TadantaChitra.Com | logo

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনায় স্তব্ধ বিশ্ব

প্রকাশিত : মার্চ ২৮, ২০২০, ১৫:২২

করোনায় স্তব্ধ বিশ্ব

তদন্ত চিত্রঃ কয়েকদিন আগেও রাশিয়া হুমকি দিয়েছে আমেরিকাকে আবার আমেরিকাও হুমকি দিয়েছে রাশিয়াকে পারমানবিক বোমা মেরে রাষ্ট্র ধ্বংস করে দিবে। এমন হুমকি শুধু রাশিয়া, আমেরিকা ও চীন, পাকিস্তান ভারতই দেয় নি। বিভিন্ন রাষ্ট্র-ই তাদের প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রকে সকাল-সন্ধ্যা এমন হুমকি দিত। বড় বড় রাষ্ট্রের প্রধানদের হুমকিতে ছোট ছোট রাষ্ট্র গুলো কেঁপে উঠতো হরহামেশাই।

আবার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উন বলেছিলেন, তার টেবিলে পারমানবিক বোমা উৎক্ষেপণের সুইচ রয়েছে। সেজন্য আমেরিকা কখনোই যুদ্ধ শুধু করতে পারবেনা।

তথ্যানুযায়ী পরমাণু বোমার দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যমতে এখানে “চার হাজার পাঁচশত” পারমানবিক বোমা আছে। যার মধ্যে “এক হাজার নয়শত” বোমা সক্রিয়। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। এই দেশটিতে বর্তমানে “চার হাজার নয়শত” বোমা আছে। তার মধ্যে “এক হাজার সাত শত আঁশি” টি বোমা সক্রিয়। তৃতীয় স্থানে ফ্রান্স। এই দেশে পরমানু ‘ওয়ারহেড’ আছে তিনশত এর মতো। যার মধ্যে অন্তত ২৯০ টি সক্রিয় বোমা। দেশটির বেশির ভাগই  পারমানবিক বোমা রয়েছে সাবমেরিনে। এছাড়াও দেশেটির অন্তত একটি সাবমেরিন সবসময় পারমানবিক বোমা নিয়ে টহল দেয়। চতুর্থ স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। ২১৫ টি পারমানবিক বোমা রয়েছে এই দেশে। যার মধ্যে ১৫০ টি বোমা সক্রিয়।

পারমানবিক বোমার দিক দিয়ে চীনের অবস্থান পঞ্চম। ২৬০ টি পরমানু বোমা আছে চীনে। তবে এই দেশটির সক্রিয় পারমানবিক বোমার সংখ্যা অজানা। ষষ্ঠতে রয়েছে পাকিস্তান। এই দেশে রয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টি পারমানবিক বোমা। সাম্প্রাতিক সময়ে ভারতের সাথে পারমানবিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে এমন আশঙ্কায় পরমাণুর সংখ্যা বাড়িয়েছেন দেশটি।

পারমানবিক বোমার তালিকায় সপ্তমে ভারত। এখানে রয়েছে ১১০ থেকে ১২০ টি পরমাণু বোমা। অষ্টম অবস্থানে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। বিশ্বে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিয়ে সবচেয়ে ধোঁয়াশা আছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার কাছে ১০ টির কম পরমাণু বোমা রয়েছে। এছাড়াও নবম স্থানে রয়েছে ইসরায়েল। এই দেশটি পরমাণু সম্পর্কে তেমন কিছু জনসমক্ষে প্রকাশ করে না। ধারণা করা হচ্ছে ৬০ থেকে ৪০০ টির মতো পরমাণু ‘ওয়ারহেড’ আছে।

এসব রাষ্ট্রের এই পারমানবিক বোমায় তর্জেগর্জে উঠতো প্রতিদিন। পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে হতো নিয়মিত এক রাষ্ট্র আরেক রাষ্ট্রকে উড়িয়ে দিবেন বলে হুমকি দিয়েছে। আজ তাদের হুমকি ধামকি থামিয়ে দিলেন মহামারি এক ভাইরাসে। পুরো বিশ্ব আজ স্তব্ধ।

 

