TadantaChitra.Com | logo

১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আইইএম ইউনিট’র সাইদুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি’র অভিযোগ! পর্ব-১

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯, ১৭:১৮

আইইএম ইউনিট’র সাইদুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি’র অভিযোগ! পর্ব-১

নিজস্ব প্রতিবেদক‍ঃ পরিবার পরিকল্পনার মেকানিক (অটো) আইইএম ইউনিট’র সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে ব্যাপক দুর্নীতি’র অভিযোগ করা হয়েছে। সম্প্রতি পরিবার পরিকল্পনার দুই গাড়ী চালক দুদক কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর এই অভিযোগ করেন।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, নিয়মিতভাবে অফিস না করে শুধু মাত্র ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন সাইদুর রহমান।

লিখিত এই অভিযোগে উল্লেখ করেন, সাইদুর রহমান টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার এক হতদরিদ্র ঘরের সন্তান। আইইএম ইউনিটের তৎকালীন একজন পরিচালকের নাতনিকে বিয়ে করে ৮ম শ্রেণী পাশের পর আইইএম ইউনিট প্রকল্পের মেকানিক পদে যোগদান করেন। চাকুরীতে যোগদানের পর তিনি মোহাম্মদপুর এলাকায় এক বস্তিতে বসবাস করতেন। মোহাম্মদপুরে বসবাস কালীন সময়ে সেই বস্তিতে বসবাসরত এক মেয়ে সাথে তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকেই তাকে নিয়ে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জেলায় ঘুওে বেড়াতেন। একদিন সেই মেয়েকে নিয়ে হোটেলে অবস্থান কালে কিছু লোকের কাছে ধরা পরার পর তার সাথে সেই মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়। তার পর বড় বউয়ের পক্ষ থেকে সাইদুরের নামে মামলা করা হলে সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পুলিশ তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করলে তিন মাস জেল খাটার পর অসুস্থ্যতার সার্টিফিকেট দিয়ে অফিস থেকে ছুটি নেন। জেল হাজতে থাকাকালীন সময় কি করে অসুস্তাজনিত ছুটি মঞ্জুর হয় তা তদন্ত করলে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। জেল থেকে বের হয়ে আসার পর বড় বউয়ের সাথে তার সমস্ত জমি লিখে ও মাসে ১৫,০০০ হাজার টাকা দেয়ার শর্তে আপোস রফা হয়। সেসময় থেকে তিনি ছোট বউকে নিয়ে ঢাকার ভাড়া বাসায় থাকেন। আর বড় বউকে মধুপুর রাখেন।

সূত্র জানায়, সাইদুর চাকুরীতে যোগদান করে মেকানিক হিসেবে। তার কাজ প্রতিদিন গাড়ী চেকআপ করা। গাড়ীর সমস্যা হলে তা মেরামত করা। কিন্ত চাকুরীতে যোগদানের পর থেকে কোন দিন সে কোন গাড়ী চেক করা তো দুরের কথা গাড়ী মেরামতের প্রয়োজনীয় যে সকল যন্ত্রপাতি ছিল সেগুলোও বিক্রি করে দেন। গাড়ীর সামান্য ক্রটি দেখা দিলেও গ্যারেজে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিল করেন সাইদুর রহমান।

অভিযোগে বলা হয়, সাইদুর গত ৪-৫ বছরে গাড়ী মেরামত দেখিয়ে আইইএম ইউনিট থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সে গাড়ী মেরামতের কথা বলে শুধু গত দুই বছরেই যে পরিমান দুর্নীতি করেছে তা তদন্ত করলেই দিবলোকের মত সত্য প্রমানিত হয়ে যাবে। গাড়ী মেরামতের নামে সাইদুর খুলনার এভি ভ্যান ঢাকায় এনে প্রায় ৪,০০,০০০/- টাকার বিল উত্তোলন করেছে অথচ গাড়ীটির কোন মেরামতই হয়নি। এছাড়াও কুমিল্লার এভি ভ্যান ঢাকায় এনে মেরামতের জন্য প্রায় ৩,৫০,০০০/-, গোপালগঞ্জের এভি ভ্যান ঢাকায় এনে মেরামতের জন্য ৩,৫০,০০০/- টাকা, কিশোরগঞ্জে এভি ভ্যান ঢাকায় এনে মেরামতের জন্য ৩,৫০,০০০/- টাকা, ময়মনসিংহের এভি ভ্যান ঢাকায় এনে মেরামতের জন্য ৩,০০,০০০/-, বগুড়ার এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকায় এনে ১,৫০,০০০/- টাকা, যশোহরের এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকায় এনে প্রায় ৩,০০,০০০/- টাকা, চট্টগ্রামের এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকায় এনে প্রায় ৪,০০,০০০/-, বান্দরবান এর এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকা এনে প্রায় ৩,৫০,০০০/-, ফেনীর এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকায় এনে প্রায় ৩,০০,০০০/- চট্টগ্রামের এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকায় এনে প্রায় ৪,০০,০০০/-, রাজশাহীর এভি ভ্যান মেরামতের জন্য ঢাকায় এনে প্রায় ৪,০০,০০০/- খরচ করা হলেও কোন একটি গাড়ীই মেরামত করা হয়নি।

