TadantaChitra.Com | logo

১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যাত্রীদের সেবাই আমাদের কাম্য…আব্দুল ওয়াদুদ মাসুম

প্রকাশিত : মার্চ ২৫, ২০১৯, ১৯:৪৭

যাত্রীদের সেবাই আমাদের কাম্য…আব্দুল ওয়াদুদ মাসুম

পরিবহন খাতের একজন ব্যবসায়ী তেতুলিয়া পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ মাসুম সম্প্রতি এই ব্যবসায়ী হয়েছেন তদন্ত চিত্রের মুখোমুখি বলেছেন নিজের ও পরিবহন খাত নিয়ে নানান কথা। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নুরে আলম পারভেজ।

তদন্ত চিত্রঃ আপনার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক বিষয়ে আপনি কি বলবেন?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক তবে এই মুহুর্তে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নেই। বর্তমানে নিজেকে পরিবহন ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। তাই ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত আছি। ছাত্রজীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রনিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সাবেক সফল বানিজ্যমন্ত্রী জননেতা তোফায়েল আহম্মেদ এর হাত ধরে রাজনীতির পথচলা।

তদন্ত চিত্রঃ সড়ক দুর্ঘটনা তো বাড়ছেই. সেটা কেন?
আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ আপনি অবশ্যই ‍অবগত আছেন যে, দক্ষ ড্রাইভার পাওয়া খুব কষ্টকর। আপনার আমার ছেলে তো আর এই গাড়ীর চালাবে না। আমাদের দেশে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু গাড়ী চালকদের কোন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নাই। তাই আমরা দক্ষ গাড়ী চালক পাই না। আর এই অদক্ষ ড্রাইভারদের কারনে এবং যাত্রীদের অসচেতনামূলক চলাফেরার কারনে দুর্ঘটনা হয় এমনটাই মনে করি। তবে উভয়েই আইন মেনে চলা উচিৎ।

তদন্ত চিত্রঃ অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা নেই?
আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ অসাধারণ একটি প্রশ্ন, আমাদের দেশে ৩৫% রাস্তা থাকার কথা কিন্তু সেখানে ৭%-৮% রাস্তা আছে। গাড়ী চালক বেপরোয়া মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যাত্রীর তাড়াহুড়া থাকবে না, এবং আরো একটা বিষয়, মাঝে মাঝে যানজট থাকার কারণে যাত্রীদের অফিসের সময় বাচানোর জন্য ফ্রি রোড পেলে গতিবৃদ্ধি করে চালানো হয়ে থাকে এমনটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিট মিটার আছে। সেটি কিন্তু প্রয়োগ হচ্ছে না। আর এটি প্রয়োগ করলেই যে সব ঠিক হয়ে যাবে তাও নয়। তবে স্পিট মিটারের যথাযথ ব্যবহার করে গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গতি নিয়ন্ত্রণে আসলে যে দুর্ঘটনা বন্ধ হয় তা কিন্তু নয়। সব কিছুর মূলে সিস্টেম ঠিক করতে হবে।

তদন্ত চিত্রঃ পরিবহন ব্যবসায় সফল হওয়া যায় কিভাবে?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ যাত্রীদের সেবাই আমাদের কাম্য আর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছে দিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে পরিবহন ব্যবসা বলতে কিছুই নেই। দেশ ও জাতির সেবা করা মাত্র। আপনি জানেন, যেকোনো ব্যবসার মূল হচ্ছে সততা। দেশের প্রচলিত সব নিয়মকানুন মেনে ধীরস্থিরভাবে ধাপে ধাপে এগিয়ে গেলেই ব্যবসায় সফলতা আসবে। তড়িঘড়ি করলে কোনোদিন ব্যবসায় সফলতা আসবে না। অন্তত পরিবহন ব্যবসায় কখনো তা সম্ভব হবে না। নতুন যারা আসবে অনেক মূলধন নিয়ে এই ব্যবসায় আসতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিজ আর পরিবহন ব্যবসা এক নয়, দুটো ভিন্ন জিনিস। ইন্ডাস্ট্রিজ হলো কয়েকটি তলার মধ্যে সীমাবদ্ধ। দুটি দারোয়ান দিয়ে হাজার কোটি টাকা ইনভেস্ট করা যায়। অন্যদিকে পারবহনখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা রাস্তায় থাকে। সুতরাং নতুন যারা এখানে আসবে, তারা এ পথে আসতে অনেক ভয় পায়। আমি এই পর্যন্ত আসতে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি।

