ভোলা জেলা প্রতিনিধি: একের পর এক ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলেও দুর্যোগপ্রবণ জেলা ভোলার মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আজও গড়ে ওঠেনি চাহিদা অনুযায়ী সাইক্লোন শেল্টার। গবাদি পশুর জন্য গড়ে ওঠেনি পর্যাপ্ত মুজিব কেল্লাও। কিছু কিছু আশ্রয়কেন্দ্র দূরবর্তী হওয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঝুঁকিতে থাকা ওইসব মানুষ বাড়ি ছেড়ে যেতে চান না।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকা সাধারণ মানুষ বলছেন, আরও সাইক্লোন শেল্টার স্থাপিত হলে তারা ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিরাপদে আশ্রয়ে থাকতে পারবেন এবং আরও কিছু মুজিব কেল্লা হলে গবাদি পশুকে নিরাপদে রাখতে পারবেন।
উপকূলীয় জেলা ভোলায় ২২ লাখ মানুষের বসবাস। এদের মধ্যে ৩০টি চরে বসবার করা প্রায় ৩ লাখ মানুষ প্রাকৃতিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ারের পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষায় নিরাপদে আশ্রয়ের জন্য তাদের একমাত্র ভরসা সাইক্লোন শেল্টার।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) তথ্য মতে, ভোলার সাত উপজেলায় ৬৭৮টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৫৯টি মুজিব কেল্লা রয়েছে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষের নিরাপদে আশ্রয়ের জন্য দরকার দেড় থেকে ২ হাজারেরও অধিক সাইক্লোন শেল্টার এবং গবাদি পশুর নিরাপদে আশ্রয়ের জন্য দরকার ৩০০ মুজিব কেল্লা।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের মেঘনা তীরবর্তী বাসিন্দা আবু কালাম বলেন, ‘আমরা নদীর পাড়ে অনিরাপদে থাকি। ঘূর্ণিঝড় ও জোয়ারের পানির হাত থেকে রক্ষার জন্য আমাদের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় হলো সাইক্লোন শেল্টার। ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাইকিং করলে আমরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সাইক্লোন শেল্টারে গিয়ে আশ্রয় নেই। আবার বিপদ কেটে গেলে বাড়ি চলে আসি।’
দৌলতখান উপজেলার বিচ্ছিন্ন মদনপুর ইউনিয়নের চর মদনপুরের বাসিন্দা মো. ফয়েজ বলেন, ‘আমাদের বাড়ি থেকে সাইক্লোন শেল্টার অনেক দূরে হওয়ায় আমরা সাইক্লোন শেল্টারে যাই না। বাড়িতে থেকে সাবাই আল্লাহর নাম ডাকতে থাকি। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেন।’
চর মদনপুর ইউনিয়নের আবু মিয়া বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশে একটা সাইক্লোন শেল্টার হয়েছে। কিন্তু আমাদের গ্রামের অনেক মানুষ বসবাস করেন। গত বছর ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমাদের গ্রামের সবাই সাইক্লোন শেল্টার গিয়ে আশ্রয় নেই। অনেক গাদাগাদি হয়েছে। অনেক কষ্ট হয়েছে। আমরা চাই একই গ্রামে যেন আরেকটি সাইক্লোন শেল্টার স্থাপিত হয়।’
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. জুলাস বলেন, ‘আমরা উপকূলীয় জেলায় বসবাস করছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আরও সাইক্লোন শেল্টার ও গবাদি পশুকে নিরাপদে রাখার জন্য মুজিব কেল্লা স্থাপনের সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
সিপিপি’র উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমরা ঘূর্ণিঝড়ের সময় মানুষকে কী কী করতে হবে এবং ঝড়ের সময় নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছি। উপকূলীয় জেলা ভোলায় বর্তমানে যে পরিমাণ সাইক্লোন শেল্টার ও মুজিব কেল্লা রয়েছে তা যথেষ্ট নয়। জেলার মানুষের নিরাপদের জন্য কমপক্ষে আরও সাইক্লোন শেল্টার ও মুজিব কেল্লা স্থাপন করা জরুরি। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
‘সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে: ফায়ার সর্ভিস’
সুন্দরবনে অগ্নিনির্বাপণ অভিযানের ৪৮ ঘণ্টার মাথায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে......বিস্তারিত