TadantaChitra.Com | logo

১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সড়কে দুই নেতার কোটি টাকার চাঁদাবাজি! পাল্টাপাল্টি অভিযোগ!

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৫, ২০১৯, ০৮:৪৩

সড়কে দুই নেতার কোটি টাকার চাঁদাবাজি! পাল্টাপাল্টি অভিযোগ!

ইসমাইল হোসেন টিটু: বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ পরিবহন খাত, ঢাকা গাজীপুর মতিঝিল মিরপুর সহ রাজধানীর মোট ২৮ টি রুটে প্রায় একই পন্থায় চাঁদাবাজির চিত্র দেখা যায়। পরিবহন খাতের কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজির ঘটনা সকলেরকাছেই ওপেন সিক্রেট, তবে দেশের এই খাতের সর্বোচ্চ দুই নেতার চাঁদাবাজি নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন জনমনে একটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে তা হলো এই দুই নেতাই কি চাঁদাবাজ?

জানা গেছে, রাজধানী ও এর আশেপাশে বিভিন্ন রুটের প্রায় ১৫ হাজার বাস থেকে দৈনিক ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বাস চালক ও মালিকদের।

তারা বলেন, দেশের পরিবহন খাত এনায়েত উল্লাহর কজ্বায় জিম্মি। এ দশা থেকে মুক্তি পেতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার দা’বিও তাদের। তিনি গত জোট সরকারের সময়েও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তখন এই সংগঠনের সভাপতি ছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বর্তমানে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস। বর্তমানে বিএনপি নেতা সেই খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ভোল পাল্টে নব্য আ’লীগ সেজে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সারাদেশে চাঁদাবাজি করছে। এতে মহাজোট সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মহাজোট সরকারকে বিব্রত করার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ৬৫ বার পরিবহন ধ’র্মঘট দিয়েছে।

ভিক্টর ও আকাশ পরিবহনে ব্যানারের বাস মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সকালে বাস বের করার পরপর ঢাকা মালিক সমিতিও ভিবিন্ন রুটের মালিক সমিতিকে (গেট পাস- জিপি) হিসেবে প্রতিটি গাড়ি বাবাদ দিতে হয় ১২ থেকে আঠারোশো টাকা। এরমধ্যে থেকে ত্রিশ ভাগ শ্রমিক ইউনিয়ন আর শ্রমিক ফেডারেশন দিতে পাঁচ ভাগ টাকা। তবে এই টাকা কেন দিতে হবে তার সুস্পস্ট জবাব নেই কারো কাছে। আর চাঁদা না দিলে রাস্তা চলতে দেয়া হয় না বাস এমন অ’ভিযোগ বাস মালিকদের। তারা জানান, চাঁ’দাবাজী ব’ন্ধ হলে ভাড়ার পাশাপাশি কমবে দুর্ঘটনাও। এছাড়া সড়কে ও ফিরবে শৃ’ঙ্খলা।

সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোজাহারুল ইসলাম সোহেল জানান, পরিবহন খাতে দৈনিক যে চাঁদ ওঠে। মাসে এই চাঁ’দার পরিমান দাঁড়ায় ৩২ কোটি টাকায়। যার পুরোটাই যাচ্ছে সিন্ডিকে’টের কাছে। এই সিন্ডিকে’টে আবার আওয়ামী লীগ বিএনপি ও জামায়াত মিলে একাকার। এর মধ্যে স’রকার দলীয় প্র’ভাবশালীরা প্রথমে একটি কোম্পানি খোলেন। এরপর বিভিন্ন বাস মালিকরা বাস চালাতে দেন। এ জন্য বাস প্রতি দিতে হয় দুই থেকে বিশ লাখ টাকা।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টরের সর্ববৃহৎ শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পরিচালিত হচ্ছে জামায়াত- বিএনপির নেতৃত্বে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি হালাল করার জন্য তারা এই ফেডারেশনে মাত্র ২/১ জন আ’লীগ ও সমমনা দলের প্রতিনিধি রেখেছেন। জামায়াত-বিএনপির নেতৃত্বাধীন এই ফেডারেশন প্রতিদিন রাজধানীর ৪টি বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁ’দাবাজি করে। এসব অ’ভিযোগে সম্বলিত একটি অ’ভিযোগ পত্র প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ওই অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অধিকাংশ নেতা-কর্মীই জামায়াত-বিএনপির। এই ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত সংগঠন পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ প্রতিদিন রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে। অ’ভিযোগকারীদের দাবি স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও বাংলাদেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনও পরিবহন শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