মহামারি এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। প্রতিদিন তাতে হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে কিংবা আক্রান্ত হচ্ছে। বৈশ্বিক এই মহামারি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়; সব সারির দেশ। সর্বশেষ চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (সিএনএইচসি) ও অন্যান্য তথ্যসূত্রের হিসাব বলছে, করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা ২৮ হাজার ২৬৯ আর আক্রান্ত ৬ লাখ ১৪ হাজার ৮১১ জন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুস্থ্য হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৬ জন। এই মহামারিতে বিশ্ব আজ স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। মহামারি এই ভাইরাসের কারণে বিশ্বের হাজারো মানুষের প্রতিটি জনপথ আজ জনশূণ্য।

মহামারি এই ভাইরাসটি প্রথমে চীনে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সংখ্যাটা ১ লাখ ০৪ হাজার ২৭৭ জন। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭০৪ জনের। এদিকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ১৩৪ মৃত্যু নিয়ে সবার উপরের স্থানটি ইতালির। সেখানেও আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৪৯৮ জন ছাড়িয়ে গেছে।

 

করোনায় যখন গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত তখন কম আর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকা দিয়ে লাভ কি। তবুও ইতালির মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছে স্পেনের। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও  ৮৩২ জন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন। দেশটিতে করোনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৯০ জনে।

 

করোনায় প্রাণহানিতে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি এবং স্পেন। গত বৃহস্পতিবার স্পেনে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। লকডাউন চলছে ভারত ও ইতালিতেও। তবুও লাশের লাইন ছোট হচ্ছে না। ফ্রান্সেও চলছে লকডাউন। মৃত্যুর সংখ্যাটা এখন ১ হাজার ৯৯৫।

 

ইউরোপের আরেক কেন্দ্র যুক্তরাজ্যও লকডাউন। সেখানেও আক্রান্তের পাশপাশি মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটিতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা জনবহুল নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের। করোনায় ৭৫৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে; আক্রান্তও প্রায় ১৪ হাজার ৫৪৩ জন। তবে মহামারির মধ্যেও নতুন করে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।

 

ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব যে উহানে শুরু হয়েছিল সেখানে বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার হচ্ছে ধীরে ধীরে। চীনে নতুন করে স্থানীয়ভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা টানা কয়েকদিন ছিল না। যারা আক্রান্ত হচ্ছিলেন, তারা সবাই বিদেশ ফেরত। তবে ফের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় দ্বিতীয় দফা বিষ্ফোরণের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

 

ব্যাপকভাবে বিস্তার ছড়ানো দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে জার্মানির নামও। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩৯৯ জনের। যা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। মহাদেশটিতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে করোনায়।

 

এছাড়া ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতেও শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যেমন নেদারল্যান্ডসে ৬৩৯, বেলজিয়ামে ৩৫৩, সুইজারল্যান্ডে ২৪২, সুইডেনে ১০৫, পর্তুগালে ১০০, অস্ট্রিয়ায় ১৪, ডেনমার্কে ৬৫ ও আয়ারল্যান্ডে ২২, রোমানিয়ায় ২৯ এবং গ্রিসে ২৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা।

 

ব্রাজিলে সেই সংখ্যাটা ৯৩ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকোপ শুরু হলেও দেশটি তা নিয়ন্ত্রণ করেছে ভালোভাবেই। তবে সেখানেও ১৪৪ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ায় ১০২ এবং জাপানে ৪৯ জন করোনায় মারা গেছেন।

প্রতিবেশী ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩৩ ছাড়ানোর পাশপাশি, মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ২০ জনে। দেশটি এখন ২১ দিনের লকডাউনে আছে। এছাড়া পাকিস্তানে আক্রান্তের প্রায় ১ হাজার ৪ শত ১৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১২ জন মারা গেছেন। ফিলিপাইনে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮ জন; আক্রান্ত ১ হাজার ৭৫ জন।

এদিকে বাংলাদেশে সবশেষ ৪ জনকে নিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে; এরমধ্যে ৫ জন মারা গেছেন। এছাড়া ১৫ জন সুস্থ বলে জানিয়েছে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা কেন্দ্র। দেশজুড়ে অঘোষিত এক লকডাউন চলছে। আপাতত এর মেয়াদ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।