহিদার ১.৫ শতাংশ সৌর বিদ্যুৎ থেকেই পূরণ করতে হবে। রাজ্যে এই মুহূর্তে ১৯৯৪ টি স্কুলের ছাদে সোলার প্যানেল রয়েছে। আরও ১৮৯০টি স্কুলে প্যানেল লাগানোর কাজ চলছে।
পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, “ভবিষ্যতে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা কবেআসবে। সেই পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য ভালোমতো প্রস্তুতি নেওয়াটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে হওয়াবিদ্যুৎ-এর সম্ভাবনাও উত্তর-পূর্ব ভারতে ততো উজ্জ্বল নয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল গুলিতে হওয়া বিদ্যুতের সম্ভাবনা বেশ ভাল।”
