TadantaChitra.Com | logo

২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিক্ষা নিয়ে বানিজ্য বন্ধ হোক

প্রকাশিত : জুন ২৪, ২০১৮, ১৫:২৬

শিক্ষা নিয়ে বানিজ্য বন্ধ হোক

“শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড” এমন কথা পাঠ্য পুস্তকেই মানায় বর্তমান যুগে। বর্তমানে শিক্ষার যে অবস্থা তাতে জাতি আজ মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়েছে। পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয় প্রতিনিয়ত। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর লাগামহীন অপকর্ম বন্ধ করতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। সম্প্রতি সাপ্তাহিক “তদন্ত চিত্রে” মুগদা মহানগর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কোচিং বানিজ্য ও পরিক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং বিভিন্ন অযুহাতে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এমনকি এই প্রতিষ্ঠানের সামনে মাদকের হাটও রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, উক্ত প্রতিষ্ঠনের অধ্যক্ষের আশ্রয় প্রশ্রয় এখানে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ব্যবসা করছে দেদারছে। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরও তার অপকর্ম থেমে নেই। এছাড়াও সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ইতিমধ্যে তাদের তালিকা দুদকের হাতের রয়েছে বলে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ পায়। আসলে এখন দেখার অপেক্ষা সত্যিই কি এই কোচিং বাণিজ্যবাজদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমে কি পুরো দেশের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে? এমন প্রশ্ন সচেতন মানুষের।
২০১৫ সালে এসএসসি/ এইচএসসি’র পরীক্ষার ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে যে বাড়তি অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়েছে, তা ফেরত দেওয়ার জন্য উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশ দিয়েছে। এমন আদেশ ছাড়াও কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশ আছে কিন্তু কার কথা কে শুনে, সরিষাতেই ভ‚ত। খোদ শিক্ষা অতিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। পত্রিকায় প্রকাশ, তিনি নাকি ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দিয়ে দাপটের সাথে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে শিক্ষা এখন যেন এক বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে যেমন চটকদার নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠছে, তেমনি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কোনো নিয়মের ধার ধারে বলে মনে হয় না। এসব স্কুলের বেতন-ভাতা কোনো নিয়ম মেনে নির্ধারণও করা হয় না। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছামতো তা নির্ধারণ করে। শিক্ষার্থীদের তা মেনে চলতে হয়।
ইংরেজি মাধ্যমে পাশাপাশি উচ্চ হারে ফি নেওয়ার প্রবণতা সংক্রমিত হয়েছে বাংলা মাধ্যমের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বিশেষ করে রাজধানীর বেশ কিছু নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবলিক পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উন্নয়ন ফি ও অগ্রিম বেতনের নামে নির্ধারিত অঙ্কের চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করে থাকে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ফি দিতে বাধ্য হন অভিভাবকরা, যা অনৈতিক হিসেবেই বিবেচিত। সচ্ছল অভিভাবকদের পক্ষে যেকোনো অঙ্কের ফি দেওয়া সহজতর হলেও দেশের বেশির ভাগ অভিভাবকের উচ্চ হারের শিক্ষা ফি বহন করা সম্ভব নয়। শিক্ষা মৌলিক অধিকার। কিন্তু বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চ হারে ফি নেওয়ার কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীও পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে না। আবার ভর্তি হওয়ার পরও অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে নানা অজুহাতে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের বিরুদ্ধে রয়েছে এমনই অভিযোগ।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখনো সবার জন্য সমান হতে পারেনি। টাকার অঙ্কে নির্ধারিত হয় মানসম্মত শিক্ষা। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে অনেকেই এখনো শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। আমরা চাই শিক্ষার নামে অনৈতিক বাণিজ্য বন্ধ হোক। সবার জন্য নিশ্চিত হোক শিক্ষার অধিকার।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।