তদন্ত চিত্রঃ সড়কে চালকসহ সব পরিবহনকর্মী যাতে সতর্ক হয়ে কাজ করে, যাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে, জন্য আপনারা কি করছেন?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ আমাদের পরিবহন সংগঠন “ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি”র সাধারন সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন কন্টাক সিস্টেম কোন গাড়ী চালানো হবে না। কাউন্টার থাকবে, থাকবে টিকেটিং সিস্টেম। এ ব্যাপারে মেয়র মহোদয়ের সাথে সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আমাদের নেতা খন্দকার এনায়েত ‍উল্লাহ সাহেব কথা বলেছেন। মেয়র মহোদয় আমাদের এ নেতাকে আশ্বস্ত করেছেন পয়েন্টে পয়েন্টে যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা করবেন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও আমি বলবো, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য শুধু ড্রাইভার-সুপারভাইজারের ভূমিকা মুখ্য বিষয় নয়। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা ভূমিকা আছে। রাস্তা যারা তৈরি করে তাদেরও একটা ভূমিকা আছে। কোন জায়গায় রাস্তা বাঁক হবে, ডিভাইডার কোথায় দিবে। সবারই একটা ভূমিকা আছে।
শৃঙ্খলার মধ্যে যারা থাকবে তাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আর যারা উচ্ছৃঙ্খল তারাই পদে পদে বিপদে পড়ে। আমাদের বাসকর্মীদের আমরা কাউন্সিলিং করি, তোমাদেরও ছেলেমেয়ে আছে, গাড়ি ঠান্ডা মাথায় চালাবে। যেখানে-সেখানে ওভারটেক করবে না। তবে উভয়েই শৃঙ্খলা মেনে চলবে এমনটাই কাম্য।

তদন্ত চিত্রঃ চালক, বাসকর্মী, বাসমালিক যাত্রীদের সম্পর্কোন্নয়নের জন্য কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ সেমিনার করা যেতে পারে, টেলিভিশনে খবরের মধ্যে বিজ্ঞাপন দেওয়া যেতে পারে। ‘সেভ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচার করা যেতে পারে। মাতলুব সাহেবের ‘একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’ স্লোগান প্রচার করা যেতে পারে। শর্ট ফিল্ম দেখানো যেতে পারে। যেখানে দেখা যাবে, একটি দুর্ঘটনায় লোক পঙ্গু ও নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এগুলো করলে অনেক কাজে আসবে। আমরা মালিকরাও যাত্রীসেবা কত ভালো দিতে পারি, এর জন্য আমাদেরও অনেক কাজ করে যেতে হবে।

