TadantaChitra.Com | logo

২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট বিদ্যালয় নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩, ১৫:৩৬

শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট বিদ্যালয় নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা

তদন্ত চিত্র: প্রাথমিক ও গণশিক্ষ প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের মহাপরিচালক হাবিবুল বাসার কোন সভা না করে বাসায় বসে ৫০টি বিদ্যালয়ের নামের তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। যা দু’একদিনের মধ্যে প্রকাশের কথা রয়েছে। এমন তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এই স্কুলের তালিকা তাদের নির্ধারিত লোক এবং মন্ত্রীর ভাগনে কল্লোলের মাধ্যমে করা হয়েছে এবং অনেক অর্থের লেনদেনে অভিযোগ রয়েছে। আরো অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান প্রতিমন্ত্রী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় আর এই পদে থাকছেন না এজন্য নতুন মন্ত্রী সভা গঠনের আগে কাজ শেষ করে টাকা পয়সা হালাল করতে চান। এমতবাস্থায় তাদের এমন কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার অবস্থা।

জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট। এই শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে পত্রকলি ট্রাস্ট নামে পরিচালিত হয়ে আসছিল। পরে ১৯৮৯ সালে শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট নামে পরিচালিত হয়। এই শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের মোট বিদ্যালয় ২০৫টি। এর ভিতরে ঢাকা জেলায় ৬৫টি, বরিশাল জেলায় ২৫টি, চট্টগ্রাম জেলায় ১১টি, সিলেট জেলায় ৫টি, ময়মনসিংহ জেলায় ১৪টি, রংপুর জেলায় ৪৭টি, রাজশাহী জেলায় ২২টি, খুলনা জেলায় ১৬টি। এই শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট যখন পরিচালনা শুরু করে সেই সময় উল্লেখ থাকে যে হতদরিদ্র সুবিধা বঞ্চিত ঝরে পড়া শিশু শ্রমজীবী অবহেলিত ঘনবসতি নৃগোষ্ঠী উপজাতি বন্যা কবলিত নিচু এলাকা ইটভাটা গুচ্ছগ্রাম এইসব জায়গার ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে বিকেল এই বিদ্যালয় পরিচালনা হওয়ার কথা ছিল এবং হয়ে আসছে। ৬৬তম সভায় নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের পর গত অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত নতুন বিদ্যালয়ের স্থাপন করা হয়নি। বর্তমানে শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট এর পরিচালক মো. আবুল বশার (উপ-সচিব) স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। শিশুকল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের ৭৫তম ও ৭৬তম সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যায় যে, চা বাগান শ্রমঘন এলাকা নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়, দুর্গম এলাকা, আশ্রয়ণ প্রকল্প কাছাকাছি যেখানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাই এমন স্থানে ৫০টি শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।

 

সংশ্লিষ্ট এলাকার আগ্রহী ব্যক্তিবর্গ গত ২ নভেম্বর হইতে ১২ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন দাখিল করিতে পারবেন। ২ নভেম্বর ছিল বৃহস্পতিবার, এরপর শুক্র শনি বন্ধ ৫-৯ তারিখ অফিস খোলা ছিল ১০-১১বন্ধ ছিল ১২ তারিখের মধ্যে আবেদন অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে।

এতদিন পর শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের ৫০টি বিদ্যালয় অনুমোদনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর শিক্ষা অনুরাগীদের এতকম সময় দিয়ে তাড়াহুড়োর ব্যস্ততা সাধারণ মানুষের ও দূরের মানুষের ঢাকায় এসে ট্রাস্টি বোর্ডের অফিসে জমা করতে অনেকের হিমশিম খেতে হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট এর পরিচালকে গত ১৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে একটি বদলির আদেশ করা হয়। পরিচালক পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ কিন্তু সেই বদলির আদেশ থাকা সত্ত্বেও শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালক মো.আবুল বশার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিদ্যালয়গুলোতে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য মন্ত্রীকে ম্যানেজ করেন। তদবির করে গত ১৯ডিসেম্বর বদলির আদেশটি বাতিল করে পুনরায় পরিচালক শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পদে বহাল রাখে। তারপর আবেদন করা বিদ্যালয়ে মাঠে সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পালনের জন্য একটি পত্র দেওয়া হয় সকল জেলায়। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মাত্র কয়েক দিনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে জন্য বলা হয় এবং তদন্ত প্রতিবেদন পরিচালক বরাবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিচালক তাদের তদন্ত সন্তোষজনক না হওয়ায় তিনি আবার জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর পত্র পাঠানো হয়। সকল জেলা শিক্ষা অফিসারকে মাত্র ৫ দিন সময় দেওয়া হয়। জেলা শিক্ষা অফিসার কিছুসংখ্যক তদন্ত প্রতিবেদন পাঠায় আর কিছু এখনো জমা দেয়নি। গত ২১ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয় ট্রাস্টি বোর্ডের একটি সভার নির্ধারণ করা হয়। সেই সভা ১২.৩০মিনিটের সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিশুকল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের ৮০তম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ২ টার পর ট্রাস্টি বোর্ডের সভা আরম্ভ হয়। কিন্তু সভায় সকল সদস্য উপস্থিত না হওয়ায় এবং মন্ত্রীর বিদ্যালয় তালিকা মনমতো না হওয়ায় গত ২৭ ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা বলে সভাপতি ঘোষণা করে।

 

সূত্রে জানায়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) প্রবীর কুমার হালদারের নেতৃত্বে যে পরিচালক শিশুকল্যাণ ট্রাস্টে যোগদান করুন না কেন; সেই পরিচালকের নেতৃত্ব করে আসছে। এখানে মন্ত্রী ও তার ভাগিনা কল্লোল তাদের মনেরমত লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। সাধারণ মানুষ মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তাদের বাসার পাহারাদার কোনভাবেই গেট খুলে না। ভেতর থেকে অনুমতি না দিলে গেট খোলা হয় না। গতমাসে মন্ত্রীর বাসায় এক পাওনাদারকে ডেকে নিয়ে বেদড়ক মারধর করেন। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দ্বাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। এতে তার মাথা খারাপ। তাই কিভাবে টাকা ইনকাম করবে। এই শেষ সময়। তাই যে বিদ্যালয়েগুলি কোনভাবেই পরিচালনা করা সম্ভব নয় সেই বিদ্যালয়গুলি অর্থের বিনিময়ে চূড়ান্ত তালিকা করেছেন এবং আগামী মন্ত্রিসভা গঠনের আগে সকল বিদ্যালয় এর কাজ সম্পূর্ণ করবেন।

সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান মন্ত্রী জাকির হোসেন ঢাকায় তিনটির উপরে বাড়ি করেছেন। সিলেটে বাড়ি করেছেন। রৌমারীতে বিশাল জায়গা কিনে বাড়ি করেছেন। তার নামে দুদুকে অভিযোগ রয়েছে। এবিষয়ে পরিচালকের মন্তব্য জানতে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি খুদেবার্তা পাঠালেও তার কোন জবাব পাওয়া যায়নি।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।