নিজস্ব প্রতিবেদক: গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তার চেয়ারে বসে মালি ও ঝাড়ুদারের নির্ধারিত পোশাকের টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সরকারি বিভাগীয় প্রধান বৃক্ষপালনবিদ শেখ মো. কুদরত ই খুদা তুষার’র বিরুদ্ধে। কুদরত ই খুদা নাম হলেও ঘুষ বানিজ্য ছাড়া তিনি কোনো কিছুই বোঝে না-শোনেন না। এককথায় দুর্নীতি সিদ্ধহস্ত ই খোদা। কোনঠাসা করে রাখেন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের এমন সব অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এরপরও কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় বিগত এক যুগের বেশী সময় ধরে তিনি দখল করে বিভাগীয় প্রধানের পদটি। শুধু তাই নয়, বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের সকল অপকর্ম।
জানা গেছে, কুদরত ই-খুদা তুষারের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। এক লাফে দুই টেবিল প্রমোশন বাগিয়ে গেড়ে বসে আছেন এই পদে। যা সরাসরি সরকারি শৃঙ্খলার লঙ্ঘন।
শেখ মো. কুদরত ই-খুদা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একজন সক্রিয় ছাত্রদল নেতা ছিলেন। তিনি বাকৃবিতে ছাত্রদলের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে নির্বাচনও করেছেন। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে তার দাপট ছিল সীমাহীন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপি সরকারের আমলে মির্জা আব্বাস এবং আ. মান্নানের নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদফতর শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের অফিসে বেশকিছু বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের লোকজন ইউনিয়ন কক্ষে প্রবেশ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ইউনিয়ন অফিসের নিচে ফেলে পদদলিত করে। এই ঘটনার পেছনে ছিলেন মো. কুদরত ই-খুদা ও ১৬৪৭ ইউনিট কমিটির হাসান আলী মোল্লা গং।
এছাড়াও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান বৃক্ষপালনবিদ শেখ মো. কুদরত ই খুদা তুষার চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এই কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ মো. কুদরত ই-খুদা (তুষার) বিএনপিপন্থি পেশাজীবী সংগঠন এগ্রিকালচারিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব)-এর একজন সক্রিয় নেতা। ২০০৩ সালের ৫ মে বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব প্রয়াত আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এ্যাব-এর যে কমিটি অনুমোদন করেন তাতে ‘সহ-প্রচার সম্পাদক’ হিসেবে কুদরত ই-খুদার নাম রয়েছে। ওই কমিটিতে কৃষিবিদ জাবেদ ইকবাল সভাপতি এবং কৃষিবিদ কবির আহমেদ ভূঁইয়া সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে পোশাক আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলেও এটা প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। উল্টো যারা তদন্ত করেছেন তাদের ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্নভাবে হয়রানিও করা হয়েছে তাদের। কুদরত ই খুদার খুটির জোর কোথায় তা জানতে মাঠে নেমেছে আমাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক।
প্রসঙ্গত, মালিদের পোশাকের জন্য প্রতি বছর দশ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। বরাদ্দ থেকে কখনও মালিদের টাকা দেওয়া হয়, আবার কখনও পোশাক তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের পর থেকে ওই কর্মচারীরা কোনও পোশাক পাচ্ছেন না। গত ৯ বছর ধরে মালিদের জন্য বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রথম অভিযোগ উঠে ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে। ভুয়া বিল তৈরি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায় প্রধান বৃক্ষপালনবিদ কুদরত-ই-খুদার বিরুদ্ধে। পরে তার নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়।
এছাড়া, তার বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপনে অনিয়ম, ফুলগাছ লাগানোর নামে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি ফুলের বাগানে ছাগলের খামার স্থাপন, রাতের আঁধারে গোপনে গাছ বিক্রি, গাড়ি বিক্রিসহ নানা অনিয়ম ও অসদাচারনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
কথায় আছে, চোরের ৭দিন গৃহস্তের একদিন। ওটাই ঘটে গেলো কুদরত ই খুদার বিভিন্ন বিল ভাউচারে নয় ছয়ের প্রমাণ মিলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এপিপি ও পত্রিকার বিজ্ঞাপন তালিকায়। সেই বিল ভাউচার এসেছে আমাদের হাতে।
অভিযোগের বিষয়ে কুদরত ই খুদা মুঠোফোনে বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে সাজানো হয়েছে। সব মিথ্যা অভিযোগ।
তার বিষয়ে আরো তথ্যবহুল প্রতিবেদন থাকছে আমাদের পরবর্তী পর্বে।
‘পবিত্র শবে বরাতে আমাদের করনীয়, এবং যা বর্জনীয়’
এইচ এম হাকিমঃ আজ পবিত্র শবে বরাত, পবিত্র এই রজনীকে......বিস্তারিত