স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজধানীর মিরপুর দারুস সালাম থানাধীন শাহ আলীবাগ এলাকায় ২০১২ সালের জুলাই মাসে কে এম পারভেজ হাসানকে হত্যা করে তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন সোমা, দুই শালা রাব্বী ও তানজিল আলম। এ নিয়ে বাদী হয়ে দারুস সালাম থানায় ১৪ জুলাই ২০১২ সালে মামলা করেন ভিকটিমের মা মমতাজ বেগম। যাহা দারুস সালাম থানার মামলা নং ৪৬(১০)১২। উক্ত মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দারুস সালাম থানার এসআই ফজলুল হক। সে সময় তিনি এ মামলার অন্যতম প্রধান আসামী শাহনাজ পারভীন সোমাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডেও নেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, কে এম পারভেজ হাসানের সাথে শাহনাজ পারভীন সোমার প্রেমের সম্পর্কে ১০ মে ২০০৩ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই কে এম পারভেজ হাসান ও শাহনাজ পারভীন সোমা ৩১২/৪- এল, টোলারবাগ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। বিয়ের দশ বছর বয়সে শাহনাজ পারভীন সোমার কোন সন্তান না হওয়াতে বিভিন্ন সময় মনোমালিন্য হয়। ২০১২ সালের ৩০ তারিখে কে এম পারভেজ হাসানের মা এর কাছে ফোন করে শাহনাজ পারভীন সোমা জানান তার স্বামী মারা গেছে। উক্ত তারিখে ভিকটিমের মা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন কে এম পারভেজ হাসানকে দ্রুত গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পরিয়ে জানাযা পড়ানোর জন্য খাটের উপর শুইয়ে রাখে এবং তড়িগড়ি লাশ কবর দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন তড়িগড়ি বিষয়ে আসামী শাহনাজ পারভীন সোমার কাছে জানতে চাইলে পারভেজ হাসান হার্ড এ্যাটাক করে মারা গেছে বলে সোমা জানান। এরপর থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলে দারুস সালাম থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে। পরবর্তীতে পারভেজ হাসানের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল পাঠানো হয়। উক্ত ময়না তদন্তে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোঃ সোহেল মাহমুদ বর্নিত মতামত প্রদান করেন- “Considering post mortem examination sindings & chemical analysis report of viscera I am of the opinion that the cause of death due to violent asphyxia resulting from smoothering which was amte mortem & homicidal in nature”
জানা গেছে, ১০ বছর যাবৎ সন্তান না হওয়া অন্যত্র বিয়ে করাবে কে এম পারভেজ হাসানকে পরিবারের এমন সিন্ধান্তের জের ধরেই পারভেজ হাসানকে হত্যা করে তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন সোমা, শালা রাব্বী ও আরেক শালা তানজিল আলম। উক্ত মামলাটি পরবর্তীতে কোর্টের নির্দেশে ডিবি পশ্চিম তদন্ত করেন। এই মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পশ্চিম এই হত্যার মূল আসামী শাহনাজ পারভীন সোমাকে একাধিকবার রিমান্ডেও নেন। ওই রিমান্ডে তিনি স্বীকারও করেন পারভেজ হত্যাকান্ডের সাথে তিনি এবং তার দুই ভাই জড়িত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পশ্চিম ৭ নং টিমের এসআই মোঃ হাফিজুর রহমান ২০১৩ সালের ডিসেম্বও মাসের ২০ তারিখে শাহনাজ পারভীন সোমাকে এই হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী এবং তার দুই ভাই গোলাম রাব্বানী রাব্বী ও তানজিল আলমের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগে তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ হাফিজুর রহমান উল্লেখ করেন, শাহনাজ পারভীন সোমা (৩২), গোলাম রাব্বানী রাব্বী, তানজিল আলম দের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়া প্রকাশে বিচারের নিমিত্তে দারুস সালাম থানার অভিযোগ পত্র নং ৪২১ তাং ২০/১২/২০১৩ ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড দাখিল করিলাম। অন্য এক আসামী রোকেয়া বেগমের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী প্রমান না পাওয়া তাকে অত্র অভিযোগ পত্রে তার নাম বাদ দেন। অত্র মামলার সব ধরনের স্বাক্ষী বিজ্ঞ আদালতে প্রদান করা হয়েছে। বাদী পক্ষের আইনজীবি হিসেবে মামলাটি পরিচালনা সরকারী পিপি আবু আবদুল্লাহ।
এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ইতিমধ্যে সকল স্বাক্ষীদের জবানবন্দি, স্বাক্ষ্য গ্রহন ও যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। বিচারে বিজ্ঞ আদালত এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সব আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা দিবেন। এদিকে মামলার বাদী মমতাজ বেগম তার একমাত্র সন্তান কে এম পারভেজ হাসানকে হত্যাকারী শাহনাজ পারভীন সোমা, গোলাম রাব্বানী রাব্বী ও তানজিল আলমের ফাঁসির দাবী করছেন।
প্রিয় পাঠক এরপর আমার তুলে ধরবো অত্র মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষীদের জবানবন্দি ও তদন্তকারী কর্মকর্তার পুরো অভিযোগ পত্রের চিত্র।
‘অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি’
অবশেষে ঢাকায় হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি। টানা একমাস দাবদাহের......বিস্তারিত