নিউইয়র্কের ফ্ল্যাটে ফাহিম সালেহ হত্যা: ঘাতক হাসপিলের বিরুদ্ধে আদালতের চূড়ান্ত রায়

লেখক: Dhaka Bangladesh
প্রকাশ: ১ বছর আগে

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে রাইড শেয়ারিং অ্যাপস পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহ (৩৩) হত্যাকাণ্ডে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছর বয়সী টাইরেস হাসপিলকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি আদালতের বিচারক তাকে এ সাজা প্রদান করেন।

২০২০ সালের ১৩ জুলাই নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের লোয়ার ইস্ট সাইডের হিউস্টন স্ট্রিটে নিজের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে খুন হন ফাহিম সালেহ। সালেহ’র চার লাখ ডলার চুরি করেছিলেন তার ব্যক্তিগত সহকারী হাসপিল। সেই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। অর্থ চুরির ঘটনা লুকাতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হাসপিল। হত্যার পর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে তার দেহ টুকরো টুকরো করেন তিনি।

এই ঘটনার পরপরই হাসপিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। খবর অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক এবিসি নিউজের। ফাহিম সালেহকে নৃশংসভাবে হত্যার পর তার ধড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় টাইরেস হাসপিল আজ ১১ সেপ্টেম্বর জবাবদিহিতার মুখোমুখী হচ্ছেন। তিনি একজন সদয়, উদার এবং সহানুভূতিশীল ব্যক্তি ছিলেন যিনি বিশ্বকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছেন। ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এমনটি বলেছেন।

অ্যাটর্নি আরও বলেন, যদিও আজকের সাজা জনাব সালেহকে ফিরিয়ে আনবে না, আমি আশা করি এটি তার পরিবারকে বিচারের দাবির পরিসমাপ্তি ঘটাবে কারণ তারা তার বেদনাদায়ক পরিণতির জন্য দীর্ঘদিন শোক প্রকাশ করছেন। সেই বছরের ১৩ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে বিচার শুরু হয়। প্রায় চার বছরের শুনানির পর চলতি বছরের ম্যানহাটন সুপ্রিম কোর্টের জুরিবোর্ড হাসপিলকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

আদালতে হাসপিল স্বীকার করেন, তিনি তার প্রেমিকাকে আকৃষ্ট করার জন্য নানা উপহার কিনতে ফাহিমের অর্থ চুরি করেছিলেন। পরে সেই ঘটনা আড়াল করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। তবে বিচারক হাসপিলের এ দাবি নাকচ করে দেন। তিন মাস পর মঙ্গলবার বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়। এদিন আদালতে প্রায় এক ঘণ্টা যুক্তিতর্ক শেষে হাসপিলকে ৫০ বছরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মত সাজা দেয় জুড়ি বোর্ড। তবে পরে ১০ বছর কমিয়ে তাকে ৪০ বছরের সাজা দেয়া হয়।

ফাহিম সালেহ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ও নেপালের জনপ্রিয় রাইড কোম্পানি পাঠাও-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। কোম্পানিটির মূল্য ছিল ১০ কোটি ডলার। ২০১৮ সালে ফাহিম সালেহ নাইজেরিয় মোটরবাইক ট্যাক্সি কোম্পানি গোকাডার সঙ্গে কাজ শুরু করেন, যার লাখ লাখ ডলারের তহবিল ছিল এবং দেশে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।

২০২০ সালে লাগোসের কর্তৃপক্ষ মোটরবাইক ট্যাক্সি নিষিদ্ধ করার পর কোম্পানিটি বড় ধরনের ধাক্কা খায়। ফাহিম কলম্বিয়ার পিক্যাপ নামে আরেকটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করেন। বন্ধুরা তাকে ‘উন্নয়নশীল বিশ্বের ইলন মাস্ক’ বলে ডাকতেন। ওয়ালথামের বেন্টলে ইউনিভার্সিটির স্নাতক ডিগ্রিধারী এই তরুণ কলম্বিয়া এবং বাংলাদেশে রাইড-শেয়ারিং ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন...

  • আদালতের চূড়ান্ত রায়
  • ঘাতক হাসপিল
  • ফাহিম সালেহ হত্যা