তদন্ত চিত্রঃ সড়ক নিরাপত্তায় সরকারের আরো কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ সড়ক নিরাপত্তায় সরকারের অনেক কাজ করতে হবে। বিশ্বমানের ড্রাইভিং স্কুল/ইনস্টিটিউট করা উচিৎ এবং বিআরটিএ অনিয়ম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যেমন কিছু কিছু অদক্ষ ও অযোগ্য চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আরো কঠোর হতে হবে। মোট কথা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে সঠিক উদ্দ্যেগ অথবা পদক্ষেপ নিলেই এটা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। আরেকটা বিষয়, বিআরটিএ এর কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে বাহিরের কিছু দালালচক্র সম্পৃক্ত থাকার কারনে দক্ষ মেধাবী ড্রাইভার হয়রানী স্বীকার হয় এবং লাইসেন্স পেতে দেরি হয়। আর এই অসাধু কর্মকর্তা ও দালালদের মাধ্যমে খুব সহজে অদক্ষ ও অযোগ্য ব্যক্তি ট্রেনিং বিহীন পরিক্ষা ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যায়। এদের বিরুদ্ধে সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর কঠোর হতে হবে। মনে রাখতে হবে একজন দক্ষ ড্রাইভারই পারে নিরাপদ সড়ক উপহার দিতে। এছাড়াও আরো একটু কাজ করতে হবে। তা হল, খারাপ রাস্তা, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো ভালো করে দিতে হবে। বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় ডিভাইডার দেওয়া, যে সব স্কুল-কলেজের সামনে বাঁক আছে সেখানে সিম্বল দেওয়া, মেইন রাস্তায় ওঠে আসার জায়গায় সিম্বল দেওয়া। দেখেন এখন ঢাকা শহরে সরাসরি কোথায় ইউটার্ন নেওয়া যায় না। মিশুক মনির যেখানে মারা গেছেন, সেখানে বাঁকটি ঠিক করে দেওয়ায় আর সেখানে দুর্ঘটনা হয় না। ব্লাক স্পটগুলোতে কাজ করলে অবশ্যই একটা সুফল আসবে।

তদন্ত চিত্রঃ ট্রাফিক বিভাগের সেবা নিয়ে কি বলবেন?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ ট্রাফিক বিভাগ দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তবে লাভ কি আমরা সচেতন না হলে। আমাদের সচেতন হতে হবে এবং ট্রাফিক বিভাগকে শৃঙ্খলায় রাখতে ট্রাফিক আইন মেনে চলে সহযোগিতা করতে হবে। যেমন চলাফেরার সময় ফুটওভার ব্রিজ, জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি সিগনাল মেনে চলতে হবে।

তদন্ত চিত্রঃ সব আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি ভাংচুরে গিয়ে ঠেকে, নিয়ে কী বলবেন?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ এটা সামাজিক অবক্ষয়। ফুটবল খেলায় হেরে গেছে, দেখেন রাস্তায় গিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করছে। স্বামী-স্ত্রী মহল্লার মধ্যে গন্ডগোল লাগছে দেখেন রাস্তায় গিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করছে। তারপরও এই সব বিষয় সয়ে গেছে, এসবের মধ্যেই আমাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এই মূহুর্তে আমার মনে পড়ছে হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে তিনি নিজের শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও দেশকে ভালবেসে গিয়েছেন। তাই আমরা সবাই তার আদর্শকে অনুসরন করে দেশকে ভালবাসা উচিৎ। এছাড়া পরিবহন সেক্টর তো দেশের সেবায় নিয়োজিত। সেই সেবায় নিয়োজিত গাড়ী ভাংচুর করা উচিৎ নয়। আমার অনুরোধ থাকবে দেশকে ভালবেসে দেশ প্রেমিক হোন, দেশের সম্পদ নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন।