অভিযোগে জানা যায়, ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানার নীচপনুয়া গ্রামের বাসিন্দা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। তিনি ১৯৮৪ সালে গুলিস্তান মিরপুর রোডে একটি মিনিবাস দুইজনে পার্টনারে ক্রয় করে পরিবহন ব্যবসা শুরু করেন। যার মূল্য ছিল মাত্র এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। সেই এনায়েত উল্লাহ বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাসের সাথে হাত মিলিয়ে ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সেই সময়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মির্জা আব্বাস ও খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

আরও অভিযোগ আছে বর্তমানেও মির্জা আব্বাস, সাইফুল, বাতেনসহ বিএনপির নেতা কর্মীদের লাখ লাখ টাকা গোপনের ডোনেশন দিয়ে আসছেন। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় এলে আবারও ভোল পাল্টে দল বদল করে পুনরায় ক্ষমতা পাওয়ার লোভে। এছাড়াও ঢাকা পরিবহন, গাজীপুর রোডে, ঢাকা চাকা, গ্রিন ঢাকা নামক শহরে প্রায় ১৫ (পনের) টি রোডে চলাচলকৃত গাড়ি ও কুমিল্লা রোডে প্রিন্স ও মতলব পরিবহন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও সাইফুল এবং এই সকল পরিবহনের উপার্জিত অর্থ চলে যাচ্ছে বিএনপি ও ক্যাডারদের বিভিন্ন কর্মকান্ড। এরপরও এই সকল কোম্পানির গাড়ি ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।

জানা যায়, নিহত পরিবহন শ্রমিক হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী এড. মামনুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে মহাজোট সরকারকে না জেহাল করার চেষ্টা করে এই এনায়েত উল্লাহ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ তাদের অভিযোগে আরো উল্লেখ করে জয় বাংলার বিরুদ্ধে অবস্থানকারী বামপন্থী নেতা নিজে স্বাক্ষর করে সরকারের বিভিন্ন জায়গা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ বাতিল করার আবেদন করে এবং গত ১০ নভেম্বর ২০১৪ পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করারও ঘোষণা দিয়েছিলেন।

সেই এনায়েত উল্লাহই আবার ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মকবুল সাহেবের হাতে পায়ে ধরে স্ব-পদে বহাল থাকেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দায়িত্বগ্রহণ করেন এনায়েত উল্যাহ।

খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন টার্মিনালের দক্ষ শ্রমিক নেতাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে অদক্ষ গাড়ীর শ্রমিক ও অদক্ষ শ্রমিক নেতা দ্বারা পরিচালিত করছেন ঢাকা শহরের সব কয়টি বাস টার্মিনালে। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি এবং সেইসাথে চলছে পরিবহনে মাত্রাতিরিক্ত চাঁ’দাবাজী। গাড়ী প্রতি নেয়া হচ্ছে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা চাঁ’দা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, খন্দকার এনায়েত উল্লাহর দেশে-বিদেশে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদের বিশাল পাহাড়। ধানমন্ডিতে একটি ও গুলশানে কয়েকটি ফ্ল্যাট আছে।

পূর্বাচল সংলগ্ন ৩০০ ফিট রাস্তার পার্শ্বে প্রায় শত বিঘা জমি। সারাদেশে এ্যানা পরিবহন প্রায় আটশর উপরে গাড়ি রয়েছে। প্রতিটি গাড়ির মূল্য প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা। সিলেটে কয়েক বিঘা জমির উপরে এনা পরিবহনের নিজস্ব গাড়ীর টার্মিনাল। ময়মনসিংহ, ভালুকায় রয়েছে ২৩ বিঘা জমির উপর এ্যানা ফুডস নামের বিশাল ফ্যাক্টরী। মালয়েশিয়া ও কানাডায় রয়েছে সেকেন্ড হোম। ময়মনসিংহে প্রায় শত বিঘা জমি। মিরপুর রয়েছে বহুতল ভবনের ৭টি বাড়ী। কক্সবাজার কুয়াকাটাতে আবাসিক হোটেল। হবিগঞ্জ-মাধবপুরে কয়েক বিঘা জমির উপর হোটেল। ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে খন্দকার ফুড নামে একটি বিশাল রেস্টুরেন্ট রয়েছে। মহাখালীতে নিজস্ব জায়গায় বিশাল এ্যানা পরিবহনের অফিস।

এদিকে সড়কে চাঁদাবাজি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এনায়েত গ্রুপ ও মালিক শ্রমিক ঐক্য লীগ। সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহর বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছিলেন সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগের সদস্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। দু’দিন বাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এনায়েত উল্যাহর অনুসারীদের অভিযোগ, ইসমাইল পরিবহন খাতের কেউ নন, তিনি সন্ত্রাসী।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এনায়েত অনুসারীরা এ অভিযোগ করেন। খন্দকার এনায়েত সংগঠনটির আহ্বায়ক। গত মঙ্গলবার ঐক্য লীগের সংবাদ সম্মেলন থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, ঢাকায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চালাতে দৈনিক এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। খন্দকার এনায়েত ও তার অনুসারীরা এ টাকা নেন।

