TadantaChitra.Com | logo

৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বনানীতে মাদক সম্রাটরা এখনও অধরা  

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৫, ২০১৮, ১৩:২০

বনানীতে মাদক সম্রাটরা এখনও অধরা  

তদন্ত চিত্র: মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে রাজধানীর বনানীতে এখন পর্যন্ত কোনো পৃষ্ঠপোষক বা মূলহোতার গ্রেফতার হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও র‌্যাবের চলমান এ অভিযানে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই ছোট বা মাঝারি শ্রেণীর মাদক ব্যবসায়ী বা বাহক অথবা সেবক বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাদক ব্যবসায়ী যত প্রভাশালী হোক না কেন, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আইনের আওতায় সবাইকে আসতেই হবে।
বনানীতে মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের সাথে সোর্সদের সখ্যতা থাকায় তাদের গ্রেফতার করছে না বনানী থানা পুলিশ। এছাড়া থানার কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাও সরাসরি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বনানী থানা পুলিশ এবং সোর্সদের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণেই চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে না। মহাখালী পশু গবেষণা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন মাদকের অন্যতম বড় নাটা ইউসুফের মাদকের স্পটে প্রকাশ্যে ইয়াবা, গাঁজা ফেন্সিডিল বিক্রি করা হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। ইউসুফ মহাখালী এলাকার চিন্হিত সন্ত্রাসী। তিনি ডিবির সোর্স হিসেবেও পরিচিত। তার নামে গুলশানসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
হাজাড়িবাড়ি মুন ভিডিওর পেছনের গলিতে আব্দুল আলীর ছেলে শরিফ ওরফে পাগলা শরিফের মাদক স্পট। একাধিক মামলার আসামী শরিফের সাথে বনানী থানার এসআই আবু তাহের ভুঁইয়ার সাথে বড় ভাই ছোট ভাই সম্পর্ক। ১২ জুন শরিফকে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। ঈদের আগে জামিনে বেরহয়ে বর্তমানে আবার ইয়াবা-গাঁজা বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদিন তার কাছ থেকে মাদক কিনতে আসা মাদক সেবকদের আনাগোনায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। মাদক ব্যবসায়ী শরিফ এলাকায় বলে বেড়ায়, মাসে ৩০ হাজার টাকায় এসআই তাহেরকে ম্যানেজ করে ফেলেছেন। এছাড়া বনানী থানার পুলিশ সোর্স শহীদ তার স্পট থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা আদায় করেন বলে জানা গেছে। তাই বনানী থানার কোন পুলিশ শরিফের মাদকের স্পটে অভিযান পরিচালনা করেন না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, শরিফ এই পর্যন্ত মাদক মামলায় তিনবার গ্রেফতার হয়। তিনবারই মামলা হয় বনানী থানায় কিন্তু বনানী থানার পুলিশ তাকে একবারও গ্রেফতার করেনি করেছে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর। বনানী ১নং রোড সংলগ্ন গোডাউন বস্তিতে আলোচিত মাদক স্পটে ময়না ও তার মা গাঁজা বিক্রি করছে একেবারে প্রকাশ্যেই। বহু বছরধরে চলে আসা এই মাদক স্পট বন্ধ হয়নি এখনও। মসজিদের বিপরীত পাশে থানায় পেমেন্ট দিয়ে অতি দাপটের সাথে তারা গাঁজার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
ওয়ারলেস গেইট টিএন্ডটি পূর্ব কোলোনির বিটিসিএলের পানির পাম্পে আব্দুর রহমান মাসুম ওরফে মোল্লা মাসুমের ইয়াবা স্পট। মোল্লা মাসুম অএ এলাকায় ইয়াবার বড় ডিলার হিসাবে চিন্হিত। তার সহযোগী বনানী থানা পুলিশ সোর্স নোয়াখালীর শহীদ। তারা অবৈধ অস্রধারী সন্ত্রাসী। অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল ২০১৬ সালে দুটি পিস্তল ৬ রাউন্ড গুলিসহ র‌্যাব-১ মোল্লা মাসুমকে গ্রেফতার করেছিল। পরে মামলা দিয়ে তেজগাঁও শিল্পান্চল থানায় হস্তান্তর করে। এমামলায় চার মাস পরেই হাইকোর্টের দেয়া জামিনে বেরিয়ে যায় মোল্লা মাসুম। জানা যায়, তার সহযোগী সোর্স শহীদকেও ২০০৫ সালে পিস্তল ও বিস্ফোরক সহ বনানী ২নং রোডের হিন্দুপাড়া বস্তি থেকে গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব-১। তারা বনানী, কড়াইল বস্তি, মহাখালী, বাড্ডা, গুলশান ও বারিধারা এলাকায় খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের ইয়াবা ও ফেন্সিডিল দেয়। তাদের রয়েছে শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট। বেশ কয়েকজন পুলিশও রয়েছেন তাদের সিন্ডিকেটে। তাদের নিয়ন্ত্রনে ফেন্সিডিল ও ইয়াবার ব্যবসা করে- ওয়ারলেস গেট এলাকায়- জামাই মালেক, মামুন, মানিক, নিরব, ড্রাইভার কাশেম, মফিজ, মোতালেব, ইয়াসিন, মহাখালী বন ভবনের পেছনে করিমসহ অনেকে।
এছাড়াও টিএন্ডটি বালিকা স্কুল রোডে মহান স্টুডিও সংলগ্ন নিজ বাড়িতে বসে ইয়াবা ও গাঁজার ব্যবসা করেন বনানী থানা সেচ্ছাসেবক দল নেতা এবং কড়াইল বস্তির চিন্হিত চাঁদাবাজ সায়েম। খুব কৌশলে মাদক ব্যবসা করেন তিনি। পরিস্থিতি খারাপ থাকলে গা-ঢাকা দেন আবার স্বাভাবিক হলে ফিরে আসেন। সম্প্রতি একাধিক পএিকায় তার নাম উঠে আসায় আত্মগোপন করেছিলেন তিনি ঈদের আগে আবার ফিরে এসে মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়েছেন বলে জানা যায়।

মহাখালী টিবিগেট এলাকায় ভয়ংকর ইয়াবা ব্যবসায়ী রকি। জানা যায়, তিনি বনানী থানা পুলিশের সোর্স হওয়ায় অতি দাপটের সাথে ইয়াবা ব্যবসা করছেন। সোর্সের খাতায় নিজের নাম টিকিয়ে রাখতে প্রতিদিন পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিরীহ মানুষকে দেখিয়ে দিয়ে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে রকি তল্লাশি করার সময় নিরীহ মানুষের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, রকি উওর বাড্ডার গোপিবাগ এলাকায় থাকেন। তার নামে বাড্ডা থানায় ২টি মাদক মামলা ও মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার অভিযোগে ১টি মামলা রয়েছে। জানা যায়, রকি বনানী থানার এসআই আব্দুল হক ও এসআই শরিফুলের সোর্স হিসেবে কাজ করে।

পুলিশের একটি অংশের মদদে দীর্ঘদিন ধরে অধরা এসব মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকলেও তারা গ্রেফতার হচ্ছে না। তার কারন পুলিশ ও সোর্সরা আগে থেকে খবর দিয়ে তাদের পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করছে এবং আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।