তদন্ত চিত্রঃ অনেক পরিবহনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। এই সকল অভিযোগের বাস্তবতা কতটুকু?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে নিজেকে জড়িত রাখতে পারি। কিন্তু কোন বাস ট্রাক বা পরিবহন ব্যবস্থাপনা তো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। কিন্তু দেখবেন যেকোন রাজনৈতিক কর্মসূচীর অসফল পরিসমাপ্তি ঘটে পরিবহনের উপর দিয়ে। হরতাল, ধর্মঘট, মিছিল মিটিং-এর সমস্যা সবখানেই অত্যাচার চলে বাস-ট্রাক বা পরিবহনের ভাংচুরের মধ্য দিয়ে। বিগত বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও তার একটি জ্বলন্ত উদাহারন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল নয় পাড়া মহল্লা থেকে খেলার মাঠের সমস্যার ক্ষোভও পড়ে বাস-ট্রাক ভাংচুরের মধ্যদিয়ে। অনেকে মনে করে আমি ব্যক্তিগতভাবে বর্তমান রাজনৈতিক দলের আদর্শকে ধারন-লালন করি সেকারনে পরিবহনের নামে নানান অভিযোগ করে থাকেন। আমি তাদের এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলবো, যারা পরিবহনের বিরুদ্ধে কটুকথা বলেন তাদের পরিবারিক ও ব্যক্তি ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে তাদের ৭১এ কালো ভুমিকা। দেশের বিরুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যারা বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তারাই মূলতঃ এসব অবান্তর অভিযোগ করে থাকে। কোন পরিবহন কোম্পানীই রাজনৈতিকভাবে কটু প্রশ্ন তোলার মতো কোন কাজ কখনই করতে পারে না, করেও না। সরকারের ক্রান্তিলগ্নে সরকারের পাশে আমরা ছিলাম, আছি এবং থাকবো। যখনই সরকার বা গার্মেন্টস সেক্টর এর গাড়ী প্রয়োজন হয়েছে তখনই গাড়ী দিয়েছি শুধুমাত্র দেশকে ভালবাসার কারনে, এখানে রাজনীতি করার কিছু নেই। তবে রাজনীতি হলো ব্যক্তিমত, ব্যক্তিচিন্তা।

তদন্ত চিত্রঃ বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কেমন দেখছেন?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ বর্তমানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানে সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ আজ অগ্রগতির রোডম্যাপে। তার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে মহাপরিকল্পনা রয়েছে বর্তমানে অনেকটা দৃশ্যমান। পদ্মা সেতুর পাশাপাশি মেট্রোরেল হচ্ছে। কোরিয়া, জাপান থেকে ডিজিটাল উন্নতমানের বিভিন্ন ব্যান্ডের গাড়ী আসছে। সময়ের পরিবর্তনে সব কিছুই পরিবর্তনশীল এটাই স্বাভাবিক।  পাশাপাশি আমাদের পরিবহন নেতা খন্দকার এনায়েতুর রহমানের দিক নির্দেশায় পরিবহন জগত আজ উন্নত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও ট্রাফিক বিভাগের আন্তরিকতায় ধীরে ধীরে পরিবহন ব্যবস্থাপনা উন্নত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা আমরা সকলের সহযোগীতায় যাত্রীদের দিতে পারবো বলে মনে করি।

তদন্ত চিত্রঃ সিটিং সার্ভিস নিয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার অবস্থান কি?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ সিটিং সার্ভিস বলতে কিছুই নেই। এ সমস্যা শুধুমাত্র বাস পরিচালনাকারী কোম্পানীর নয়। সমস্যাটি বহুমাত্রিক। সিটিং সার্ভিসকে অনেকে চিটিং সার্ভিস বলেন। কথাটি শুনলে আমার নিজের খুবই খারাপ লাগে। কিন্তু এ সমস্যাটিকে যদি বিশ্লেষন করি তাহলে বলতে হয়, আমাদের অনেক যাত্রী তার নিজের সুবিধা মতো জায়গায় নামতে পছন্দ করেন। নির্দিষ্ট ষ্টপেজে অনেকে নামতেও চায়না। যদি তাদের সুবিধামতো জায়গার না বাস থামানো হয় অনেক ক্ষেত্রে বাস চালক ও কন্ট্রাক্টরকে গালিগালাজ করতে দ্বিধা করেনা। এসকল যাত্রীদের জন্য আজ আমাদের যাত্রীসেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। আমরা সবাই সচেতন হলেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। যত্রতত্র যাত্রীদের উঠানামা বন্ধ করতে পারলেই পরিবহনে যাত্রীসেবা আরো বৃদ্ধি পাবে।

