হাইব্রিড এমপি রাজী’র অপকর্মে আ’লীগ কোণঠাসা!

লেখক: সাব এডিটর
প্রকাশ: ৬ years ago

তদন্ত চিত্রঃ  দেবিদ্ধার কুমিল্লা-৪ আসনের স্বতন্ত্র এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। যিনি পরবর্তিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগ দেন। এমপি ফখরুল এর পিতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী। যিনি দেবীদ্বারকে দুই হাতে লুটে-পুটে খেয়েছে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চরম দুর্নাম করেছেন।

প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আজ উপেক্ষিত, নির্যাতিত। লুটপাট, নিয়োগ বানিজ্য, চাঁদাবাজি, মাদকসহ নানান অপকর্মের রাজ্যে পরিনত হয়েছে দেবিদ্বার উপজেলা। জিম্মি হয়ে আছে সাধারন মানুষ। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে দেবিদ্বারের তৃণমুল আওয়ামী লীগ। আর এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের যত উন্নয়ন ম্লান হতে বসেছে।

এমপি ফখরুলের অপকর্মের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও পৌরসভার তৃণমুল আওয়ামী লীগের ঐক্য ফোরাম। তারা এরইমধ্যে এলাকার আওয়ামীলীগের ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

জানা গেছে, দেবিদ্বার উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা সহজ সরল মানুষের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। উপজেলায় টিআর, কাবিখা, এডিবি, এলজিএসপিসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজের বরাদ্দকৃত টাকা ও মালামাল লুটপাট করেছে। যার ফলে দেবিদ্বারের রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। জনমনে এই দুজন পিতা-পুত্রেরের জন্য আওয়ামীলীগের প্রতি সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ, এমপিওভুক্ত করার নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মেধাহীন বা বিএনপি/জামাত-শিবিরের লোকদের নিকট থেকেও চাকরি দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। নিয়মিত লুটপাটে দেবিদ্ধারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন তার টাকা লুটপাটের কারখানা।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘নাইটগার্ড’ নিয়োগ দেয়ার নামে প্রতিজনের কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা এমপি ফখরুল ও পিতা এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী দু’জনে হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশের কনস্টেবল পদে এমপি’র কোটায় নিয়োগ প্রাপ্তদের নিকট হতে কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছে। অনেকে টাকা দিয়ে চাকুরি না পেয়ে এমপি ও তার বাবা এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সীর কাছে ঘুরছে।

জানা গেছে, এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী দেবিদ্ধার এখন মাদক সম্রাজ্য। এই সম্রজ্যের সম্রাট স্বয়ং এমপি রাজী। তিনি মাদক সিন্ডিকেট থেকে প্রতিমাসে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা গ্রহণ করেন। এমন কি খেটে খাওয়া সিএনজি-অটোরিক্সা থেকে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে প্রতিমাসে ৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকেন এমপি ফখরুল ।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার মূখ্য যে উন্নয়ন তা হলো এলজিইউডি’র বিভিন্ন কাজের উন্নয়ন। কিন্তু অত্যন্ত হতাশাজনক হলেও সত্য যে এমপি ফখরুল এলাকার উন্নয়নের জন্য জন্য এলজিইউডি’র সব কাজে তিনি এবং তার বাবা ফখরুল ইসলাম মুন্সীকে কাজের আগেই ২০% টাকা চাঁদা দিতে হয়। এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের চাচা এবং এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সীর ছোট ভাই ‘হংকং বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালে গত উপজেলা নির্বাচনের সময় তাকে রাতারাতি আওয়ামী যুবলীগের নেতা বানিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়। ফলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম সফিকুল আলম কামাল (ভিপি কামাল) নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেন। ভিপি কামাল উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারলে আসনটি তিনি আওয়ামী লীগকে উপহার দিতে পারতেন।

সজীব ওয়াজেদ জয় এমপির খুব কাছের বন্ধু হিসেবে এলাকায় প্রচার করে প্রভাব খাটায়। অথচ বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার পরও দুদক এর চোখ কেন তাকে এড়িয়ে চলছে? নাকি সরকার এবং জনগণের চোখের অন্তরালে নীল খামের চালান হরহামেশাই চলে?

সংবাদটি শেয়ার করুন...