গতকাল তার অনুসারীরা পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনায়েত উল্যাহ ও অন্যান্য পরিবহন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ‘মিথ্যা, আজগুবি, ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তোলা হয়েছে। পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য লীগ সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবহন নেতাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য। ঐক্য লীগ নিবন্ধিত সংগঠন নয়। নামসর্বস্ব এ সংগঠনের সঙ্গে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা সম্পৃক্ত নন। চাঁদাবাজি করতে মাস কয়েক আগে ওই সংগঠন তৈরি করেছে।

পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. আবুল কালাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঐক্য লীগের সদস্য সচিব ইসমাইল হোসেন ওরফে বাচ্চুর সঙ্গে যারা ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন, তারা পরিবহন খাতের নন। সবাই বহিরাগত।

লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, ইসমাইল হোসেন খুনের মামলার আসামি। তিনি এক সময় ফুলবাড়িয়াতে ফুটপাতের হকার ছিলেন। পরে ফুলবাড়িয়া শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেন। এ কারণে তাকে ২০১৭ সালে ফুলবাড়িয়া টার্মিনাল থেকে বিতাড়িত করা হয়। খন্দকার এনায়েত উল্যাহর

বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ইসমাইল হোসেন টার্মিনাল দখল করতে না পেরে তার নামে কুৎসা রটাচ্ছে।

ঐক্য লীগের আহ্বায়ক এসএম শাহ আলমের বিরুদ্ধে আবুল কালাম অভিযোগ করেন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ও টেন্ডারবাজ ফ্রিডম রাসুর সহযোগী। ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে খুনের মামলাসহ ছয়টি মামলা বিচারাধীন। তিনি গ্রেফতার থেকে বাঁচতে পরিবহন সংগঠন খুলেছেন বলে দাবি করেন আবুল কালাম। এ সময় ইসমাইলকে খুনি আখ্যা দিয়ে তার ফাঁসি দাবি করেন এনায়েত উল্যাহর অনুসারীরা।

ঐক্য লীগের সংবাদ সম্মেলন থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি। এর জবাবে আবুল কালাম বলেন, হিরু ৩৫ বছর ধরে পরিবহন রাজনীতি করছেন। তিনি অস্ত্র মামলার আসামি হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

এ বিষয়ে সাদিকুর রহমান হিরুর দাবি, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তিনিই সবচেয়ে সোচ্চার। তার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করছেন, তারাই চাঁদাবাজ।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ তাঁতী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঐক্য লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাহারুল ইসলাম সোহেল বলেছেন, খন্দকার এনায়েত কত টাকা চাঁদা নেন তার হিসাব তাদের কাছে রয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগের জবাব দিতে না পেরে তাদের সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

এনায়েত অনুসারীদের অভিযোগ সম্পর্কে ইসমাইল হোসেন বলেন, খন্দকার এনায়েতের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারে না। তিনি মুখ খোলায় তাকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। ইসমাইল হোসেনের দাবি, তার সংগঠন ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন নিবন্ধিত সংগঠন। মালিক শ্রমিক ঐক্য লীগের অনুমোদনের জন্য জাতীয় শ্রমিক লীগের কাছে আবেদন করা হচ্ছে।

ঠিক সেই সময় বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ গোলটেবিল আলোচনায় চাঁদা ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং তার প্রতিকার হিসেবে সামনে নিয়ে আসেন নতুন ফর্মুলা। রাস্তায় রাস্তায় চাঁদা আদায়ের পরিবর্তে অফিসে বসেই চাঁদা আদায়ে সমাধান দেখেন তিনি।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘অনেককেই নানা রকম চাঁদা দিতে হয়। ড্রাইভার ও হেল্পারদের বেতন দিতে হয়। অর্থাৎ একটি বাস চালিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা উপার্জন করতে গিয়ে চালকদের ওপর নানা চাপ থাকে। সারাদিন কাজ করে বেশিরভাগ স্থানে চাঁদা দেওয়ার পর পকেটে যখন মাত্র তিন থেকে চারশ’ টাকা ঢোকে, তখন সে এসব অনিয়ম করতে বাধ্য হয়। এই নানান জায়গায় চাঁদা দেওয়া বন্ধ না হলে এমন বেপরোয়া পরিস্থিতিও চলতেই থাকবে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, চাঁদাবাজীর জন্য পরিবহন কোম্পানিগুলো দায়ী। তিনি দাবি করেন, আমি বা আমার সংগঠনের নাম মাত্র চাঁদা নেন। যা ব্যবহার করা হয় সংগঠনের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।