TadantaChitra.Com | logo

২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফায়ার সার্ভিসের দুর্নীতিতে কে এই নুর উদ্দিন আনিছ?

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৮:২৭

ফায়ার সার্ভিসের দুর্নীতিতে কে এই নুর উদ্দিন আনিছ?

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের টেন্ডার, নিয়োগ, বদলী, পদায়ন সহ গুরুত্বপূর্ণ সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। অনেকের প্রশ্ন অলৌকিক এ ব্যক্তি কে? যার ইশারায় চলে ফায়ার সার্ভিসের সব কার্যক্রম। উন্নয়ন শাখার রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের সব কাজই করেন নুরউদ্দীন মোঃ আনিছ। অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বদলী ও পদায়নেও রয়েছে তার হাত। টেন্ডার সংক্রান্ত কাজ তাকে না দিলে কোন টেন্ডার করতে পারেন না অধিদপ্তর। এ জন্য তিনি বেশ কয়েকজন ঠিকাদারকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেছেন। এ সিন্ডিকেট এর ঠিকাদারদের লাইসেন্স দিয়ে অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাজ করেন। বর্তমানে তার সিন্ডিকেটের ঠিকাদার অধিদপ্তরের বাউন্ডারির কাজ করছেন বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমির বাউন্ডারির কাজ নিয়েছেন নুর উদ্দিন মোঃ আনিছ সিন্ডিকেট। চট্টগ্রাম সহ সারাদেশে ডাল ক্রয়ও নিয়ন্ত্রণ করেন আনিছ। এ জন্য তিনি উপপরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) হিসেবে রংপুর থেকে বদলী করে আনেন বিএনপি ঘরনা উপপরিচালক মোঃ জসিম উদ্দিনকে। তাঁকে এনেই বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করেন আনিছ। এদিকে জসিম উদ্দিন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন এর ক্যাশিয়ার হিসেবে অধিদপ্তরের সবার কাছে পরিচিত লাভ করেছেন। এই সিন্ডিকেট এর অপকর্ম নিয়ে দুদক সহ রাষ্ট্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অভিযোগ জমা পরেছে। দুদকের একটি অভিযোগ তদন্ত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেন। ওই অভিযোগের তদন্ত থামাতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু করেছেন। যেকোনো মুল্যে ডিজি ও তার ভাই নুর উদ্দিন মোঃ আনিছ সিন্ডিকেটের তদন্ত প্রতিবেদন তাদের পক্ষে নিতে আপ্রাণ চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এই তদন্ত শুরু হওয়ায় কিছু দিনের জন্য ডিজি তার ভাইদেরকে অধিদপ্তরের সকল কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখলেও উপপরিচালক (প্রশাঃ ও অর্থ) জসিম উদ্দিনকে দিয়ে বদলী, টেন্ডার, পদায়ন ও পদোন্নতি বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন৷ সম্প্রতি বেশ কিছু উপসহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা বিভিন্ন আদালতে চলমান। এসব কর্মকর্তার কাছ থেকে জসিম উদ্দিনের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি সুপারিশ করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন। তৎকালীন বাগেরহাট ও চাঁদপুরের ডিএডির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। বাগেরহাটের ডিএডি গোলাম সরোয়ারের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী কর্তৃক যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা থাকার পরও ডিজি টাকার বিনিময়ে তাকে পদোন্নতি দেন। এসব মামলার কাগজ পত্র আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও কুড়িগ্রামের ডিএডি হিসেবে কর্মরত আলী আকবরের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি ও বিভাগীয় মামলা থাকা সত্ত্বেও উপপরিচালক জসিম উদ্দিনের আস্থাভাজন হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না অধিদপ্তর। এসব বিষয়ে ডিজিকে অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা জানালেও কোন ব্যবস্থা নেন নি। উল্টো তাকে পদোন্নতি দিতে চায় অধিদপ্তর এমনটাই জানান অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। আলী আকবরের বিরুদ্ধে কয়েকটি বিভাগীয় মামলা জসিম উদ্দিন উপপরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) হিসেবে যোগদান করেই টাকার বিনিময়ে নিষ্পত্তি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, নুর উদ্দিন মোঃ আনিছ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন এর আপন ছোট ভাই। আরেক ভাই সালাউদ্দিন। দুই ভাইয়ের মধ্যে নুর উদ্দিন মোঃ আনিছ ডিজির খুব আদরের ও চতুর চালাক লোক। এ জন্য আনিছ ডিজিকে যা বলেন ডিজি তার কথা মতো তা-ই করেন। কোন কর্মকর্তা যদি অন্য কোন মাধ্যমে বদলী হন তাতেও আনিছ ও সালাউদ্দিনকে টাকা না দিলে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে দেন না। টাকা না দিলে অন্যস্থানে বদলীর হুমকি দেওয়া হয়। তবে এসব কর্মকাণ্ডে ডিজির ভাইরা নিজেদের ফোন থেকে কারো সাথে কথা বলেন না। হয় ফায়ার সার্ভিসের কোন কর্মকর্তার নাম্বার থেকে না হয় তাদের সিন্ডিকেট এর ঠিকাদারদের ফোন থেকে কথা বলেন তারা।

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডিজি বলেন, আমার ভাইরা অধিদপ্তরের কোন কাজে জড়িত নয়। একটি পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। আরেকদিকে নুর উদ্দিন আনিছের কাছে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

অভিযোগ রয়েছে, অধিদপ্তরের এক ডুবুরির কাছ থেকে ১৩ জন ফায়ার ফাইটার পদে চাকুরি দিবেন বলে এক কোটি ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন নুর উদ্দিন আনিছ। এদের মধ্যে চাকুরি হয়েছে মাত্র ৩ জনের। বাকীদের চাকরি না হওয়া বেকাদায় আছেন ডুবুরি ও আনিছ সিন্ডিকেট। এ নিয়ে প্রতিদিনই মিরপুর আনিছের দরবার খ্যাত অফিসে দেনদরবার হচ্ছে। এই নিয়োগ বানিজ্য সংক্রান্ত সুপারিশ না শোনার কারনে খোদ নিয়োগ কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুল ইসলামকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে চাপ প্রয়োগ করে বদলী করিয়ে দেন। সূ্ত্র জানায়, পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) এই চেয়ারে একজন সেনাবাহিনীর মেজর আনতে ডিজি মাইন উদ্দিন চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ জন্য বিভিন্ন দপ্তরে নিজের মনগোড়া বক্তব্য বলে যাচ্ছেন। আরো বিস্তারিত আসছে।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।