নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সক্ষমতা বাড়াতে বাস্তবমুখী নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, দেশের প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করবো। ফলশ্রুতিতে ২০০৯ সালের পর থেকে আমরা ২৮৬টি নতুন ফায়ার স্টেশন চালু করেছি। ২০০৯ সালের আগে দেশে ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা ছিল ২০৪টি। এ সংখ্যাকে আমরা এরইমধ্যে ৪৯০টিতে উন্নীত করেছি।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও বেশ কিছু ফায়ার স্টেশন শিগগির চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমরা এই বাহিনীর সদস্যদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই। এ লক্ষ্যে ঢাকার অদূরে মুন্সিগঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, অগ্নি দুর্ঘটনাসহ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সব দুর্যোগ-দুর্ঘটনার বিষয়ে জনসাধারণকে আরও সচেতন করার লক্ষ্যে ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২’ উদযাপিত হবে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে তিনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর একটি জরুরি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব দুর্যোগে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সবার আগে তারা বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এই প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাদের আত্মবিসর্জনের এ ঘটনাই প্রমাণ করে, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা কতটা নিবেদিত।
প্রধানমন্ত্রী এই ১৩ জন বীর অগ্নিসেনাসহ বিভিন্ন সময় দেশের জনগণের জান-মাল রক্ষা করতে গিয়ে আত্মাহুতি দেওয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এই ১৩ বীর অগ্নিযোদ্ধাকে ‘অগ্নিবীর’ খেতাবে ভূষিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বমানের একটি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ ও উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কর্মদক্ষতা বিশ্বমানে উন্নীত হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা সাহস, সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবেন। এ সময় তিনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া মিরপুর ট্রেনিং কমপ্লেক্সের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোঃ আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ এমপি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোঃ আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে বর্ণিল করে তোলেন। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেক কাটেন। প্রধানমন্ত্রীকে পুনরায় রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান।
‘অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি’
অবশেষে ঢাকায় হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি। টানা একমাস দাবদাহের......বিস্তারিত