TadantaChitra.Com | logo

১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি– এই মূলনীতি থেকে পথভ্রষ্ট ছাত্রলীগ

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪, ০৭:৪৯

শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি– এই মূলনীতি থেকে পথভ্রষ্ট ছাত্রলীগ

তদন্ত চিত্র: শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি– এই মূলনীতি থেকে অনেকটাই পথভ্রষ্ট ছাত্রলীগ। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটির সমালোচনা আর বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সিট বাণিজ্য ও ক্ষমতার দাপট দেখাতে গিয়ে আবারও আলোচনার খাতা খুলেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনটি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাব বিস্তার নিয়ে ক্যাম্পাসে-ক্যাম্পাসে সংঘাতে জড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের ওপর অস্ত্রশস্ত্রসহ ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গেছে। ফলে অশান্ত হয়ে উঠেছে অন্তত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

এর মধ্যে সবচেয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি)। সেখানে চায়ের দোকানে বসা নিয়ে ছাত্রলীগের তিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা টানা তিন দিন সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। আহত হয়েছেন পুলিশসহ ৭০-৮০ নেতাকর্মী। গতকাল শনিবার পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। চবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ পরিপ্রেক্ষিতে সংঘাত-সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আজ রোববার বৈঠক করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সরস্বতী পূজার কনসার্ট ঘিরে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার অনুসারীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। আহত হন ১৫ নেতাকর্মী, যাদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। একই কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও (জবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরোধে সৃষ্ট সহিংসতায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ছাত্রলীগ একটি সুসংগঠিত সংগঠন হিসেবে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর পরও এত বড় সংগঠন, নানা সময় ভুলত্রুটি কিংবা ব্যত্যয় ঘটে থাকে। আমরা বিষয়গুলোকে অস্বীকার করছি না। তবে যে কোনো ঝামেলা ও অসুবিধা মোকাবিলা করে ছাত্রলীগকে একটি আদর্শ সংগঠনের পরিণত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম থেকে তৌফিকুল ইসলাম বাবর ও মারজান আক্তার জানান, চা দোকানে বসা নিয়ে বিরোধের জেরে গত বুধবার রাত থেকে শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত চার দফা সংঘর্ষে জড়ায় চবি ছাত্রলীগের তিন গ্রুপ। গ্রুপ তিনটি হলো– চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি), বিজয় ও সিক্সটি নাইন। তবে উত্তাপ-উত্তেজনা থাকলেও গতকাল ছাত্রলীগের বিভক্ত নেতাকর্মীরা নতুন করে আর কোনো সংঘাতে জড়াননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে গতকালও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

এর আগে বুধ থেকে শুক্রবার সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের প্রায় ৩০০ নেতাকর্মী রামদা, ইটপাটকেল ও লাঠিসোট নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর চড়াও হয়। তিন দিনের সংঘর্ষে পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। এর মধ্যে সিক্সটি নাইন সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আর সিএফসি ও বিজয় গ্রুপ শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের এমন কোনো অনুসারী গ্রুপ নেই বলে বিভিন্ন সময় দাবি করেন তারা।

সূত্র বলছে, চবি ক্যাম্পাসকে নানাভাবে অস্থির করে তুলছেন ছাত্রলীগের গ্রুপভিত্তিক কিছু নেতাকর্মী। তবে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না কেউ। এজন্য পরস্পরকে দুষছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংঘাতে জড়িত ছাত্রদের বিরুদ্ধে তেমন একটা ব্যবস্থা নেয় না। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ সহযোগিতা পাওয়া যায় না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে।

অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামের দুই আওয়ামী লীগ নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ও পাচ্ছেন ছাত্রলীগের বেপরোয়া নেতাকর্মীরা। চবিতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন নামে অন্তত ৯টি গ্রুপ কমবেশি সক্রিয়। সবগুলোই হলো ও শাটল ট্রেনভিত্তিক গ্রুপ। এর মধ্যে রয়েছে সিএফসি, সিক্সটি নাইন, ভাসির্টি এক্সপ্রেস (ভিএক্স), বাংলার মুখ, রেড সিগন্যাল, কনকর্ড, এপিটাফ, উল্কা ও বিজয়। মূলত এসব গ্রুপের নেতৃত্ব দেওয়া বেশির ভাগ ছাত্রলীগ নেতার ছাত্রত্ব নেই। লেখাপড়া শেষ হওয়ার পরও অনেকে বিভিন্ন কোর্সে নাম লিখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন।

জানা গেছে, চবির আবাসিক হল ১২টি। এর মধ্যে ছাত্রদের সাত হলে ১ হাজার ৮৮টি কক্ষ রয়েছে। গত সাত বছর আবাসিক হলে বৈধ আসন বরাদ্দ না থাকায় এসব কক্ষের প্রায় সবই নিয়ন্ত্রণ করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব হলে থাকার খুব একটা সুযোগ পান না। নিজেদের অনুসারী নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে ঠাঁই পান হলগুলোতে। বিনিময়ে তাদের মিছিল-সমাবেশসহ সংঘর্ষের মতো ঘটনায়ও অংশ নিতে হয়।

সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, সিএফসি গ্রুপের নেতা ও বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ ও বিজয় গ্রুপের নেতা সাখাওয়াত হোসেনের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা অভিন্ন মন্তব্য করেন। তারা বলেন, সংঘাত-সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী সমাধান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিতে পারছে না। বিভিন্ন সময় তারা পক্ষপাতিত্ব করেন। হলে বৈধভাবে সিট বরাদ্দ না থাকার কারণেই অছাত্ররা অবস্থান করে। এই সুযোগে প্রতিপক্ষের কাছে আধিপত্য বিস্তার করতে বারবার সংঘর্ষে জড়ান তারা।

চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রধান দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। এসব অভিযোগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে আসন বরাদ্দ না দেওয়ার ব্যাপারে আমরা তাদের বারবার জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে, তিন দিনের সহিংসতার পর গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বক্তব্য এসেছে। ওই বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে আবাসিক হলে অবস্থানরত অছাত্রদের বের করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রীর এই আহ্বানের পর বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার। আজ রোববার আইনশৃঙ্খলা-বিষয়ক একটি সভা ডেকেছেন তিনি। সভার প্রস্তুতি নিতে ইতোমধ্যে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদকে উপাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে উপাচার্যের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয় বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে– এটি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপাচার্য কথা বলেছেন। আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

চট্টগ্রাম জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আমরা পুলিশ সদস্যরাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কে ছাত্র, কে অছাত্র– সেটা তারাই বলতে পারবেন। চাঁদাবাজি কিংবা মারামারি হলে অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিই। তাই আমাদের দোষারোপ করাটা ঠিক নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাবি প্রতিনিধি যোবায়ের আহমদ জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাবির জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজার কনসার্ট ঘিরে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত। ওই সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারীরা এক হয়ে বিবদমান ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মারধরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সংঘাতে ১৫ নেতাকর্মী আহত হন।

গুরুতর আহতদের মধ্যে সৈকতের অনুসারী জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অপূর্ব চক্রবর্তী এখনও ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। ইনানের কাছে সে ঘটনার বিচার দিতে গিয়ে শুক্রবার মধুর ক্যান্টিনে ফের সংঘর্ষে জড়ায় ইনান-সৈকত গ্রুপ। এতে দু’গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত ডাকসুর কার্যকারিতা কমে যাওয়ার পর থেকেই ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। ছাত্রদল যখনই ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করেছে তখনই তাদের মারধর করে ক্যাম্পাসছাড়া করে তারা। এমনকি ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তিসহ অন্য সংগঠনগুলোও তাদের মারধরের শিকার হয়েছে। এখন বিরুদ্ধ মতহীন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নিজেরাই অন্তঃকোন্দলে জড়াচ্ছে; নাম আসছে চাঁদাবাজিতে, বাকির টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন পরিচালককে মারধরে।

ঢাবি ছাত্রলীগের রাজনীতি মূলত শীর্ষ চার নেতার অনুসারী পরিচয়ে চলছে। কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত– প্রতিটি হলেই এই চার নেতার গ্রুপ রয়েছে, আবার হলে গ্রুপগুলোর নেতৃত্ব দেন হলের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা, তাদের পদপ্রত্যাশী বলা হয়। অর্থাৎ এদের মধ্য থেকে আগামীতে হলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে দু’জনকে নির্বাচিত করবেন শীর্ষ চার নেতা। আর গ্রুপগুলো অঞ্চলভিত্তিক নির্ধারিত হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩টি চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারধর ও প্রতিপক্ষের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের নাম এসেছে। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে অন্তত সাতটি। অন্যদিকে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ছিনতাই ও মারধরে ৯টি ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর নাম এসেছে। এসব ঘটনায় ৬টি মামলা হয়। অভিযুক্ত ১১ জনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া ৫টি চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে; এগুলোতে জড়িত থাকায় দুই নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও একজনকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ সময়ে হলের কক্ষ দখল, প্রভাব বিস্তার নিয়ে নিজেদের মধ্যেই অন্তত ১৬ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। অন্তত ৮ বার নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীর ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ।

২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ঢাবি কমিটি ঘোষণা করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ ১ বছর। সে হিসাবে গত ২০ ডিসেম্বর ঢাবি ছাত্রলীগের মেয়াদ শেষ। তবে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আশা দিয়েও ঢাবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেননি শয়ন-সৈকত। হল ছাত্রলীগের কমিটি আলোচনায়ই আসেনি।

জানতে চাইলে তানভীর হাসান সৈকত বলেন, বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। আর অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ সংঘাতে জড়াক এটা আমরা কেউই চাই না। কেউ অপরাধ করলে, দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করলে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পদ নিয়ে কোনো ভাগাভাগি হয়নি। আমরা নিজেরা বসেই এটা ঠিক করে ফেলেছি। দু-এক দিনের মধ্যে আমরা কমিটি ঘোষণা করব।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জবি প্রতিনিধি ইমরান হুসাইন জানান, জবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবষের্র এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর কথাকাটাকাটি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে। এ ঘটনার জেরে কয়েক দিন ধরেই ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন।

এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও মারামারি হয়। পরদিন বুধবার সরস্বতী পূজার দিনে এ বিবাদ বড় সংঘাতে রূপ নেয়। কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ক্যান্টিনের ভেতর লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি করতে দেখা যায় দু’গ্রুপের নেতাকর্মীকে। এতে দু’গ্রুপের কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। মারামারির ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, জবিতে মারামারির ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবিদ ইশরাক নিলয় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তিনি মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন গ্রুপের ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করেন।

অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার গ্রুপের মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে সভাপতি গ্রুপের ৭ জনকে আসামি করে পাল্টা আরেকটি মামলা করেন। মারামারির এ ঘটনায় দায় নিচ্ছেন না শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন। তারা বলেন, এটা ছাত্রলীগের কোনো ঘটনা না। এ দায় ছাত্রলীগ নেবে না।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।