TadantaChitra.Com | logo

২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাদক ব্যবসা করেই কোটিপতি কসাই খলিল!

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ১৭:৪২

মাদক ব্যবসা করেই কোটিপতি কসাই খলিল!

তদন্ত চিত্রঃ রাজধানীর পল্লবী এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মাদকস্পট পরিচালনা করে ফুটপাতের কসাই এখন কোটিপতি বনে যাওয়া এক রাঘববোয়ালের খবর পত্রপত্রিকায় শিরোনাম হচ্ছে। তবুও তার টনক নড়েনি। পুলিশ তার হাতের মুঠোয় এমন কথা নিজেই বলে বেড়াচ্ছে এলাকায়। তার অনেক ক্ষমতার দাপটও আছে। তিনি পল্লবী এলাকার কসাই খলিলুর রহমান।
অভিযোগ রয়েছে, তার বিরুদ্ধে এসিড নিক্ষেপ ও হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা চলমান। পল্লবী এলাকার বাউনিয়াবাদ বেড়িবাঁধ এলাকার কসাই হিসেবে পরিচিত খলিলুর রহমান গত ৬ থেকে ৭ বছর আগেও বাউনিয়াবাদ বাজারে মাংস বিক্রি করতেন। এখন তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই একাধিক বাড়ি ও মার্কেটের মালিক বনে গেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি পল্লবী থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় মাদকের স্পটও পরিচালনা করেন। আর এসব মাদক স্পটগুলো পল্লবী থানার পুলিশের সহযোগিতায় চলছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। বাউনিয়াবাদ এ ব্লক থেকে সি ব্লক পর্যন্ত লালমাটিয় বেইলী ব্রিজ, বাউনিয়াবাদ বাজার মাঠ, বাউনিয়াবাদ মহিলা মাদরাসার পেছনে, বেড়িবাঁধ, কালসি কলাবাগান, কালসি কবরস্থানের পাশসহ প্রায় ২০টি স্পটে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, গত ২০০৮ সালের ২৭ আগস্ট লিপি আক্তার নামে ৫ মাসের অন্তঃসত্তা এক গৃহবধূকে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সন্ত্রাসী খলিলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী সুলতান আহম্মেদ, শাহ আলম, স্বপন, হোসেন ও ইউনুসসহ মারধর ও হত্যা চেষ্টা চালায়। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় লিপি আক্তারের বোন রেহানা বাদি হয়ে পল্লবী থানায় একই বছরের ৩১ আগস্ট ৭৮ নম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ওই মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য সন্ত্রাসীরা মামলার বাদিকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে গত ২০০৮ সালের ১ নভেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে সন্ত্রাসীরা কুর্মিটোলা ক্যাম্পের পাশে নতুন রাস্তায় একটি চায়ের দোকানের সামনে সন্ত্রাসী খলিলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা মামলার বাদি রেহানার গায়ে এসিড নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় রেহানার স্বামী মো. ইসমাইল বাদি হয়ে একই বছরের ২ নভেম্বর এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ এর ৫(খ)/৭ ধারায় মামলা দায়ের করে।

সূত্র জানায়, পল্লবী এলাকায় মদ, গাঁজা, হেরোইন ও ইয়াবার ব্যবসা রমরমা চলছে। এলাকার বলতে গেলে একপ্রকার প্রকাশ্যেই এসব ব্যবসা চালানো হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বেই এসব মাদক স্পটগুলো চালানো হচ্ছে। আবার পুলিশের কতিপয় অসৎ সদস্য এবং সোর্সদের মাধ্যমেও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে পল্লবী থানা পুলিশের সোর্স আব্দুল খালেকের মাধ্যমে প্রতিমাসে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয় বলে মাদক ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সূত্রে জানা গেছে, থানার একটি টিমকে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, ৫ থেকে ৬ বছর আগেও খলিল ৮ থেকে ১০ কেজি মাংস কিনে এনে বাউনিয়াবাদ বাজারে বিক্রি করত। এখন এলাকায় মাদক ব্যবসা, মানুষের জায়গা দখল ও সরকারি জায়গায় দখল করে দোকান বানিয়ে ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

এখানেই শেষ নয়, লালমাটিয়া টেম্পু স্ট্যান্ডের জনৈক কামাল মাস্টারের বাড়ির পাশে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা দিয়ে একটি বাড়ি ক্রয় করেছেন। এছাড়া পলাশনগর এলাকায় ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় একটি বাড়ি ক্রয় করেছেন। আর এলাকার একটি জায়গা মাটি ভরাটের জন্য নিয়ে সেই জায়গাও দখল করে নিজেই মার্কেট নির্মাণ করেছেন। এ জায়গা ইব্রাহিমপুরের জনৈক সুজার বলে স্থানীয়রা এ প্রতিবেদককে জানান।

এলাকা সূত্রে জানা গেছে, পল্লবীর এলাকায় সরকারি জায়গায় দখলের পর একটি মার্কেট করা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৫০ টি দোকান ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা করে অগ্রিম জামানত নিয়ে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাড়া আদায় করছেন। এছাড়া দোকানগুলোতে যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে, তাও অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। এসব অবৈধ আয়ের ব্যাপারে এলাকার সন্ত্রাসী ইসমাইল, আব্দুর রহমান, তার স্ত্রী বিথি আক্তার। আর মাদকের স্পটগুলো পরিচালনা করছেন, সন্ত্রাসী ফরিদ, আলাউদ্দিন, আওয়াল, কামাল, ইউসুফ, আমির ও রুস্তম।

আরেকদিকে বাউনিয়াবাদ মাদ্রাসার পেছনের মাদক স্পট পরিচালনা করছেন, শাহালম, ইউসুফ। আর কলাবাগান বস্তির স্পটটি বাবুল ও পুলিশ সোর্স মনির।

এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো-উপঅঞ্চলের সহকারী পরিচালক খুরশিদ আলম জানান, আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। এই অভিযান চলমান। যতবড় প্রভাবশালীই হউক না কেন, মাদক ব্যবসায় জড়িতদের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে। চলবে, বিস্তারিত তদন্ত চিত্রে পত্রিকার পাতায়।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।