তদন্ত চিত্রঃ বর্তমানে মালিকদের অভিযোগ তারা ঠিকমতো ব্যাংক কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনা। এটি কতটুকু সত্যি? সত্যি হলে সমস্যার কারন কি?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ এটা একটি জটিল প্রশ্ন করেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে আনি দেখেছেন মেট্রো রেলের কাজ অনেকটাই দৃশ্যমান। আমরা এই গাড়ীগুলো ক্রয় করি সাধারনত কিস্তির মাধ্যমে। বাংলাদেশে দুটি কোম্পানি লিজিং এর মাধ্যমে দেয়। একটি হল রেঙ্কস মোটর লিঃ আরেকটি নিটল টাটা মোটরস। মেট্রো রেলের কাজ চলার কারনে রাস্তা কিছুটা সরু হয়ে পড়েছে আবার এদিকে বর্ষা আসলেই রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সুতারাং এই সরু রাস্তা দিয়ে গাড়ী চলাচলের কারনে আমাদের ট্রিপ কমে গিয়েছে। তাই দিন শেষে আমরা গাড়ী মেইনটেন্সে কস্ট/খরচ মিলিয়ে মাস শেষ হলে কিস্তি দিতে পারি না। আপনার মাধ্যমে আমি লিজিং কোম্পানীদেরকে অনুরোধ করবো, মেট্রো রেল আওতায় চলাচল গাড়ীগুলোকে সুদ মওকুফ করে মালিকদেরকে গাড়ীগুলো বুঝিয়ে দিতে। এটা করলে তারাও দেশ ও দেশের সেবার উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা রাখবে।  এছাড়াও আরো কিছু কারন রয়েছে। তা হল কিস্তি পরিশোধে সমস্যার মূলে রয়েছে ব্যাংকের অতিরিক্ত সুদের হার। পাশাপাশি বাসের খুচরা যন্ত্রাংশের অতিরিক্ত দাম। ব্যাংক সুদের হার যদি আরও কিছুটা কামনো যেতো এবং খুচরা যন্ত্রাংশের মূল্য কম হলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন বাস মালিক তার সকল খরচের পর কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারতো।

তদন্ত চিত্রঃ সাধারন মানুষের ধারনা পরিবহন জগতের সবাই অশিক্ষিত,  সাধারনের ধারনা সম্পর্কে আপনি কি বলবেন?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ পরিবহন ব্যবসা বলতে এখনও অনেকেই মনে করেন বেশিরভাগ অশিক্ষিত, বা কম শিক্ষিত ও নেশাগ্রস্থ অথবা বখাটে প্রকৃতির লোকজনই এ ব্যবসা পরিচালনা করেন। কিন্তু বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে তা কিন্তু মোটেই নয়। আজ অনেক উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী এবং উন্নত মনোভাবাপন্ন মানসিকতার লোকজন এ পেশায় নিজেকে সংজোযন করেছেন। যে কারনে দিন দিন উন্নত হচ্ছে পরিবহন বিভাগ। শুধু ব্যবসা নয় জনসেবার মানসিকতায় আজ অনেকে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন এ পেশা দিয়ে। যাত্রীসেবার মান পরিবহনের মান এবং নতুনত্ব উন্নত করছে এ ব্যবসার সকল বিভাগকে।

তদন্ত চিত্রঃ পরিবহন ব্যবসা নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যাত্রীদের আধুনিক মানের গাড়ী দিয়ে সেবা দেওয়াই আমার লক্ষ্য। এছাড়াও আমার কিছু ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে। পরিবহন ব্যবসাটাকে পরিচ্ছন্নভাবে পরিচালনার জন্য পাশাপাশি রাস্তায় দূঘটনা রোধে চালক, হেলপার ও বাস মালিকদের মনোত্বাত্বিক উন্নয়নে কাজ করছি। আমার পরিবহনের বাসগুলোকে ডিজিটাল নজরদারিতে অতিদ্রুত নিয়ে আসবো। আমি আশাকরি এ প্রচেষ্টাও অতিশীঘ্র বাস্তবায়ন করতে পারবো।

তদন্ত চিত্রঃ আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য আপনাকে তদন্ত চিত্রের পক্ষ হতে আন্তরিক ধন্যবাদ  

আব্দুল ওয়াদুদ মাসুমঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।