তিনি নিজেই সেজেছেন মহাপরিচালক, ফায়ার সার্ভিসের কেউটে আওয়ামী দোষর কে এই শামস আরমান

লেখক:
প্রকাশ: ৫ মাস আগে
Oplus_131072

 

এইচ এম হাকিম : ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে বারংবার ঘুরে ফিরে একটি নাম উঠে আসে ডিএডি শামস আরমান।
ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তারা যেনো তার কেনা গোলাম, তার ইশারাতে চলছে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ, তার বাহিরে কেউ যাওয়ার চেষ্টা করলে পরতে হয় সে সকল কর্মকর্তাদের মহা বিপদে। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে এক মন্ত্রীর আত্নীয় পরিচয়ে অধিদপ্তরটিতে চালিয়েছে সকল প্রকারের তান্ডব, যা কিনা মহাপরিচালক পর্যন্ত তার কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে হতো,
স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সময়েও তিনি একইভাবে অধিপত্য বজায় রেখেছেন। বিগত “ সরকারের” আমলে যেমন অতি-আস্থাভাজন ছিলেন তৎকালীন মহাপরিচালকের, ঠিক তেমনিভাবে বর্তমান ডিজিরও অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

শামস আরমানের আচরণ দেখে অনেকেই কটাক্ষ করে বলেন, “তিনি নিজেই যেন মহাপরিচালক!” বাস্তবেও তার স্বেচ্ছাচারিতার ধরন অনেকটা সেরকমই। অধিদপ্তরের নিয়মনীতি, প্রশাসনিক কার্যক্রম এমনকি বদলির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে তার হস্তক্ষেপ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

বদলি বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দখলদারিত্ব: ফায়ার সার্ভিসে নিয়ম অনুযায়ী একই স্টেশনে তিন বছরের বেশি সময় কেউ কর্মরত থাকতে পারে না। এই নীতির আড়ালে তৈরি হয়েছে বদলি বাণিজ্যের সুবর্ণ ক্ষেত্র। অভিযোগ আছে, শামস আরমান বদলি সংক্রান্ত কাজে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। প্রকৃতপক্ষে বদলি প্রশাসন শাখার অধীনে হলেও তিনি ডিজির পিএস পরিচয়ে নিজের লোক দিয়ে কমিটি গঠন করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

অপারেশনের কাজ বাদ দিয়ে ডিএডিদের অফিসে বসানো: ফায়ার সার্ভিসের মূল কাজ হলো আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কার্যক্রম অর্থাৎ অপারেশন। কিন্তু শামস আরমানের নেতৃত্বে বহু দক্ষ ডিএডিকে মাঠের কাজ থেকে তুলে এনে দপ্তরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এতে অপারেশনাল দক্ষতা যেমন কমেছে, তেমনি মাঠ পর্যায়ে অফিসারদের মধ্যে হতাশা ও বিভক্তি তৈরি হয়েছে।

এডি ও ডিএডিদের পরিদর্শন চালু: নতুন গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি: ফায়ার সেফটি প্ল্যান এবং কার্যকরী সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে নতুনভাবে এডি ও ডিএডিদের পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পূর্বে যা ছিল না। ফলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবমূল্যায়ন করে সুবিধাভোগীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

রিপোর্ট ও তদন্তে হস্তক্ষেপ: ফায়ার দুর্ঘটনার রিপোর্ট কিংবা তদন্তে শামস আরমানের হস্তক্ষেপ বহু পুরনো অভিযোগ। নিজের পছন্দের লোক দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রভাবিত রিপোর্ট তৈরি করা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

প্যাকেজ ও ট্রেনিংয়ে অংশ না নিয়ে অর্থ উত্তোলন: আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হলো শামস আরমান বিভিন্ন প্যাকেজ ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করেও ভুয়া বিল তৈরি করে অর্থ উত্তোলন করেছেন।

বই প্রকাশ ও অডিট আপত্তি: মিরপুর ট্রেনিং কমপ্লেক্সে অবস্থানকালে ডিপার্টমেন্টের কিছু প্রকাশনার পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিল করেন শামস আরমান। সরকারি অডিট টিম এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিলের অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

অব্যাহত দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন: এই প্রেক্ষাপটে ফায়ার সার্ভিসের অভ্যন্তরে ও বাইরে নানা প্রশ্ন উঠছে একজন কর্মকর্তা কীভাবে এতদিন যাবৎ অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রভাব খাটিয়ে বহাল তবিয়তে থাকেন? সরকারি দপ্তরের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় যেখানে জবাবদিহিতার দাবি উঠে, সেখানে শামস আরমানের এই অবস্থান কি প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়?

শামস আরমানকে নিয়ে জুলাই আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট মহল প্রশ্ন তুলছে এমন একজন স্বৈরতান্ত্রিক কর্মকর্তাকে কবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে?

সংবাদটি শেয়ার করুন...