এছাড়াও আইইএম ইউনিটের ঢাকা মেট্টো ঘ-২৯৭৭ নং গাড়ী মেরামতের জন্য প্রায় ৮,০০,০০০/-, ঢাকা মেট্টো-চ ৪২৭৩ নং গাড়ী মেরামতের জন্য ৫,০০,০০০/- টাকা, জাস ৪২৫২ নং গাড়ী মেরামতের জন্য ৪,৫০,০০০/- টাকা। ঢাকা মেট্টো-ঝ ০১৬১ নং গাড়ী মেরামতের জন্য প্রায় ৫,০০,০০০/- টাকা, জাস ৪৫৩০ নং গাড়ী মেরামতের জন্য প্রায় ৫,০০,০০০/- টাকা, এভি ভ্যান ঢাকা মেট্টো-শ মেরামতের জন্য প্রায় ৫,০০,০০০/- টাকা, ঢাকা মেট্টো-ঝ গাড়ী মেরামতের জন্য প্রায় ৬,০০,০০০/- খরচ করা হলেও প্রকৃত পক্ষে কোন গাড়ীই মেরামত বা কাজ করেন নি তিনি। তার প্রমান প্রতিটি গাড়ীই বর্তমানে অচল আছে বা কোন মতে চলাচল করছে। এছাড়াও সাইদুর দু-একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গাড়ী মেরামত করেননি। যে প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ী মেরামত করেন সে প্রতিষ্ঠানগুলো সাথে তার গোপন চুক্তি রয়েছে মেরামতের নামে যে বিল আসবে তা থেকে ৯০% টাকা তাকে দিতে হবে।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, গাড়ী মেরামত করতে হলে বিআরটিএর ছাড় পত্র দেয়ার বিধান থাকলেও সাইদুর কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিআরটিএর অনুমোদন ছাড়াই লক্ষ লক্ষ টাকার বিল উত্তোলন করেছে। সাইদুর টেমো থেকে ভূয়া সনদ পত্র সংগ্রহ করে এ সকল কাজ করে আসছে। টেমোর সনদ পত্র গুলো যাচাই করলেই প্রমানিত হবে যে, টেমোর কোন কর্মকর্তার স্বাক্ষর বা সিল নেই। সে নিজেই একটি ভূয়া স্বাক্ষর করে এ সকল সনদ সংগ্রহ করেছে।

অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়, অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা দিয়ে সাইদুরের নামে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় ৮ (আট) কাঠা জমি ক্রয় করে বহুতল ভবন নির্মানের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। সে মাসে বেতন পায় ১২,০০০/- টাকা। ঢাকায় যে বাসায় ভাড়া থাকে উক্ত ফ্লাটটি ৪ (চার) রুমের। বাসা ভাড়া ১৫,০০০/- টাকা। বড় বউকে মাসিক খরচ হিসেবে দিতে হয় ১৫,০০০/- টাকা। ঢাকায় একটি পরিবার সাধারণভাবে চলাচল করলেও মাসে প্রায় ১৫,০০০/- টাকা খরচ করতে হয়। ১২,০০০/- টাকা বেতন পেয়ে ৪৫,০০০/- টাকা খরচ করা হয় এই টাকার উৎস কোথায়?।

জানা গেছে, সাইদুর রহমান আই্ইএম ইউনিটের সকল গাড়ীর তেলের ¯িøপ ইস্যু করেন। গাড়ীতে তেল ব্যবহার না করেই ¯িøপ ইস্যু করে মাসে লক্ষ টাকা উপার্জন করেন। গত ২০১১, ১২ ,১৩ ও ১৪ সালে অধিদপ্তরের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর যে জনবল নিয়োগ প্রদান করা হয় উক্ত নিয়োগের নিয়োগ বানিজ্যের একজন হোতা ছিলেন সাইদুর রহমান। তিনি বর্তমানে চলমান নিয়োগেও মহাপরিচালক ও পরিচালক প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রায় ২০০ লোকের কাছ থেকে ৬,০০,০০০ থেকে ৮,০০,০০০ টাকা করে প্রতি জনের নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছেন। ১৯/০৫/২০১৫ তারিখে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে এ ব্যাপরে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রাত্তন মহাপরিচালকের বাড়ী টাঙ্গাইল হওয়ায় তিনি বলে বেড়াচ্ছেন যে, মহাপরিচালক সাথে তার ব্যাক্তিগত পরিচয় আছে। আমি চাকুরী দিতে পারব ১০০%।

আরো জানা গেছে, ঢাকার মিরপুরে সেকশন-১১, বøক-সি, এভিনিউ-৫, রোড নং-১৫/১, বাসা নং-৮ এ রয়েছে ১০০০ (এক হাজার) স্কয়ার ফিটের একটি বিলাশবহুল ফ্ল্যাট, যার বর্তমান বাজার মুল্য প্রায় ১,০০,০০,০০০/- (এক কোটি) টাকা, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার হাসপাতালর পাশে ০৮ (আট) কাঠা জমি কিনে গড়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি, যার বর্তমান বাজার মূল্য হবে ২,০০,০০,০০০/- (দুই কোটি) টাকা।

তবে এ বিষয়ে সাইদুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেননি।

দুর্নীতিবাজ সাইদুর রহমানের দুর্নীতি’র বিষয়ে আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত। বিস্তারিত চলবে।

 


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।