নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামের পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নেয়ামত উল্লাহ ও সাংবাদিক নামধারী বিকাশ চৌধুরীর অপকর্মে দিশেহারা পটিয়ার সাধারণ জনগন। নেয়ামত উল্লাহ তৃতীয় বারের মত পটিয়া থানায় দায়িত্ব পালনকালে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ ধরে এই একই থানায় থাকার কারনে বিভিন্ন অপরাধীর সাথে ওসি নেয়ামত উল্লাহ’র সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।
এ অঞ্চলে চাঁদাবাজি, মামলার বাণিজ্য, দেহব্যবসা, ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের সিন্ডিকেট প্রধান হিসেবে এ দুই ব্যক্তির নাম প্রথমেই উঠে আসে। আবুল বশর।পেশায় একজন ডাক্তার।তিনি জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১২ তারিখ তিনি মোটরসাইকেলে করে পটিয়া থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু মানুষের জটলা দেখে দাঁড়ান।এসময় হঠাৎ কয়েকজন পুলিশ গাড়িসহ তাকে টেনে হিঁছড়ে থানায় নিয়ে যায়। পরে বিকাশ নামে একজন সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে মিথ্যে নিউজ ছাপানো ভয় দেখায় এবং ওসি নেয়ামত মামলার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে। এদিকে রিগান আচার্য নামের এক আইনজীবী জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পূজা শেষে পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নগরীর বাকলিয়া এলাকার বাসায় ফিরছিলেন। ধলঘাট বাজারে একটি হিউম্যান হলার দেখতে পেয়ে থামানোর জন্য সিগন্যাল দেন। এ সময় ওই গাড়ি থেকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নেমে তাকে ঘিরে ধরেন এবং পকেট থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর তাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে পটিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর ওসি নেয়ামত তাকে রুমে নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে তারা টাকা দাবি করেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রেখে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।কিন্তু মামলা দেয়ার পর থেকে ওসি নেয়ামত ও বিকাশ নামে একজন সাংবাদিক তাকে প্রতিনিয়ত নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। সাংবাদিকদের সংগঠন এফবিজেও’র অভিযোগ,গত ২৭ নভেম্বর পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সম্পূর্ণ কাল্পনিক অভিযোগ এনে সম্প্রতি ২জন সাংবাদিককে থানা হাজতে আটকে রাখে পটিয়া পুলিশ। থানা হাজতে আটক থাকা অবস্থায় ওসি নিজে ও তার নির্দেশে এসআই মো. কামাল হোসেন, এসআই এ টি এম আমিনুল ইসলাম, এসআই বাসু দেবনাথ, এসআই কাজী মো. জাহাঙ্গীর আলম, এএসআই আরিফুল ইসলাম ও বহিরাগত কথিত সাংবাদিক দালাল বিকাশ তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এদিকে মুসলিম উদ্দিন নামে একজন বলেন, ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর আদালতে তিনি একটি মামলা করেন, যাতে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগ আনা হয়। আদালত তদন্তের জন্য পটিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু বারবার আদালত থেকে তাগাদা দেওয়া হলেও ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। এভাবে একে একে ধার্য দিনের সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১২-তে। তাই আদালত পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নেয়ামত উল্লাহর বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননা এবং বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না,তার জবাব দিতে বলেছেন। বিপরীত পক্ষ টাকা খেয়ে ওসি নেয়ামত মামলার তদন্তে বিলম্ব করছেন বলেও জানান তিনি। অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা যায়, মায়ানমার থেকে আসা ইয়াবার একটি বড় অংশ সারাদেশে যায় পটিয়ার উপর দিয়ে।আর এ ইয়াবা পাচারের অন্যতম সহযোগী ওসি নেয়ামত ও কথিত সাংবাদিক বিকাশ।এর জন্য তারা মোটা অংকের টাকাও পায় মাদক কারবারীদের কাছ থেকে।শুধু তাই নয়,তারা এলাকায় যুব সমাজ ধ্বংস ও সমাজকে নষ্টের জন্য মাদক কারবারীদের শেল্টারও দেয়। আর এসব অপকর্মের জন্য তারা স্থানীয় এমপির নাম ব্যবহার করে। অভিযোগ রয়েছে, পটিয়া হাসপাতালের পূর্বদিকে ওয়ালের পাশে পরিত্যক্ত একটি সরকারি কোয়াটারে পতিতাদের নিয়ে রমরমা দেহব্যবসা চলছে এই ওসি ও বিকাশের তত্ত্বাবধানে। আর এভাবে দুই জনই খুব দ্রুত গড়ে তুলেছেন টাকার পাহাড়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কথিত সাংবাদিক বিকাশ একটি জাতীয় পত্রিকার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ওসির মাধ্যমে অন্যায়ভাবে মানুষকে থানায় আটকে দেয়।তারপর দালালি করে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নেয়। এছাড়া কারো শত্রুতা থাকলে বা জায়গা জমি জোরপূর্বক দখলের জন্যও এই বিকাশ ওসি নেয়ামতের সহযোগিতায় নিরীহ মানষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে।আর এভাবেই চলতে থাকে তাদের মামলা বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম। তাই এলাকার সাধারন জনগন ওসি নেয়ামতকে চাকরি থেকে প্রত্যাহার সহ সাংবাদিক বিকাশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
তবে এ ব্যাপারে জানতে ওসি নেয়ামত উল্লাহকে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
‘ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত’
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের......বিস্তারিত