বাস্তবতায় যেখানে নারীরাও বর্তমানে অনেক রকম অপরাধের সাথে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। বহু বিবাহের মাধ্যমে কাবিনের টাকা আত্মসাতের মত ঘটনা নারীদের ক্ষেত্রে ঘটছে অহরোহর। অনেক অনুসন্ধান মূলক রিপর্টে দেখা গেছে ১০-২০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিয়ে করে তালাক দিয়ে সেই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক নারী। সমাজে অনেক পুরুষ এভাবে শোষিত হয়েও আত্মীয়-স্বজন ও সমাজের কাছে ছোট হবার ভয়ে কোন কিছুই প্রকাশ করছে না কেও। অতিরিক্ত কাবিনের ব্যপারে ব্যক্তি ও দুই একটি সাংগঠনিক পর্যায়ে সচেতনতা মূলক কার্জকম থাকলেও এই বিষয়ে রাষ্ট্রের কোন দৃষ্টি নেই। একটি দুটি ঘটনা থাকলে বিষয়টি ব্যতিক্রমের তালিকায় ফেলা যেত। কিন্তু বিবাহের পর বিচ্ছেদের মাধ্যমে কাবিনের অর্থ আত্মসাত, বর্তমানে অনেক নারী পেশা হিসেবেই বেছে নিয়েছে। এর ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ পুরুষ, যারা আইন সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখে না।
আরো একটি অপরাধ প্রবল ভাবে দেখা যায়, সেটি হচ্ছে প্রবাসী স্বামীর প্রেরণ করা অর্থ প্রতারণা। সারা জীবন একজন পুরুষ প্রবাসে থেকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ উপার্জন করেন। দেশে নিজের স্ত্রীর কাছে সেই অর্থ গচ্ছিত রাখেন। কিন্তু কিছু স্ত্রী সুযোগ বুঝে সকল অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায় অন্য একজন পুরুষের সাথে। যাওয়ার সময় উপহার হিসেবে প্রাক্তন স্বামীকে দিয়ে যান একটি “নারী নির্যাতন” মামলা। দেশে ফিরে ভুক্তভোগী পুরুষ বাকি জীবন পার করে দেন মামলা টানতে টানতে। নারী নির্যাতন মামলা এতটাই কঠোর করা হয়েছে যে আইনে থাকা লোক মামলার সময়ই একজন পুরুষকে বিচার বিহীন অপরাধী হিসাবে গন্য করা হয়ে থাকে।
এ ক্ষেত্রে পুরুষ যেমন কোন আইনি সহযোগিতা পায় না একই সাথে সামাজিক ভাবোও হেয়-প্রতিপন্য হয়ে নিঃস্ব ভাবে বেচে থাকতে হয় তাকে বাকি জীবন।
এছারাও পরক্রিয়ার জড়িয়ে নিজের স্বামী, সন্তানকে হত্যা, স্বামীকে বিভিন্ন ভাবে মানসিক অত্যাচার করে সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নেয়া। মিথ্যা মামলার ভয় প্রদর্শন করে অর্থ আত্মসাৎ করা, মিথ্যা যৌন নিপীড়ন মামলা প্রদান করে আইনি হেনস্ত করা ইত্যাদি অনেক অপরাধে নারীরা যুক্ত হয়ে পুরুষদের নির্যাতন করে যাচ্ছে।
কি পরিমাণের মিথ্যা মামলা হচ্ছে তা “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে” মামলার পরিমাণ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট দেখলেই পরিষ্কার বোঝা যায়। ২০১৬ সালে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩টি মামলা বিচারাধীন ছিলো এবং স্বয়ং ট্রাইব্যুনালের বিচারকেরা পর্যন্ত ইঙ্গিত দিয়েছেন, এগুলোর প্রায় ৮০ ভাগই “মিথ্যা মামলা’ (সুত্রঃ প্রথম আলো- ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬) অর্থাৎ প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার মামলাই মিথ্যা। যেগুলো অমীমাংসিত অবস্থায় থাকে যাচ্ছে বছরের পর বছর। নারীর প্রতি রাষ্ট্রের এই অতিরিক্ত অনুকুল আইন গুলোই কি তাকে মামলার দিকে ধাবিত করছে না? একজন বিকৃতমনা নারীকে উৎসাহিত করছে না একজন পুরুষকে নানা রকম আইনি জটিলতায় ফেলতে?
সমাজে আইন ও সুশাসনের প্রতিষ্ঠা হোক তা একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমাদের সকলেরই কাম্য। তবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্তই হচ্ছে সকল নাগরিককেই সমান আইনি সুবিধা প্রদান করা। কে নারী কে পুরুষ সেটি বিবেচনা না করে বিচারের মাধ্যমে অপরাধিকে শাস্তি প্রদান করা। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের (মৌলিক অধিকারের) ২৭নং অনুচ্ছেদেও একই কথা বলা হয়েছে যে আইনের দৃস্টিতে নারী ও পুরুষ সকলে সমান এবং সমান আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারী। সকল অপরাধী তার প্রাপ্য শাস্তি পেলেই আইনের সুষ্ঠতা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং পুরুষের প্রতি নীরব নির্যাতন গুলো বন্ধ হবে বলে বাংলাদেশের পুরুষেরা আশাবাদী।