
হামাস যদি তাদের কব্জায় থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়, কেবল তাহলেই গাজা ইস্যুতে শান্তি চুক্তিতে আসার ব্যাপারটি বিবেচনা করবে ইসরায়েল। যদি তা না হয়—গাজায় অভিযান থামবে না কোনো চুক্তিও হবে না। শুক্রবার (৩১ মে) দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক বিবৃতিতে হামাসের হাই কমান্ড বলেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আর কোনো আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তারা। তবে ইসরায়েল যদি গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করে— তাহলে সব জিম্মিকে ছেড়ে দেয়ার পাশাপাশি স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত’ রয়েছে গোষ্ঠীটি।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী কয়েক দিনের তীব্র লড়াই এবং দুই শতাধিক বিমান হামলার পর উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় অভিযান শেষ করেছে। তবে তারা বলছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা রাফাহ শহরের কেন্দ্রস্থলে রকেট লঞ্চার এবং অন্যান্য অস্ত্রের পাশাপাশি হামাসের টানেল শ্যাফ্ট খুঁজে পেয়েছে। অপারেশন চলাকালীন, সৈন্যরা ২৫০ জিম্মির মধ্যে সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তাদেরকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল থেকে বন্দী করে নিয়ে যায় বলে দাবি করে দখলকার বাহিনী।
অন্যদিকে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে থেকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লাখ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি শহরটিতে অবস্থান করছেন। গাজার বিভিন্ন এলাকায় গত প্রায় আটমাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে রাফায় এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন এই ফিলিস্তিনিরা। সম্প্রতি জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আদেশ দিয়ে রায় দিয়েছে; কিন্তু সেই রায় উপেক্ষা করে সেখানে সেনাঅভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। কিছুদিন আগে রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের সবাই সাধারণ বেসামরিক। ওই ঘটনার পর থেকে বিশ্বজুড়ে যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা চলছে, সে সময়ই গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল হামাস-ইসরায়েল। হামাস চাইছে আগে শান্তি চুক্তি, পরে জিম্মিদের মুক্তি। অন্যদিকে ইসরায়েল চাইছে আগে জিম্মিদের মুক্তি, পরে শান্তি চুক্তি।
