
গত ৩ মে নিউজ পোর্টাল তদন্ত চিত্রে ‘ইউপি চেয়ারম্যান ও আ‘লীগ সম্পাদকের লাগামহীন কান্ড’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রওশন খান আইয়ুব এবং হেমনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্পাদক আনিসুর রহমান হীরা। প্রতিবেদনে অর্ধমাতাল চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নামেমাত্র সম্পাদক হিসাবে উল্লেখ করে তাদেরকে জনসমক্ষে হেয় ও প্রতিপন্ন করেছেন। এমনকি খাসজমি পুনরুদ্ধারে সরকারি কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোপালপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি)কে অবুঝ সহকারি কমিশনার হিসাবে ঠাট্রা করে রাষ্ট্রের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের কাজকে বাধা দেয়ার মাধ্যমে ভূমিখেকোদের নির্লজ্জভাবে সমর্থন করা হয়েছে। এমনকি খবরের এক পর্যায়ে এ তিন জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাকে চাঁদাবাজির সাথে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার ইঙ্গিত করে তাদের মানহানি করা হয়েছে।
এ নিউজ পোর্টালটি সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিকতার নুণ্যতম নীতিমালা অনুসরন করেননি। খাস জমি পুনরুদ্ধারে নোটিস জারীর মাধ্যমে সহকারি কমিশনার (ভূমি)এর বিরুদ্ধে তিনলক্ষ টাকা ঘুষ নেয়ার কল্পিত অভিযোগ আনা হয়েছে। এমনকি যাদের বিরুদ্ধে এসব কল্পিত ও মানহানিকর অভিযোগ এনে রিপোর্টটি করা হয়েছে তাদের কারো আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন বক্তব্য নেয়া হয়নি।
এ থেকে বোঝা যায়, সরকারি খাস জমি দখলকারি হক ক্লিনিকের মালিক মোজাম্মেল হককে রক্ষা করার জন্যই নিউজপোর্টালটি হলুদ সাংবাকিতার আশ্রয় নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে বানোয়াট ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হলো, উক্ত মোজম্মেল হক সরকারি খাস পুকুরের পাড় গায়ের জোরে জবরদখল করে বাগান করেছেন। এমনকি খাস জমির অংশ বিশেষ দখল করে তিনি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। পুকুর লীজকারিরা তাকে বার বার তাগিদ দেয়া সত্বেও বেদখল করা অংশ ছেড়ে না দেয়ায় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন গত ২৭ এপ্রিল সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে বিষয়টি তদন্ত এবং ব্যবস্থা নিতে অকূস্থলে পাঠান। তিনি সরকারি খাস জমি দখলে নিয়ে বাগান এবং ক্লিনিকের আঙ্গিনা বাড়ানোর অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান।
তাৎক্ষনিকভাবে জবরদখল করা জমি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ক্লিনিক মালিক মোজাম্মেল হক এসিল্যান্ডের উপস্থিতিতে জবরদখল করা জায়গার বাগান ভেঙ্গে দেন এবং অবশিষ্ট দখলে রাখা জমি ছেড়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেন। কিন্তু নিজের অপরাধ বেমালুম ভুলে গিয়ে মোজাম্মেল হোসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সহকারি কমিশনার(ভূমি) এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করেছেন। আর নিউজ পোর্টাল “তদন্ত চিত্র” সেই আষাঢে গল্প নিউজ আকারে পাবলিশ করেছেন। কেউ তার বাগান ভাংচুর করেনি।
বাগনের লোহার গ্রীল, সিমেন্টের খামও ইট লুট করেনি। গাছপালা কাটা হয়নি। চাঁদাও চায়নি। স্থানীয় প্রশাসন সরকারি খাস জমির দখল ছাড়তে বলায় এবং বাগানের খাসজমি বেহাত হওয়ায় তিনি সকলের বিরুদ্ধেই এক যোগে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন। উপজেলা ভূমি প্রশাসন সরকারি নিয়মে হেমনগর কলেজসহ স্থানীয়দের খাস জমি লীজ দিয়েছেন। সব শর্ত মেনেই লীজকারিরা খাস জমি ভোগ করছেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্যঃ হক ন্যাশনাল ক্লিনিকের সামনের জমিতে গত মাসের ২৭ তারিখের ঘটে যাওয়া ঘটনা ছিল এটি। প্রতিবেদনটি যদিও ছিল অপরিপূর্ন ও অগোছালো, তবুও প্রতিবেদেনর কয়েকটি তথ্য ছিল সত্য ও নির্ভরযোগ্য। টাকা নেওয়ার অংক আমরা লিখে দিলেও প্রতিবাদে সেই টাকার কথা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, নিউজপোর্টালটি হলুদ সাংবাকিতার আশ্রয় নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে বানোয়াট ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবাদকারী জানেন-ই না হলুদ সাংবাদিক বলতে কোন সাংবাদিকই নাই। এই ভাষাটাও সংবাদপত্র পরিপন্থি।
প্রতিবেদনটি প্রকাশ করার আগে হেমনগর ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল খাদেমুল ইসলাম ও স্থানীয় পুলিশ ফাড়ীর ইনচার্জ এর বক্তব্য নাম ইঙ্গিত আলাদা আলাদাভাবে না দিলেও তারা এই প্রতিবেদনের অনেক তথ্যই সঠিক বলেছেন। আমরা স্বীকার করি প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সাধারন সম্পাদকের বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন ছিল। তাদের বক্তব্য না নিয়ে সংবাদটি প্রকাশে ত্রুটি ছিল, তাই আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
প্রশ্ন রয়েছে স্থানীয় ইউএনও আগে কি জানতেন না এই জমির মালিক কে? বা স্থানীয় প্রসাশন কি ফুলের বাগান করার সময় দেখেন নি?? বাগান গড়ে তোলার পর কেন তাদের দুষ্টিতে আসল এটা একটা প্রশ্ন? যাদেরকে নিয়ে সংবাদটি প্রকাশ হয়েছে তাদের সাথে আমাদের ব্যক্তিগত কোন ঝামেলা নাই এবং ভুক্তভোগি বাগানের মালিকের সাথেও সুসম্পর্ক নেই। বক্তব্য না নিয়ে সংবাদটি প্রকাশ করায় ত্রুটি যেমন পরিলক্ষিত তেমনই চেয়ারম্যান ভুক্তভোগি ক্লিনিকের মালিকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আবার তার বক্তব্য ভিডিও করে ইউটিউবে ছেড়ে নিজেকে নির্দোশ প্রমান করতে গিয়েও নিজের অজান্তে টাকা নিয়েছেন তার প্রমাণ রেখেছেন। এমনকি স্থানীয় অনেক লোকই চেয়ারম্যানের অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে। সর্বপরি আমরা প্রকাশিত সংবাদটির জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
