ঢাকা: ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে দেশের বাজারে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় আবারো বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে দেশের বাজারে দফায় দফায় বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। গত দেড় মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে বর্তমানে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। বাজার মনিটরিং কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে দেশটিতে বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ১০ রুপিতে। পেঁয়াজের দাম এতো কমে যাওয়ায় দেশটির কৃষকরা তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে সরকারকে চাপ দিতে শুরু করে। ফলে ইতোমধ্যে পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত সরকার।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, কৃষকদের চাপের মুখে কর্ণাটকে উৎপাদিত পেঁয়াজের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে দেশটির হর্টিকালচার কমিশনারের অনুমতি মিলেছে কৃষকদের। গত ২৮ অক্টোবর থেকে চেন্নাই সমুদ্রবন্দর দিয়ে প্রতি চালানে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টন পেঁয়াজ রফতারি করছে সেখানকার কৃষকরা। তাদের পাশাপাশি কলকাতার ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে রাজ্য সরকারকে চাপ দিচ্ছেন।
তারা মনে করেন, এখন আর পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা রাখার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। মহারাষ্ট্রের নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে। পেঁয়াজের বাজারে ধস নেমেছে। তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান বলেন, “ভারতের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় পেঁয়াজ আটকে রাখতে পারবে না। কারণ এটি পচনশীল পণ্য। ভারতের এমন সিদ্ধান্তে শিগগরিই বাংলাদেশ পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।”
এদিকে দেশের বাজারের সিন্ডিকেট পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের খুঁজতে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অভিযানে তারা চট্টগ্রামের কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখতে পেয়েছে, ৪০ টাকা দরে আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। এসব পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়।
মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তহিদুল ইসলাম জানান, বন্দর নগরী চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ কয়েকটি বাজারে অনুসন্ধান করে পেঁয়াজ বাণিজ্যে শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। অভিযানে ১৬ জনের একটি সিন্ডিকেট চক্র খুঁজে পেয়েছেন তারা। এই সিন্ডিকেট চক্র মিয়ানমার থেকে আনা ৪০-৪২ টাকার পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। অথচ আমদানি করা পেঁয়াজের যাবতীয় খরচ হিসাব করলে পেঁয়াজের মূল্য ৫০ টাকার বেশি হওয়ার সুযোগ নেই বলেন ম্যাজিস্ট্রেট তহিদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বছরে গড়ে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ টন। এরমধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ১৪ থেকে ১৫ টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ১৬ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের শুরু থেকে দেশি নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করবে। ওই সময়ে দাম আরও কমে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
‘পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু’
রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।......বিস্তারিত