TadantaChitra.Com | logo

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে টাকার বিনিময়ে রেজাল্ট বাণিজ্য

প্রকাশিত : মার্চ ১৮, ২০২৪, ১৯:৪২

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে টাকার বিনিময়ে রেজাল্ট বাণিজ্য

তদন্ত চিত্র: ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)-তে টাকার বিনিময়ে রেজাল্ট বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারের এক কথোপকথনেও বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। এছাড়া রেজাল্ট বাণিজ্যের টাকার লেনদেনের কিছু প্রমাণও প্রতিবেদকের কাছে এসেছে। রেজাল্ট বাণিজ্যের বিষয়টি নিয়ে ডিআইইউ’র শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তোলপাড় চলছে।

রেজাল্ট বাণিজ্যের বিষয়ে জানা যায়, ডিআইইউ’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার রওশন আহমেদ এক শিক্ষার্থীর কাছে রেজাল্ট বিক্রির জন্য ২০ হাজার টাকা নেন। এমনকি পরবর্তীতে এক সংবাদকর্মী যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ দিয়ে তাকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা স্বীকারও করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সম্মতি ছাড়া এই বাণিজ্য হয় না বলেও তিনি জানান। রেজাল্ট বাণিজ্যে শামীম হায়দার পাটোয়ারীর যুক্ত থাকার এই স্বীকারোক্তির বিষয়ে জানতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে চাপ প্রয়োগ করে গোপনে ছাঁটাই করা হয়।

এ প্রতিবেদকের হাতে আসা প্রমাণাদিতে দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থীর সাথে রওশন আহমেদ রেজাল্ট বিক্রি সংক্রান্ত কথাবার্তা বলেছেন। এবং রেজাল্ট পরিবর্তনের জন্য তিনি টাকাও গ্রহণ করেছেন। তিনি একাধিক নাম্বারে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করেছেন।

সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার রওশন আহমেদ বলেন, ‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে রেজাল্টের যদি কোনো কাজ হয় (বিক্রি) তাহলে সেটা আমি করতে পারি না। আমাকে যদি আপনি বলেন, তাহলে আমি চেয়ারম্যান স্যারকে বলব, স্যার এই কাজটা করে দেন। এই কাজে চেয়ারম্যান স্যার জড়িত থাকা লাগবে, চেয়ারম্যানের নির্দেশ লাগবে, এছাড়া হবে না। আমি জাস্ট মাঠপর্যায় থেকে নিয়ে আসি। চেয়ারম্যান স্যার এটা করেন।’ ওই কথোপকথনে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে পাশ করানোর কথা উঠে আসে।

অন্যদিকে ডিআইইউ’র আরেক ছাত্রীর স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, রাত ১টার দিকে ওই ছাত্রীকে মেসেজ দেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সেখানে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা বলেন। এমনকি ওই ছাত্রীকে রাত ১টার পরে কল দিতে চান পাটোয়ারী। কৌশলে তখন ওই ছাত্রী তাকে কল দিতে নিষেধ করে বলেন, ‌‘এখন যে পাশে বোন, পড়ছে। আমরা দুই বোন একসঙ্গে থাকি।’ ওই শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে উঠেই ভোরবেলায় ‘গুড মর্নিং’ মেসেজ দেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এরপর তিনি ওই ছাত্রীকে মেসেজে নানা ধরনের কথাবার্তা বলতে থাকেন। এরপর আরও বহুদিন তিনি মেসেজ দিয়ে ওই ছাত্রীকে উত্যক্ত করেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপের প্রোফাইল পিকচার থেকে নিজের ছবি ডিলিট করে দেন। এরপর বেশ কয়েকবার তার ০১৮১৭-১৫***৯ নাম্বারে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে কল দিলে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতি অনুমোদিত নয় উল্লেখ করে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে ডিআইইউ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার পর থেকেই সারাদেশের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। দেশের অর্ধশতাধিক সাংবাদিক সংগঠন এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নও ডিআইইউ’র এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্তরায় উল্লেখ করে এমন অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিঘ্নে দুর্নীতি ও ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নসহ অপকর্ম করতে সাংবাদিকতাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা উল্লেখ করেছেন।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।